কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় আলীকদমে সরকারী এ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারে ভোগান্তি চরমে

লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি:

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারী এম্বুলেন্স থাকা সত্ত্বেও ব্যবহার করতে পারছেনা রোগীরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় রোগীর আত্মীয় স্বজনদের। বাধ্য হয়ে রোগী পরিবহনে ব্যবহার করতে হচ্ছে বিকল্প যানবাহন। কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার কারণে এমনটি হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।  
সরকারী বিধিমোতাবেক দেশের সকল উপজেলায় রোগী পরিবহনে এ্যাম্বুলেন্সে ব্যবহৃত অর্ধেক জ্বালানী খরচে সরকারী ভর্তুকী পাওয়ার কথা। অথচ দিনের পর দিন আলীকদমে সরকারী এ ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগিরা। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা বলে অভিযোগ সচেতন মহলের।

জানা গেছে, ২০১২ সালের ২৫ জানুয়ারী আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ্যাম্বুলেন্সটি সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার পর গত মার্চ মাসে এ্যাম্বুলেন্সটি সরকারী অর্থে মেরামত করা হয়। মেরামতের পর এ্যাম্বুলেন্সটি সচল হলেও রোগি পরিবহন ভাড়া নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করে চলেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তাব্যক্তিরা। ফিলিং স্টেশন জ্বালানী তেল বাকীতে দিচ্ছেনা; এমন অজুহাত তুলে এম্বুলেন্সটি ফেলে রাখা হয়েছে দীর্ঘ ধরে। অথচ মাসের পর মাস এ খাতে নিয়োজিত ড্রাইভার সরকারী কোষাগার থেকে বেতন ভাতা তুলে নিচ্ছেন।

বুধবার সকালে রোগী মো. জাফর আহমদের অভিভাবক মোক্তার আহমদ জানান, রোগীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এম্বুলেন্স নিতে হলে দ্বিগুন ভাড়া লাগে আর লোকাল গাড়ী ভাড়া করতে সময়ের প্রয়োজন হয়। এতে দিকবেদিক ছুটাছুটি করতে করতে রোগীর অবস্থা বেগতিক হয়ে যায়। তাই রোগী নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে বলে তিনি জানান।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, ইতোপূর্বে পার্শ্ববর্তী লামা উপজেলার মাতামূহুরী ফিলিং ষ্টেশন থেকে এ্যাম্বুলেন্সের জ্বালানী নেয়া হতো। বর্তমানে এ ফিলিং ষ্টেশনের মালিক তেল দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় রোগিদের এ্যাম্বুলেন্সের দ্বিগুণ ভাড়া গুণতে হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাতামুহুরী ফিলিং ষ্টেশনের ম্যানেজার বিশ্বাস দাশ গুপ্ত বলেন, জ্বালানী তেলের বিল পেতে বিলম্ব হয়। ঘাটে ঘাটে ঘুষ দিয়ে বিল পাওয়ার পর লাভ তো দুরের কথা, আসল টাকা থেকেও ভর্তুতি দিতে হয়। তাই জ্বালানী তেল সরবরাহ বন্ধ রেখেছি। ফিলিং স্টেশন ম্যানেজারের ঘুষ দাবীর বিষয়ে আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সহকারী ও হিসাব রক্ষক অরুন বিকাশ দত্ত বলেন, জ্বালানী তেলের বিল ভাউচার সংশ্লিষ্টদের নামে ইস্যু করার পর উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসে যদি কোন অর্থ দিতে হয় এর দায় স্বাস্থ্য বিভাগের নয়।

আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মো. মোখলেছুর রহমান জ্বালানী তেল নিয়ে জটিলতার কথা স্বীকার করে বলেন, আলীকদমে ফিলিং স্টেশন নেই। পার্শ্ববর্তী লামা উপজেলার ফিলিং স্টেশন মালিকরা বাকীতে জ্বালানী দিতে গড়িমসি করায় এ অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

One Reply to “কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় আলীকদমে সরকারী এ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারে ভোগান্তি চরমে”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন