কুতুবদিয়ায় দেড় ডজন পরিত্যক্ত ভবন ভেঙে ফেলার অনুমতি মিলছেনা

b-1-copy

কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় অন্ত দেড় ডজন পরিত্যক্ত ভবন মারাত্মক ঝুঁকির মাঝে থাকলেও তা নিলাম দিয়ে ভেঙে ফেলার অনুমতি মিলছেনা। জন সমাগম স্থলে কোনটি দীর্ঘ ২৫ বছর যাবৎ পরিত্যক্ত ভবনগুলো নিলাম দিয়ে ভেঙে না ফেলায় ধসে পড়ে ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।  অতি বর্ষনে পরিত্যক্ত ভবনের একটি ধ্বসে পড়লেও এটির ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে ফেলার অনুমতি পাননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সূত্র মতে, উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ের পেছনে ইউটিডিসি ভবন ২টি, উপজেলা স্টাফ কোয়ার্টার ৪টি সহ ৫টি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের অফিসসহ ২টি, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে ১টি, হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টার ৪টি, পুরনো টেলিগ্রাফ অফিস, কৈয়ারবিলে পুরনো কমিউনিটি সেন্টার, ধূরুং স্টেডিয়ামের পাশে কমিউনিটি সেন্টার, সিকদার বাড়িতে সাবেক গুদামঘর, ধুরুং ইউনিয়ন ভূমি অফিস, শান্তিবাজার, আলী আকবর ডেইল প্রভৃতি স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা পরিত্যক্ত ভবনগুলো মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে।

রাস্তা সহ জনসমাগম স্থলে এ সব পরিত্যক্ত ভবনের অধিকাংশই পরিত্যক্তের মেয়াদ অন্তত: কোনটির ২৫ বছর মেয়াদ পার হয়েছে। যেগুলো অধিকাংশই ‘৯১ এর প্রলয়ংকরী ঘর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। যা যে কোন সময় ধসে পড়ে ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা করেছেন এলাকাবাসি। কয়েকমাস আগে প্রায় দু‘সপ্তাহ ধরে অবিরাম বর্ষনে ঝুঁকি বেড়েছে দ্বিগুন। উপজেলা নির্বাহি অফিসারের কার্যালয়ের পেছনে পরিত্যক্ত পুরাতন আদালত ভবনটি ধ্বসে পড়েছে। পাশেই চলমান অফিস জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ভবনটি যে কোন মূহুর্তে ধ্বসে পড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ঐ অফিসের কর্মচারীরা।

অপরদিকে ভবনগুলো পরিত্যক্ত থাকায় সেখানে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের পরামর্শ কেন্দ্র ও মদ জুয়ার আসরে পরিণত হয়েছে। সরকারি হাসপাতালের একাধিক পরিত্যক্ত স্টাফ কোয়ার্টার, ধূরুং পরিত্যক্ত কমিউনিটি সেন্টারে প্রতিনিয়ত জুয়া ও মদের আসর জমে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। সুযোগ বুঝে কোনটির রড খুলে নিচ্ছে ছিঁচকে চোরেরা। ধুরুং ভূমি অফিসের প্রায় অর্ধেক দরজা-জানালা, ইট খুলে নিয়েছে চোরেরা। ভবনের রড, দরজা-জানালা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কিছুই নেই এখন। ভবনগুলো ভেঙে ফেলার উদ্যোগ না নেয়ায় এক দিকে যেমন দূর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে তেমনি সরকারি জায়গায় বছরের পর বছর ভবন পরিত্যক্ত থাকায় পতিত পড়ে আছে মূল্যবান জমি।

বিগত সময়ে একাধিক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাগণ পরিত্যক্ত ভবনের বিষয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অবহিত করেছেন বলে জানা গেছে। দূর্ঘটনায় প্রাণহানির আগেই  এসব পরিত্যক্ত ভবন নিলামে দিয়ে ভেঙে ফেলার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন সচেতন মানুষ।

উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ পরিত্যক্ত ভবনগুলো ভেঙে ফেলতে অনুমতি চেয়ে বেশ কয়েকবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এসব চিঠি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় পর্যন্ত গিয়েছে কিনা বা কোথায় তা আটকে আছে তা জানা যায়নি। এর কোন জবাব পর্যন্ত মিলছেনা বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে সমন্বয় পরিষদের প্রায় সভাতেই আলোচনা হয়।  সর্বশেষ চেষ্টা হিসেবে ফের লিখিত ভাবে পাঠানো হয়েছে তবে কোন রেজাল্ট মেলেনি বলে তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন