খাগড়াছড়িতে হেরিটাজ পার্ক মসজিদ নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে প্রশাসনকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম

Untitled-1

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :

পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার পর্যটন মোটেল এলাকায় অবস্থিত হেরিটাজ পার্ক জামে মসজিদ নির্মাণ কাজে খাগড়াছড়ি জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ড্যান্ট আ: মজিদ কর্তৃক অর্ধ নির্মিত মসজিদের নির্মাণ কাজ বন্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি ও জোর পূর্বক মসজিদের সামনে সওজ বিভাগের সরকারী সীমানায় তাঁরকাটা ঘেরাও করে মসজিদ আবদ্ধ এবং ‘‘মসজিদের চেয়ে জায়গার দাম অনেক বেশী’’ এ ধরনের বিরূপ মন্তব্য করায় অবিলম্বে মসজিদ নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, আ: মজিদের অপসারণের দাবীতে খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন কর্মসূচি ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছে হেরিটাজ পার্ক জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও এলাকার মুসলিম জনতা।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা মসজিদের সামনে তাঁরকাটা, নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা ও জেলা আনসার-ভিডিপি কমান্ড্যান্ট আ: মজিদকে অপসারণ করাতে স্থানীয় প্রশাসনকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন।

আজ রবিবার সকাল ১১টায় হেরিটার্জ পাক জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির আয়োজনে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের শাপলা চত্বরে বৃহত্তর এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে জেলা, উপজেলাসহ ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জেন, মাদ্রাসার ছাত্র ও হেরিটার্জ পার্ক এলাকার  মুসলমানগণ।

এ উপলক্ষে সকাল থেকে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সৈয়দ মো: মাহবুবুর রহমান, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো: ইব্রাহিম খলিল, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও জেলার সাবেক সভাপতি আব্দুল মজিদসহ এলাকার জসিম উদ্দিন বাবু প্রমূখ।

মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক খাগড়াছড়ির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপিটি জেলা প্রশাসক মো: মাসুদ করিম অনুপস্থিত থাকায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো: আব্দুল খালেক গ্রহণ করেন।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, মসজিদ আল্লাহর ঘর। কোন অপশক্তি মসজিদ নির্মান কাজ বন্ধ রাখতে পারবে না। খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেল এলাকা, বলপিয়া আদাম, আনন্দ এনজিও’র আশ-পাশ এলাকাসহ প্রায় ৭০টি মুসলিম পরিবারের নামাজ আদায় ও ছেলে মেয়েদের মক্তবের জন্য আনসার ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন হেরিটাজ পার্কে আগত মুসলমানদের নামাজ আদায়ের লক্ষে বর্তমান মসজিদটি স্থানান্তর করে ক্যান্টিনের পাশে জমিতে তৎকালীন আনসার কমান্ড্যান্ট আজিম উদ্দিনের সম্মতিক্রমে ও সদর উপজেলা এ্যাডজুটেন্ট মো: আবু তাহেরকে সভাপতি করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মাধ্যমে ২০১৩ সালে  মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। মসজিদ নির্মাণের জন্য মসজিদের সামনে মাইক দিয়ে বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী সাধারণসহ ও এলাকার দানশীল ব্যক্তিবর্গের অর্থ সহযোগিতায় মসজিদের নির্মাণ কাজ চলাবস্থায় বর্তমান জেলা আনসার-ভিডিপি কমান্ড্যান্ট আ: মজিদ মৌখিক নির্দেশে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, বর্তমান জেলা আনসার-ভিডিপি কমান্ড্যান্ট শান্ত পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হাঙ্গামা ও পাহাড়কে উত্তেজিত করে তুলতে মসজিদের সামনে তাঁরকাটা দিয়ে মসজিদকে আবদ্ধ করে রেখেছেন।  এছাড়াও তিনি ‘‘মসজিদের চেয়ে জায়গার দাম অনেক বেশী’’ বলে যে ধরনের মন্তব্য করেছেন, তা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ভাবমুর্তিতে আঘাত হানে।

তিনি আরও বলেন, গত ১৪ মে জেলা কমান্ড্যান্ট আ: মজিদ ব্যাটালিয়ন আনসারদের দিয়ে মসজিদের সামনে সওজ বিভাগের জায়গায় তাঁরকাটার ঘেরা দিয়ে মসজিদটি আবদ্ধ করে দেওয়ায় এলাকার মুসলমানদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। এসময় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমানের তৎপরতায় উত্তেজিত জনতা শান্ত হলেও রাতের অন্ধকারে জেলা কমান্ড্যান্ট আ: মজিদ মসজিদের চারিপার্শে আমচারা রোপন করেছে। তার এধরনের আচরণের ফলে এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

তবে সচেতন মুসলিম সমাজ মনে করেন, এ বিষয়ে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এলাকার পরিস্থিতি খারাপ হবার সম্ভাবনা রয়েছে।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালের ১৫ নভেম্বর মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরুর পর পরই ২১ অক্টোবর’২০১৩ তারিখে জেলা কমান্ড্যান্ট আজীম উদ্দিন বদলী হলে ১৭ নভেম্বর বর্তমান জেলা কমান্ডার আ: মজিদ খাগড়াছড়িতে যোগদান করেন । তিনি যোগদানের পর প্রায় ৪ মাস অতিবাহিত হলেও প্রায় এক মাস পূর্বে তিনি নির্মাণ কাজ বন্ধ করার মৌখিক নির্দেশ প্রদান করেন। তার আমলেই মসজিদের অধিকাংশ নির্মাণ কাজ করা হয়। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন