টেকনাফের হাট বাজারে পশু সঙ্কটের আশঙ্কা

IMG_2
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার:
কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে মিয়ানমার থেকে আগের মত ঝাঁকে ঝাঁকে পশু আমদানী হচেছ না। তাই টেকনাফের হাট বাজার সমূহে পশু সংকটের আশংকা রয়েছে। প্রতিবছর কোরবানীর আগে মিয়ানমার থেকে হাজার হাজার পশু টেকনাফ করিডোরে আসে। এ সব পশু দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে অধিকাংশ চাহিদা পূরন করা হয়।

বর্তমানে করিডোরে যে পশু আসছে তা খুবই কম। যার ফলে এবার ঈদে পশু সংকটের আশংকা করা হচেছ। আগে করিডোরে মিয়ানমার পশু ভর্তি থাকলেও বর্তমানে অনেক এলাকা পশু বিহীন ফাঁকা পড়ে রয়েছে। তবে মিয়ানমার সমস্যা, সাগর ও নদীতে সেদেশে বাঁধাসহ নানা কারনে পশু আমদানী কম হচেছ এমনটি মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। চলতি অর্থ বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর তিন মাসে সাড়ে ২৩ লাখ টাকার মত রাজস্ব আদায় হয়েছে। কোরবানীর ঈদ মাত্র চার দিন। এ সময় পশু আমদানী কম হলে রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত হবে সরকার।

শুল্ক বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাযায়, সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে গবাদি পশু আসা রোধে সরকার ২০০৩ সালের ২৫ মে টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপ করিডোরটি চালু করা হয়। প্রতি গরু-মহিষ ৫০০ ও ছাগল ২০০ টাকা হারে রাজস্ব আদায় করে। দীর্ঘ এগার বছরে এ খাতে সরকার প্রায় ১৩ কোটি টাকার মত রাজস্ব আদায় করেছে। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরের অক্টোবর মাসের প্রথমদিন বুধবার ২৩৫ গরু-মহিষ আমদানী করে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা রাজস্ব পেয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে ৩০৯৯ গরু-মহিষ ও ৫৮ ছাগল আমদানী করে ১৫ লাখ ৬১ হাজার ১০০ টাকা ও আগস্ট মাসে ১২২২ গরু-মহিষ ও ৪৩ ছাগল আমদানী করে ৬ লাখ ১৯ হাজার ৬০০ টাকা এবং জুলাই মাসে ৩৬৫ গরু-মহিষ ও ২৩ ছাগল আমদানী করে ১ লাখ ৮৭ হাজার ১০০ টাকা রাজস্ব আদায় করেছে।

এ তিন মাসে সরকার ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ৮শ টাকার রাজস্ব পায়। গত অর্থ বছরে ২২৮০২ গরু-মহিষ ও ৮৮৫ ছাগল আমদানী করে ১ কোটি ১৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকার রাজস্ব পেয়েছে। এ করিডোরটি শুল্ক স্টেশনের আওতাধীন একটি রাজস্ব জোন। এর দায়িত্বে আছে কাস্টমস ও বিজিবি। সরকার করিডোর থেকে প্রতিবছর কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করলেও নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত এবং এখনো অবকাঠামো বিহীন পড়ে রয়েছে।
শাহপরীরদ্বীপ করিডোরের পশু ব্যবসায়ী মোঃ শহীদ ও আব্দু শুক্কুর জানান, মিয়ানমার থেকে আগের তুলনায় পশু আমদানী কম হচেছ। তবে কোরবানীর সময় আগে অনেক পশু আসত। আগের তুলনায় এ বছর অনেক কম পশু আসছে। মিয়ানমারে আগের মত পশু সংগ্রহ করে তা সহজ ভাবে আমদানী করতে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া মাঝে মধ্যে সাগর ও নদীতেও সেদেশের নৌ ও বিজিপি বাহিনী সমস্যা করছে। যার ফলে পশু আমদানীতে তা প্রভাব পড়ছে। তার পরও এক, দুইটি ছোট বড় ট্রলারে করে পশু আসছে। ফলে পশু আসা অনেকটা কমে গেছে। তবে পশু আমদানীর সমস্যাদি চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন।

টেকনাফ শুল্ক কর্মকর্তা নূরে আলম জানান, শাহপরীরদ্বীপ করিডোর দিয়ে পশু আমদানী করে ব্যবসায়ীরা রাজস্ব আদায়ে ভুমিকা রেখে যাচ্ছে। কয়েক দিন আগে একমাত্র এ করিডোর দিয়ে বেশ কিছু পশু আসছিল। হঠাৎ করে পশু আমদানি কমে যাওয়ায় সরকারী রাজস্ব আয়ও কমে গেছে। তবে আগে তুলনায় পশু আমদানী কম হওয়ায় রাজস্ব আদায় অনেকটা প্রভাব পড়ছেন বলে জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন