করোনা মহামারী উত্তরণে ত্রাণ সহায়তায় খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সভা

করোনা মহামারী উত্তরণে ত্রাণ সহায়তায় খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার(১২ এপ্রিল) জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় দ্বিতীয় পর্যায়ে জেলায় ৩টি পৌরসভা ও ৯টি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়নে আরও ১০(দশ) হাজার দুঃস্থ, দরিদ্র ও কর্মহীন পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা চিংলামং চৌধুরী।

সভায় পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সকল সম্মানিত সদস্যবৃন্দের এক মাসের সম্মানী ভাতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ‘করোনা মহামারী মোকাবেলা ফান্ডে’ হস্তান্তর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে পরিষদের সম্মানিত সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জনাব নির্মলেন্দু চৌধুরীর হাতে সম্মানী ভাতার চেক তুলে দেওয়া হয়।

সভায় জেলায় হাম আক্রান্ত এলাকায় ভাইবোনছড়ার রবিধনপাড়া, গোলাবাড়ী ইউনিয়নের রথিচন্দ্র পাড়া এবং মেরুং ইউনিয়নের হেমচন্দ্র পাড়া ও জেরক পাড়ায় পর্যায়ক্রমে জরুরি সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়।

সভায় দেশের এই দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে জেলায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধের লক্ষে গঠিত কমিটি’র উপদেষ্টা হওয়া সত্ত্বেও জেলা পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে এবং সমন্বয়ের ক্ষেত্রে পরিষদের চেয়ারম্যানকে সম্পৃক্ত না করায় ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করা হয়।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী বলেন, অবস্থার প্রেক্ষিতে জেলা পরিষদ প্রয়োজনে আরও নতুন নতুন কার্যক্রম গ্রহণ করবে। এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি সব ধরণের দুর্যোগ উত্তরণে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সবসময় মানুষের পাশে ছিলো, থাকবে। আসুন, সকলে সরকার ঘোষিত সকল নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পূর্ণভাবে মেনে চলার জন্য জেলাবাসীকে আহ্বান জানানো হয়।

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী জানান, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাকে কোভিড-১৯’র বিপর্যয় থেকে মুক্ত ও নিরাপদ রাখতে পরিষদ শুরু থেকে আন্তরিক সহযোগিতায় কাজ করে যাচ্ছে । ভাইরাস জনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দুঃস্থ, দরিদ্র ও কর্মহীন লোক ভিক্ষুক, ভবঘুরে, দিনমজুর, রিক্সা চালক, ভ্যানগাড়ি চালক, পরিবহন শ্রমিক, রেস্টুরেন্ট শ্রমিক, ফেরিওয়ালা,চায়ের দোকানদার, যারা দৈনিক আয়ের ভিত্তিতে সংসার চালায় সে সকল জনসাধারণের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান কার্যক্রমে (প্রথম পর্যায়) খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১৫৫০ পরিবার, পানছড়ি উপজেলায় ৫টি ইউনিয়নে ১০০০ পরিবার, দীঘিনালা উপজেলায় ৫টি ইউনিয়নে ১৭০০ পরিবার, মহালছড়ি উপজেলায় ৪টি ইউনিয়নে ৮০০ পরিবার, মাটিরাঙ্গা উপজেলায় ৭টি ইউনিয়ন।

এছাড়াও ১টি পৌরসভায় ১৯২০ পরিবার, গুইমারা উপজেলায় ৩টি ইউনিয়নে ৮০০ পরিবার, মানিকছড়ি উপজেলায় ৪টি ইউনিয়নে ১০০০ পরিবার, রামগড় উপজেলায় ২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৭৩০ পরিবার, লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় ৩টি ইউনিয়নে ৫০০ পরিবারসহ সর্বমোট ১০ হাজার প্রতি পরিবারকে ১০ কেজি চাল, ৫০০ গ্রাম ডাল, ৫০০ গ্রাম তৈল ও ১ কেজি আলু সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিতরণ করা হয়েছে।

এ বিতরণ কাজে মাঠ পর্যায় প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক-সামাজিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকসহ নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা সহযোগিতা করেছেন সকলকে পরিষদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় বর্তমান করোনাভাইরাস জনিত পরিস্থিতি আলোকে ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন এবং অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু নির্দিষ্টকরণ ও পুনর্বাসন সম্পর্কিত টাস্কফোর্স-এর মাননীয় চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার পরামর্শক্রমে ১২ এপ্রিল রবিবার খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অনুষ্ঠিত জরুরি দ্বিতীয় পর্যায়ে খাগড়াছড়ি জেলায় ৩টি পৌরসভা ও ৯টি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়নে আরও ১০(দশ) হাজার দুঃস্থ, দরিদ্র ও কর্মহীন পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান কার্যক্রম সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।