খাগড়াছড়িতে একটি সেতুর অভাবে শিশু শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ

10934479_757773824316907_1992796242_n

মুজিবুর রহমান ভুইয়া :

খাগড়াছড়িতে একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোহ পোহাচ্ছে প্রায় দুই‘শ শিশু শিক্ষার্থীসহ এলাকার জনগন। একটি সেতুর অভাব পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির এসব শিশু শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন বার বার বাধাগ্রস্থ করছে। খাল পেরিয়ে পাহাড়ের চুড়ায় অবস্থিত বিদ্যালয়ে যায় তিন গ্রামের শিশু শিক্ষার্থীরা। বর্ষাকালে খালের পানি বাড়ার সাথে সাথেই বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায় এসব শিক্ষার্থীদের। বছরের পর বছর ধরে এ ভাবেই শিক্ষা লাভ করছে খাগড়াছড়ির দেবেন্দ্র মোহনপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীরা।

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার পেরাছড়া ইউনিয়নের শিশু শিক্ষার্থীরা একটি সেতুর অভাবে এভাবেই ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করছে বছরের পর বছর ধরে। দেবেন্দ্র মোহনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মেরিলা ত্রিপুরা ও উমেশ কান্তি ত্রিপুরা জানায়, খালে পানি বাড়লে তারা বিদ্যালয়ে আসেনা। অনেক সময় বিদ্যালয়ে আসার পর ভারী বৃষ্টি হলে ক্লাস শেষ না করেই দ্রæত বাড়ি ফিরতে হয় তাদের।

দেবেন্দ্র মোহনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিজুবালা দেবী‘র সাথে কথা হলে তিনি জানান, থৈবাকলাই গ্রাম, জেরকপাড়া, হেমপাড়া, সাতমাইল এলাকার শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন খাল পার হয়ে যাতায়াত করে। বিদ্যালয়ের প্রাই দুই‘শ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই এসব দুর্গম এলাকা থেকে আসে। বর্ষায় শিক্ষার্থীরা ভীষণ অসুবিধায় পড়ে। এ সময় অনেকেই বিদ্যালয়ে আসে না। অন্তত শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে খাগড়াছড়ি খালে একটি সেতু নির্মাণ করে দেওয়া জরুরী বলেও মনে করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়টির অবস্থান পাহাড়ের উচুতে হওয়ায় খালটি পার হওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের কয়েক‘শ ফুট উঁচু পাহাড়ে উঠতে হয়। পাহাড়ে ওঠার কাচা রাস্তাটি তখন খুবই পিচ্ছিল থাকে। এ কারণে রাস্তায় ইট বিছিয়ে দিলে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সহজ হতো।

শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, খালের ওপর সেতু না থাকায় থৈবাকলাই ও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারাও ভোগািন্তর শিকার হচ্ছে। থৈবাকলাই গ্রামের বাসিন্দা দীনেশ মোহন ত্রিপুরা জানান, খালটিতে একটি সেতু না থাকায় খেতে উৎপাদিত ফসল কাঁধে করে বহন করে নিয়ে যেতে হয় চারমাইল এলাকার সড়ক পর্যন্ত। সেতু হলে যানবাহনে করে পণ্য পরিবহন করা সম্ভব হতো। তিনি আরও জানান, বর্ষাকালে হঠাৎ খালে পানি বাড়লে অভিভাবকেরা তাদের শিশুদের নিয়ে উৎকণ্ঠায় থাকেন।

খাগড়াছড়ি খালটি পেরছড়া ও গোলাবাড়ি ইউনিয়নের মাঝামাঝি পড়েছে। এ কারণেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও খালের ওপর সেতু নির্মাণে আগ্রহ দেখান না।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পেরাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সঞ্জিব ত্রিপুরা বলেন, দুই ইউনিয়নের মাঝামাঝি এ খালটির অবস্থান। তবুও আমি এই খালে একটি সেতু নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, এনডিসি খাগড়াছড়ি সফরে আসলে আমি ওই খালের উপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছি। তিনিও সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন। বর্তমানে আমরা সচিবের আশ্বাসের বাস্তবায়ন চাই।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন