কক্সবাজারে ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রি করছে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ

fec-image

দেশে হুহু করে বাড়ছে দ্রব্যমূল্য। বাদ যায়নি নিত্য প্রয়োজনীয় শাক-সবজি। মাঠ পর্যায় থেকে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছাতে শাক-সবজির দাম বেড়ে হচ্ছে দ্বিগুন। এমনই সময় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আওয়ামীলীগের ৩ সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সবজি কিনে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। এতে করে ক্রেতা-বিক্রেতা-ভোক্তা উভয়’ই উপকৃত হবে। নিশ্চিত হবে ন্যায্যমূল্য।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে কক্সবাজারের ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবকলীগ। তারা প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে সবুজ সবজি ন্যায্যমূল্যে ক্রয় করে ভোক্তাদের দ্বারে পৌঁছে দিতে দিনব্যাপী সবজি বাজার ও বিনামূল্যে সবজি বিতরণ কর্মসূচি চালাচ্ছে। এসময় ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছালীগ নেতারা কৃষিক্ষেত থেকে সরাসরি প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে শিম, শশা, মুলা, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন, ফুলকপিসহ বিভিন্ন সবজি ক্রয় করেন। এসব সবজি সরাসরি ব্যবসায়ীদের কাছে সুলভমূল্যে বিক্রি করা হয়।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসাইনেই নেতৃত্বে এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা কাজী রাসেল আহমেদ নোবেলের সহযোগিতায় রামুর বাঁকখালী নদী সংলগ্ন ফতেখাঁরকুলের দ্বীপ শ্রীকুল এবং কাউয়ারখোপের বটতলী এলাকা থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়।

মঙ্গলবার উদ্বোধনের প্রথম দিনে ক্ষেত থেকে ১ হাজার কেজি সবজি ক্রয় করে বিতরণ করা হয়। এছাড়া উদ্বোধন উপলক্ষে সাধারণ ভোক্তাদের বিনামূল্যে সবজি প্রদান করা হয়। ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবকলীগের কাছে সবজি বিক্রি করতে পেরে সন্তুষ্ট প্রতিযোগিতার বাজারে কোনঠাসা হয়ে থাকা কৃষকগণ।

কৃষকদের মাঝে কাউয়ারখোপের মুলা ক্ষেতের কৃষক মোহাম্মদ জয়নাল জানান, ‘ফসল বিক্রিতে আমরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছিনা। কেজিতে মুলা বিক্রি করতে হচ্ছে সর্বোচ্চ ৮ থেকে ১০ টাকায়। কিন্তু ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ আমাদের কাছ থেকে কেজিতে মুলা ক্রয় করেছে ১৫ থেকে ১৮ টাকায়। ন্যায্যমূল্য পেয়ে তিনি খুবই খুশি।

নুরুল আলম নামে আরেক কৃষক জানান, বাঁকখালী নদী সংলগ্ন ক্ষেত থেকে সবজি বাজারে নিতে গাড়িভাড়া খরচসহ নানা মাধ্যমে চাঁদা দিতে গিয়ে ন্যায্যমূল্য পাওয়া যায়না। এই অবস্থায় ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ আমাদের কাছ থেকে কেজিতে ৪ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দিয়ে সবজি কিনেছে।

অন্যদিকে সবজি ব্যবসায়ীদেরও একই প্রতিক্রিয়া। তারা বলছেন ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবকলীগের কাছ থেকে সবজি কিনে ভাল’ই লাভ হচ্ছে।

রামু’র সবজি ব্যবসায়ী লিয়াকত মিয়া জানান, ‘কোন ধরণের ঝামেলা ছাড়াই ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের কাছ থেকে অন্যন্য সময়ের তুলনায় অন্তত কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা কমে সবজি কিনতে পেরেছি। এতে ক্রেতাও বাড়বে এবং ব্যবসায় ভাল হবে। এই ধারা যেন অব্যাহত থাকে।

আরেক সবজি ব্যবসায়ী মোবারক আলী জানান, ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। এতে ক্রেতা-বিক্রেতা উপয়ই খুশি। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা অপকর্ম চালাতে পারবেনা। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।

রামুর চৌমহনি এলাকার বাসিন্দা সবজি কিনতে আসা তারেকুল ইসলাম বলেন, গত ৫ মাসে এত কমদানে সবজি কিনতে পারিনি। সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তবে এই কার্যক্রম যেন বন্ধ হয়ে না যায়।

রাবেয়া খাতুন নামে আরেক ক্রেতা জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জীবনটা অনেক কষ্টের মধ্যে যাচ্ছে। তার মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সবজির দাম বাড়তি হওয়ার ভোগান্তি যেন চরমে। এমন কঠিন মুহূর্তে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের এমন মহৎ কাজ যেন আমাদের মত নিম্ন মধ্যবিত্তদের জন্য অনেক বড় পাওয়া।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় উৎপাদিত শাক সবজি সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে করে কৃষকরা যেমন ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন তেমনি সরাসরি ব্যবসায়ীরাও সঠিক দামে কিনতে পারছে।

এই প্রসঙ্গে কক্সবাজার জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা কাজী রাসেল আহম্মদ নোবেল জনান, জেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহযোগিতায় সবুজ শাক সবজি ন্যায্যমূল্যে ক্রয় ও বিতরণ চলছে। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা বন্ধ হবে। মূলত এর মাধ্যমে প্রান্তিক চাষী থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত নিরাপদ এবং ভোগান্তিমুক্ত একটি উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে। আর এই কাজটাই করছে ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও যুবলীগ। তা বাস্তবায়নে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসাইন জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনা সবসময় জনগণ নিয়ে ভাবেন। তার’ই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় উৎপাদিত শাক সবজি সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে করে কৃষকরা যেমন ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন তেমনি সরাসরি ব্যবসায়ীরাও সঠিক দামে কিনতে পারছে। ভোক্তা পর্যায়েও এসব সবজির মূল্য সহনীয় রয়েছে। প্রথম দিনেই ভাল সাড়া পাওয়া গেছে। জনকল্যাণে ছাত্রলীগের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, ছাত্রলীগ, যুবলীগ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন