নিউজিল্যান্ডকে হারাতে টাইগারদের দরকার ২ উইকেট

fec-image

২ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। জয়ের সুবাস নিয়ে সিলেট টেস্টের পঞ্চম দিনে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ৩ উইকেট আর নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ২০০ রান। চতুর্থ দিন ৭ উইকেটে ১১৩ রান করে দিন শেষ করেছিল নিউজিল্যান্ড। সেখান থেকেই পঞ্চম দিন শুরু করেছে তারা। সকাল সকাল হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মিচেল। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিন। দলীয় ১৩২ রানে তাকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান নাঈম হাসান।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ১৭৮ রান। ইশ সোধি ১৯ ও অধিনায়ক টিম সাউদি ৩৪ রানে অপরাজিত আছেন।

এমন একটি দলের বিপক্ষে জয়ের স্বপ্ন দেখাটাও মনে হতে পারে দুঃস্বপ্ন। কিন্তু সেই অসম্ভব স্বপ্নকেই সম্ভব করার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। আর মাত্র ৩টি উইকেট। তাইজুল, মিরাজ, নাঈম হাসানরা যদি দ্রুত এই ৩টি উইকেট তুলে নিতে পারে, তাহলেই অসাধারণ এক জয় তুলে নেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশের স্পিনারদের তোপের মুখে পড়ে ৭ উইকেট হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ৪৯ ওভার খেলে রান করেছে মাত্র ১১৩। ইনিংসের শুরু থেকেই কিউইদের চেপে ধরেছেন তাইজুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাইম হাসান। তাইজুল তুলে নিয়েছেন ৪টি উইকেট। মেহেদি আর নাইম শিকার করেছেন ১টি করে উইকেট। পেসার হিসেবে একটি উইকেট পেয়েছেন শরিফুল ইসলাম।

এর আগে গতকাল ম্যাচের চতুর্থ দিনে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই একে একে সাজঘরে ফিরেছেন ৩ কিউই টপঅর্ডার। ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে রানের খাতা খোলার আগেই টম ল্যাথামকে (৬ বলে ০) সাজঘরে ফেরত পাঠান শরিফুল ইসলাম। এই বাঁহাতি পেসারের ফুল লেন্থের বলে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ল্যাথাম।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ দলের কাঁটা হয়ে ব্যাট করছিলেন কেন উইলিয়ামসন। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে উইলিয়ামসনকে সেটি করতে দিলেন না তাইজুল ইসলাম। এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে ২৪ বলে ১১ করা এই কিউই ব্যাটারকে আউট করেন টাইগার স্পিনার।

এরপর ব্যাট করতে নামা হেনরি নিকোলসে সাজঘরের পথ দেখান অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। ২ রানে করে নাইম হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন এই কিউই ব্যাটার।

কঠিন সময়ে দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন ওপেনার ডেভন কনওয়ে। দেখেশুনে খেলে ৭৬ বলে ২২ করা এই ব্যাটারকে শাহাদাত হোসেনের ক্যাচ বানান তাইজুল। এরপর উইকেটরক্ষক ব্যাটার টম ব্লান্ডেলকেও সাজঘরে ফেরত পাঠান এই বাঁহাতি স্পিনার। ১৬ বলে ৬ রান করে শর্টলেগে নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন এই কিউই ব্যাটার।

গ্লেন ফিলিপসকে এলবিডব্লিউ করেছেন ডানহাতি অফস্পিনার নাইম। এই কিউই ব্যাটার করেছেন ২৬ বলে ১২ রান।তাইজুলের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন কাইল জেমিসন। ২৮ বলে ৮ রান করেন এই কিউই লোয়ার অর্ডার।

এর আগে দ্বিতীয় ইনিংস শেষে নিউজিল্যান্ডকে ৩৩২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৩১০ রান করেছিল টাইগাররা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৭ রান এগিয়ে ৩১৭ রানে গিয়ে থামে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ৩৩৮ রানের সুবাদে ৩৩১ রানের লিড পায় কিউইরা। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত হাঁকিয়েছেন রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি।

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। ২৬ রানে ছিল না ২ উইকেট। ৩০ বলে ১৭ রান করে অ্যাজাজ প্যাটেলের অনেক বেশি টার্ন করা বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন ওপেনার জাকির হোসেন।

দুর্ভাগ্যজনক রানআউটের শিকার হয়ে ফেরেন আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। সাউদির বলে ড্রাইভ খেলেন শান্ত, বল বোলারের হাত স্পর্শ করে ভেঙে যায় ননস্ট্রাইকের স্টাম্প।

দুই ওপেনারের দ্রুত বিদায়ের পর দলের হাল ধরেছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। অপ্রত্যাশিত রানআউটের মাধ্যমে শতরানের (৯০) কাছাকাছি এসে ভেঙে যায় শান্ত-মুমিনুলের জুটি। ভুল বোঝাবুঝিতে ৬৮ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৪০ রান করে সাজঘরে ফেরত যান মুমিনুল।

অভিজ্ঞ মুমিনুল ফিরলেও দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেন শান্ত। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ১৯৮ বলে ৯ বাউন্ডারিতে ১০৫ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। পেসার টিম সাউদ বলে উইকেটরক্ষক ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হন শান্ত।

১৯ বলে ১৮ রান করে ইশ সোধির বলে লেগবিফোর উইকেটের (এলবিডব্লিউ) ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরত যান শাহাদাত হোসেন।

মুশফিকুর রহিম ও মেহেদি হাসান মিরাজ করেছেন ফিফটি। মিস্টার ডিফেন্ডেবল মুশফিক করেছেন ১১৬ বলে ৬৭। অ্যাজাজ প্যাটেলের বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন এই ডানহাতি ব্যাটার। অপরদিকে মিরাজ ৭৬ বলে ফিফটি (৫০) করে অপরাজিত থাকেন। নুরুল হাসান সোহান করেন ১০ রান।

কিউইদের হয়ে ৪ উইকেট শিকার করেছেন অ্যাজাজ প্যাটেল। ২ উইকেট পেয়েছেন ইশ সোধি। একটি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন টিম সাউদি ও গ্লেন ফিলিপস।

উল্লেখ্য, চতুর্থ ইনিংসে রান তাড়া করে জিততে হলে নিউজিল্যান্ডকে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের বিশ্বরেকর্ড গড়তে হবে। এর আগে সর্বোচ্চ ৩২৪ রান করে তাদের ম্যাচ জয়ের রেকর্ড রয়েছে। যেটি ১৯৯৪ সালে ক্রাইস্টচার্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে গড়েছিল।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: টাইগার, নিউজিল্যান্ড
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন