অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার না হলে বান্দরবানে নির্বাচন বয়কটের হুমকি দিলো শাসক দল আওয়ামী লীগ
স্টাফ রিপোর্টার:
বান্দরবান ছয় উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী এলাকাগুলোতে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)-এর স্বতস্ত্র ক্যাডাররা পাড়ায় পাড়ায় ভয় দেখাচ্ছে দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। ৪৮ ঘন্টার মধ্য প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় সেনাবাহিনী, বিজিবি মোতায়ন ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা না হলে আ’লীগ সমর্থীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নির্বাচন বয়কট করার হুমকি দিয়েছে। বুধবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবিন্দ ও চেয়ারম্যান প্রার্থীরা এই ঘোষণা দেয়।
জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সহ-সভাপতি রহিম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মো. ইসলাম বেবী, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক লক্ষীপদ দাশ, জেলা পরিষদের সদস্য ক্য সা প্রু, পৌর আ’লীগের সভাপতি অমল কান্তি দাশ, আওয়ামী লীগ নেতা হ্লাথোয়াই হ্রী মারমাসহ অন্যান্য নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ইউপি নির্বাচনে জেএসএস সমর্থীত প্রার্থীদের বিজয়ী করতে পাহাড়ী পল্লীগুলোতে জেএসএস-এর স্বশস্ত্র ক্যাডাররা (শান্তি বাহিনী) অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শন করে নির্বাচন প্রভাবিত করার অপতৎপরতা শুরু করেছে। কার্বারি (পাড়া প্রধান) ডেকে ডেকে অমুক পাড়ায় এতটি ভোট আছে। এরমধ্য ৪ থেকে ৩ ভাগ ভোট জেএসএস সমর্থীত প্রার্থীরা না পেলে পাড়া জ্বালিয়ে ও প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
বক্তরা আরো বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের মারধর ও গণসংযোগে বাঁধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। ভোট গ্রহণের আগের দিন ও ভোটের দিন সন্ত্রাসীরা অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয় ভীতি দেখিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করে ফলাফল তাদের পক্ষে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে স্বশস্ত্র এই বাহিনীটি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসলাম বেবী জানান, আইনশৃঙ্খলা সভায় সেনা বাহিনীর মাধ্যমে জেলা প্রশাসনকে পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করার পরও কার্যকর কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে রোয়াংছড়ি উপজেলার নোয়াপতং ইউনিয়নে আ’লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী চনুমং মারমা, তারাছা ইউনিয়নের উথোয়াইচিং মারমা ও রাজবিলা ইউনিয়নের ক্যঅংপ্রু মারমা সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জেএসএস এর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন পাড়া করবারীসহ সাধারণ ভোটারদেরকে অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য নিয়মিত মহড়া চালাচ্ছেন। সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে ভোটারদেরকে অস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দিচ্ছেন।
আ.লীগের মনোনীত প্রার্তীকে ভোট না দিলে পাড়া উচ্ছেদ বা প্রয়োজনে প্রাণ নাশ করা হবে তারা জানান। তারা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পাদনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনের কাছে অনেক আগে চিঠি দিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান।
বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্র জানায়, তাদের কাছে তথ্য আছে জেএসএস কয়েকশ স্বতস্ত্র সদস্য রাঙ্গামাটি থেকে বান্দরবানের নির্বাচনি বিভিন্ন পাড়ায় মহড়া দিচ্ছে। জেএসএস সমর্থিত প্রার্থিদের পক্ষে ফলাফল আদায় করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। দুর্গম এলাকাগুলোতে বুধবার থেকে হেলিকপ্টার যোগে সেনা ও বিজিবি সদস্য পাঠানো শুরু হয়েছে।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, আগামী ২৩ এপ্রিল তৃতীয় ধাপে বান্দরবানের ছয় উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নে ২২১টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। তারমধ্য ১১৪টি কেন্দ্রকে অতি ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।