বাংলাদেশ থেকে পলাতক ৩ কুকি-চিন জঙ্গি ভারতের মিজোরামে গ্রেফতার

fec-image

পাবর্ত চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএ’র বিরুদ্ধে সেনা অভিযান পরিচালিত হয়েছে। সেনা প্রধান ঘোষণা দিয়েছেন সন্ত্রাসী নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত সেখানে অভিযান অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অব্যাহত অভিযানের কারণে কুকি-চিন জঙ্গিরা পালিয়ে ভারতের মিজোরাম রাজ্যে প্রবেশ করেছে। গত সোমবার (৫ জুন) একটি যৌথ অভিযানে আসাম রাইফেলস ও মিজোরাম রাজ্য পুলিশ প্রচুর পরিমাণে গোলাবারুদসহ তিন কুকি-চিন জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে।

আসাম রাইফেলসের সূত্রে জানা যায়, নিরাপত্তা বাহিনী নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সীমান্ত এলাকায় লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে। গ্রেফতার তিন জঙ্গি স্থানীয়দের সহায়তায় লংটলাই জেলায় অবস্থান করছিল।

গ্রেফতার তিন জঙ্গি হলো- জোসেফ লালনুনতলুয়াং (৪৮), ভ্যানরোথাওনা (৫৮) ও দাবিবাদাহ (৭৫)।

বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে (সিএইচটি) সক্রিয় বিদ্রোহী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) তিন জঙ্গি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের দিকে আশ্রয় নেয়। নির্দিষ্ট ইনপুট পাওয়ার পরে, আসাম রাইফেলস ও মিজোরাম রাজ্য পুলিশের একটি দল অভিযান শুরু করে এবং বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদসহ তিন কুকি-চিন জঙ্গিকে আটক করে।

নিরাপত্তা বাহিনী অভিযানের সময় ১,০০০৮ রাউন্ড ৫.৫৬ মিমি গোলাবারুদ, ৯ মিমি গোলাবারুদের দুই রাউন্ড এবং এউবিজিএল ৪০/৪৬ মিমি গোলাবারুদের একটি রাউন্ড এবং ৩৮এসপিএল গোলাবারুদ জব্দ করেছে।

মিজোরাম পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার কুকি-চিন জঙ্গিরা সীমান্ত অতিক্রম করেছিল এবং জেলার হাম্বু বা বুল্টলাং গ্রামে আশ্রয় নেওয়া কেসিএনএ ক্যাডারদের কাছে গোলাবারুদ হস্তান্তর করার পরিকল্পনা করেছিল। গ্রেফতারকৃত তিন জঙ্গি কেসিএনএ সমর্থক বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

এদিকে আসাম রাইফেলস বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশ থেকে কুকি-চিন অভিবাসীদের আগমনের পর থেকে দক্ষিণ মিজোরামে অস্ত্রের চোরাচালান বাড়ছে। বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতিবেশী দেশ থেকে অভিবাসীদের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে ভারতে বাংলাদেশের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর গতিবিধি বেড়েছে। অভিবাসী কুকি-চিন জঙ্গিরা মিজোরামে অস্ত্রের চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত, যা অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষার জন্য প্রচুর পরিমাণে আসাম রাইফেলসকে মোতায়েন করা হয়েছে।

উল্লেখ, এই বছরের মার্চ থেকে মিজোরামে বেশ কয়েকজন কুকি-চিন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করেছিল। মিজোরামের লংটলাই জেলায় আসাম রাইফেলস কর্তৃক কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির অন্তর্গত ২৯ বছর বয়সী এক জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত ১০ মার্চ আসাম রাইফেলস একই জেলার হুমুনুয়াম গ্রামে আরেকটি কেসিএনএ জঙ্গিকে গ্রেফতার করে। কেসিএনএর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অভিযানের পর পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে লংটলাই জেলায় আশ্রয় নিয়েছে ৫ শতাধিক মানুষ। এই জঙ্গিরা আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে ভারতে অস্ত্র ও মাদক পাচারের সঙ্গেও জড়িত।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কুকি-চিন, জঙ্গি, বাংলাদেশ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন