খাগড়াছড়িতে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা ও বাড়ি-ঘর ভাঙচুরের অভিযোগ

প্রেসবিজ্ঞপ্তি:

খাগড়াছড়িতে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই মন্তব্য করে নির্বাচনী এলাকায় সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর একের পর এক  হামলা, মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি-গ্রেফতার, দলীয় অফিসে তালা, নেতাকর্মীদের বাড়ি ঘরে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর করার অভিযোগ করেছে বিএনপি।

সোমবার(২৪ ডিসেম্বর) জেলা দপ্তর সম্পাদক আবু তালেব স্বাক্ষরকৃত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিযোগ জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে রোববার (২৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপির  ৫৭৩ জন নেতাকর্মীকে আসামি করে ০৯ টি হয়রানী ও ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। মামলায় এর মধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

নেতাকর্মীদের এবং তাদের বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে এ পর্যন্ত ৭০ জনকে আহত করা হয়েছে। আহতরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতাল এবং বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসারত আছেন।

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে হুমকি-ধামকি দিয়ে বাড়ি ছাড়া করছে। এ পর্যন্ত বাড়িছাড়া করা হয়েছে সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে। অনেকে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও খুলতে পারছে না।

এছাড়াও আমাদের নির্বাচনী প্রচারণায় এবং প্রচার মাইকের গাড়িকে বাধা দেয়া, পোস্টার ছিঁড়া, আগুন দেয়া এবং দলীয় অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে বলা হয়- সর্বশেষ ২৩ ডিসেম্বর, রোববার সন্ধ্যায় জেলা সদরের ভাইবোনছড়ায় প্রার্থীর প্রচার গাড়িকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ৬ জনকে আহত করেছে।

২২ ডিসেম্বর দুপুরে জেলার রামগড়ে প্রার্থীর গণসংযোগ চলাকালে পুলিশের সামনে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়।

বিএনপি নেতাকর্মীরা যেন নির্বাচনী মাঠে না থাকতে পারে তাই, ২১ ডিসেম্বর দিবাগত পানছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিজেরাই নিজেদের অফিস ভাঙচুর করে নিজেরা ফটোসেশন করে, বিএনপি নেতা কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। আর এসব মিথ্যা মামলায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতা কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধরপাকড় ও গণগ্রেফতারের চেষ্টা করছে। এর মধ্যে ১২/১৩ জনকে আটক করে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘরে তাণ্ডবলীলা চালাচ্ছে।

১৮ ডিসেম্বর মাটিরাঙ্গা উপজেলায় প্রার্থীর গণসংযোগ চলাকালে আওয়ামী লীগ কর্মীরা দফায় দফায় হামলা চালিয়ে নেতাকর্মীদের আহত করে উল্টো বিএনপির ৫৭ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করেছে।

১৪ ডিসেম্বর রামগড়ের সোনাইপুলে নির্বাচনী প্রচারণা কালে আওয়ামী নেতাকর্মীদের হামলায় রামগড় পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি কামাল উদ্দিন গুরুতর আহত হয়েছে। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছিল।

একই অবস্থা মানিকছড়ি উপজেলায়ও বলে অভযোগে উল্লেখ করা হয়।

অভিযোগে বলা হয়েছে- ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মানিকছড়ি  উপজেলার তিনটহরী বাজারে  ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মো. তাজু (৫০) বাজারে নামাজ পড়তে আসলে তিনটহরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও নেতা বাহার, হোসেন ও মোক্তারসহ ১০/১২ জন অতর্কিত হামলা করে তাকে গুরুতর আহত করে একই সাথে ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এরশাদ হুজুরকেও যুবলীগ কর্মীরা হামলা করে আহত করে।

২১ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে দশটায় মানিকছড়ি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আলমগীর হোসেনকে (২৮) ছাত্রলীগ কর্মী হোসেন ও নাসির এর নেতৃত্বে ৭/৮জন তার নিজ বাসায় গিয়ে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে এবং বাড়িঘর ভাঙচুর করে। এ সময় বাড়িতে থাকা মা-বোনদের শ্লিলতাহানি করার অভিযোগও করা হয়েছে।

২১ ডিসেম্বর দিঘীনালা উপজেলার বেতছড়ি গ্রামে ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচনী অফিসে আওয়ামী কর্মীরা হামলা করে বিএনপি কর্মী কাসেম কে গুরুতর আহত ও অফিস ভাঙচুর করে।

১২ ডিসেম্বর দিঘীনালায় উপজেলা মহিলাদল নেত্রী মুরশিদাকে মারধর করা হয়। সে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে অনেকদিন চিকিৎসাধীন ছিল।

এসব কারণে খাগড়াছড়িতে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই উল্লেখ করে এসব ঘটনা নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিকভাবে জানিয়েও কোনো প্রতিকার হয়নি বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রশাসন  ও নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে দলটি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন