কক্সবাজারে পর্যটকদের নিরাপত্তা, চালকদের তথ্য এবার বারকোডে

fec-image

কক্সবাজারে পর্যটকদের সুরক্ষা ও হয়রানি থেকে বাঁচাতে ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ট্রাফিক পুলিশ কক্সবাজার। দেশে প্রথম পর্যটক সুরক্ষায় পর্যটন এলাকায় গাড়ি চালকদের ডাটাবেজ সংবলিত বারকোড রাখা হয়েছে প্রতিটি ইজিবাইক, টুরিস্ট জিপ ও বাসে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘কক্স-ক্যাব’।

সেখানের ইজিবাইক, টমটম ও টুরিস্ট জিপে টানিয়ে রাখা কার্ডে থাকছে বারকোড, যা স্ক্যান করলে গাড়িচালকের বিস্তারিত তথ্য চলে আসছে মোবাইল ফোনে। এর ফলে কোনো চালক পর্যটকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ বা শৃঙ্খলাপরিপন্থি কাজ করলে সহজে আইনের আওতায় আনা যাবে। পর্যটকরা সরাসরি বা পুলিশের হটলাইন নম্বর ‘৯৯৯’ এ কল করে অভিযোগ জানাতে পারবেন।

কক্সবাজার ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত মাসে শুরু হয় নিবন্ধন। গত বুধবার পর্যন্ত ১০৭২ ইজিবাইক, এক শতাধিক টুরিস্ট জিপ ও ৪০টি টুরিস্ট বাসসহ মোট ১২০০ গাড়ি চালককে নিবন্ধন করে ডাটাবেজের আওতায় আনা হয়েছে। তাদের বারকোড সংবলিত কার্ড ও গোলাপি রঙের ড্রেস দেওয়া হয়েছে।

এভাবে পর্যায়ক্রমে পর্যটন এলাকার সব গাড়ি চালককে ডাটাবেজের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী।

তিনি বলেন, কক্সবাজারের আকর্ষণীয় সৈকত, পাহাড় ও সমুদ্রের মিতালিতে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন মেরিন ড্রাইভ শুধু বাংলাদেশের ভ্রমণপিপাসুদের নয়, সারা পৃথিবীর পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান। প্রতিদিন লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজারে আসেন। তাদের জন্য উন্নতমানের হোটেল, রিসোর্ট, রেস্টুরেন্টসহ নানা অবকাঠামো তৈরি হলেও পর্যটনবান্ধব, উন্নত ও নিরাপদ যানবাহন সুবিধা এখনো তৈরি হয়নি। এ কারণে ইজিবাইক, রিকশা, সিএনজি, ট্যুরিস্ট জিপ, কার-মাইক্রো-মিনিবাস দিয়ে পর্যটকদের চলাচল করতে হয়। তাই অনেক সময় পর্যটকরা খারাপ অচরণ কিংবা অঘটনের শিকার হলেও চালক বা জড়িতদের শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। এ কারণে চালকদের ডাটাবেজ তৈরিসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ট্রাফিক বিভাগ।

এই কর্মকর্তার দেওয়া তথ্যমতে, কক্স-ক্যাবে সব চালকের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তাই কোনো ব্যক্তির নামে সিডিএমএস ডাটাবেজ পর্যালোচনায় পূর্বে একাধিক ছিনতাই, চুরির মামলায় অভিযুক্তের তথ্য পেলে কিংবা পর্যটন এলাকায় এই ধরনের কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে তাকে অনিরাপদ চালক হিসাবে চিহ্নিত করা সহজ হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে কেউ এই ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে না। তাই কোনো রোহিঙ্গা বা মিয়ানমারের নাগরিক কিংবা অপ্রাপ্ত-বয়স্ক লোক গাড়ি চালালে সহজে শনাক্ত করা যাবে।

কক্স-ক্যাব ডাটাবেজে চালকদের ট্রাফিক আইনবিরোধী কার্যকলাপ কিংবা ফৌজদারি অপরাধের সঙ্গে জড়ানোর ওপর ভিত্তি করে ‘ওয়ার্নিং’ ‘নেগেটিভ’ ও ‘ব্ল্যাক-লিস্টেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত করার ব্যবস্থা রয়েছে। কোনো চালক পর্যটন এলাকায় ছিনতাই বা চুরির মতো অপরাধে জড়িত হয়ে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হলে তাকে ‘ব্ল্যাক লিস্টেড’ করে অনিরাপদ চালক হিসাবে বিবেচিত করা হবে। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, স্মার্ট সিটির অনিবার্য অংশ হচ্ছে স্মার্ট ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা। নিরাপদ ও পর্যটনবান্ধব ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা গড়ার লক্ষ্যে কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের উদ্যোগে নির্মিত ‘কক্স-ক্যাব’ স্মার্ট কক্সবাজার সিটি গড়তে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, চালক, নিরাপত্তা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন