আজ দিল্লিতে শুরু হচ্ছে চার দিনের বৈঠক

বিজিবি-বিএসএফ শীর্ষ বৈঠকে গুরুত্ব পাবে কুকি-চিন ইস্যু

fec-image

সীমান্ত সড়ক নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় দুই দেশের মধ্যে চোরাকারবারি, মাদক ব্যবসায়ী, বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বন্ধ হয়ে যাবে

দেশের পার্বত্যাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিনের বেশ কিছু সদস্য প্রতিবেশী দেশ ভারতের মিজোরাম রাজ্যের পাহাড়ে আত্মগোপন করেছে। বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির সীমান্ত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে টিকতে না পেরে তারা পাশে মিজোরাম রাজ্যে আত্মগোপন করে। বাংলাদেশের সীমান্তের ওপারে মিজোরামের গভীর পাহাড়ি জঙ্গলে কুকি-চিনের ঘাঁটি রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে কুকি-চিনকে দমন করতে ভারতের বিএসএফের সহায়তা চাইছে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

রবিবার (১১ জুন) দিল্লিতে অনুষ্ঠিত বিজিবি-বিএসএফ ডিজি পর্যায়ের বৈঠকে এই বিষয়টি বিজিবির পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হবে।

বিজিবি সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানায়, বৈঠকে আত্মগোপন করা সন্ত্রাসীদের একটি তালিকাও বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এদেরকে ধরিয়ে দেওয়ার সহায়তা চাইবে বিএসএফের কাছে। তালিকায় মাদক ব্যবসায়ী, চোরকারবারি এবং আরাকান কেন্দ্রিক জঙ্গি সংগঠন আরাকান আর্মি, বান্দরবান-রাঙ্গামাটি কেন্দ্রিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিনের ক্যাডার বাহিনীর নাম রয়েছে। কুকি-চিনের আত্মগোপন করা প্রধান নেতা নাথান বমের নামও রয়েছে ঐ তালিকায়।

বিজিবির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশের মাটি সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। আমাদের সেনাবাহিনী এ ব্যাপারে পাহাড়ে পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। সীমান্ত রক্ষী বাহিনী হিসেবে বিজিবিও সেনাবাহিনীর সঙ্গে অভিযানে অংশ নিচ্ছে। বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন আমাদের সীমান্ত সড়ক নির্মাণকাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। যেভাবেই হোক সেনাবাহিনী এই সীমান্ত সড়ক নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সীমান্ত সড়ক নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় দুই দেশের মধ্যে চোরাকারবারি, মাদক ব্যবসায়ী, বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বন্ধ হয়ে যাবে। ভারতের নয়াদিল্লিস্থ বিএসএফ চাওলা ক্যাম্পে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৩তম সীমান্ত সম্মেলনে দুই দেশের সীমান্ত নিয়ে আলোচ্যসূচিতে থাকছে সীমান্ত এলাকায় নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের গুলি করা, আহত করা এবং হত্যা করার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।

এ বিষয়ে দুই দেশের সীমান্তে সহিংস ঘটনা রোধ ও সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসার জন্যে অতিরিক্ত পর্যবেক্ষণের কথা উত্থাপন করা হবে। বাংলাদেশি নাগরিকদের অপহরণ, আটক, অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম, অস্ত্র ও গোলা-বারুদ পাচার, জাল নোটের লেনদেন, সীমান্তের অপর প্রান্ত থেকে বাংলাদেশে ফেনসিডিলসহ মাদক চোরাচালান বন্ধ, আন্তর্জাতিক সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে উন্নয়নমূলক নির্মাণকাজ, উভয় দেশের সীমান্তে নদীর তীর সংরক্ষণ কাজে সহায়তা এবং উভয় বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে।

সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক

 

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কুকি-চিন, বিএসএফ, বিজিবি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন