স্বাধীনতার ৫১ বছরেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাইনি মাস্টার থোয়াইছাহ্লা চাক


পার্বত্য জেলা বান্দরবানের নাইক্ষংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড মধ্যম চাক পাড়ার মৃত উক্যজাই চাকের ছেলে মাস্টার থোয়াইছাহ্লা চাক (৭২) স্বাধীনতার ৫১ বছর পার হলেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি না পেয়ে হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন ।
জানা যায়, ১৯৭১ সালে ছাত্র জীবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে জীবন বাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে শত্রুদের বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন থোয়াইছাহ্লা চাক। তবে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা আজও স্বীকৃতি না পেয়ে চোখে মুখে হতাশার চাপ।
মাস্টার থোয়াইছাহ্লা চাক জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে ১নং সেক্টরের অধীনে ক্যাপ্টেন মো. আবদুস সোবহানের নেতৃত্বে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। এই সম্মুখ যু্দ্ধে নাইক্ষংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের নোয়া মুরুং পাড়ায় সহযোদ্ধা লাব্রে মুরুং শত্রুদের হাতে তখন প্রাণ হারায়। তবুও ওই সময় তারা যুদ্ধ চালিয়ে যায়। ফলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়।
তিনি জানান, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তার সাথে যারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন তারা সবাই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সহযোদ্ধারা হলেন, রামু উপজেলার রনেশ বড়ুয়া, নুরুল হক (সাবেক চেয়ারম্যান), ইদগড়ের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাংগালী, গর্জনিয়ার মো. হাসেম, ইদগড়ের নুরুল আমিনসহ অনেকে।
মাস্টার থোয়াইচাহ্লা চাক আরো জানান, তিনি ইন্ডিয়ান ফোর্স থেকে ২১ দিনের অস্ত্র প্রশিক্ষণসহ রণকৌশলগত প্রশিক্ষণও নিয়েছেন। ২০০২ সালে উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা বাছাইয়েও তার নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়েও তার নাম পাঠানো হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে জেলা প্রশাসক বান্দরবান থেকে প্রশংসা পত্রও পেয়েছেন।
মাস্টার থোয়াইচাহ্লা জানান, যদি সঠিক তদন্ত করা হয় মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি তিনি অবশ্যই পাবেন। তাই তিনি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন, তিনি কিছুই চাননা। তিনি চান শেষ বয়সে হলেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি নিয়ে পৃথিবী থেকে চির বিদায় নিতে।
ইদগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বাঙালি জানান, মাস্টার থোয়াইচাহ্লা চাক তাদের সাথে সরাসরি যুূদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
তিনি আরো জানান, মাস্টার থোয়াইচাহ্লা চাক ১৯৭১ সালের যুদ্ধে লামা, ফাঁসিয়া খালী, কক্সবাজারের ঈদগাও এলাকায় দায়িত্ব পালন করেন।
উল্লেখ্য, মাস্টার থোয়াইচাহ্লা চকের মুক্তিযোদ্ধার কাগজ পত্র সব কিছু ১৯৭৪ সালে দিনে-দুপুরে বসতবাড়িতে ডাকাতির সময় ডাকাত দলের সদস্যরা নিয়ে গেছে বলে স্থানীয় লোকজন জানান।