লক্ষ্মীছড়িতে রুইখই মার্মা নিহত’র ৫ম বার্ষিকীকে ঘিরে ইউপিডিএফ-জেএসএস পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচী: সংঘাতের আশংকা

Mn`M_oMn[n
মোবারক হোসেন, লক্ষ্মীছড়ি:

খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় ইউপিডিএফ নেতা রুইখই মার্মা(অংসাইন বাবু) ৫ম মৃত্যু বার্ষিকী পালনকে কেন্দ্র করে ২টি আঞ্চলিক দলই নানা কর্মসূচী দিয়েছে।

২০০৯ সালের ২ অক্টোবর বর্মাছড়ি ইউনিয়নের বটথলী এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন এই নেতা। প্রিয় নেতাকে স্মরণ করতে ইউপিডিএফ দিবসটিকে ঐতিহাসিক শহীদ দিবস উল্লেখ করে শোক ও স্মরণ সভা, ধর্মীয় নানা অনুষ্ঠান ছাড়াও বিশেষ কর্মসূচী দিয়েছে। ইউপিডিএফ’র লক্ষ্মীছড়ি শাখার প্রতিনিধি বিধান চাকমা এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতা চেয়ে একটি লিখিত আবেদন করেন।

এদিকে ইউপিডিএফ’র অব্যাহত গণচাঁদাবাজি, নিরিহ সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অর্থ আদায়, অপহরণসহ নানা অপকর্ম বন্ধের দাবিতে জেএসএস’র পক্ষ হতে একই দিনে উপজেলা সদরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করার অনুমোতি চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। জনসংহতি সমিতি (জেএসএস’র) লক্ষ্মীছড়ি শাখার সভাপতি ধীমান চাকমা এ আবেদন করেন। ইউপিডিএফ-জেএসএস’র এই পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচীকে ঘিরে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে বিভিন্ন পাহাড়ি পল্লীতে।

অনেকের ধারনা কর্মসূচী যদি শান্তিপূর্ণ না হয় তাহলে সংঘাতের আশংকা করা হচ্ছে। এতে করে আবারো উত্তপ্ত হতে পারে লক্ষ্মীছড়ির শান্ত জনপথ। লক্ষ্মীছড়ি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস.আই আরিফ সাংবাদিকদের জানান, এলাকার শান্তি বিঘ্নিত হয় এমন কোন কিছুই করতে দেয়া হবে না। জান-মাল রক্ষায় সব ধরনের প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শওকত ওসমানকে জিগ্যেস করা হলে তিনি বলেন, কোন পক্ষকেই এখনো পর্যন্ত সভা-সমাবেশ করার অনুমোতি দেয়া হয় নি।

উল্লেখ্য, সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত রুইখই মার্মা শান্তিবাহিনী থেকে আত্মসমর্পনের পর পার্বত্য চুক্তিবিরোধী ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এ যোগ দেয়ার পর কেন্দ্রীয় সদস্য ছাড়াও লক্ষ্মীছড় উপজেলার সশস্ত্র শাখার চীফ কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলেন। ঘটনার দিন বর্মাছড়ি বটথলী এলাকার একটি চায়ের দোকান থেকে বেড়িয়ে জমির ভেতর দিয়ে নিজ গন্তব্যে ফিরছিলেন পতিমধ্যে সন্ত্রাসীরা গুলি চালিয়ে হত্যা করে নির্ভিগ্নে পালিয়ে যায়। পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে ১১টি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায় তার শরীরে।

এ ঘটনায় ইউপিডিএফ’র পক্ষ থেকে জেএসএসকে দায়ি করলেও জেএসএস অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করে। এ ব্যাপাওে ৩ অক্টোবর লক্ষ্মীছড়ি থানায় ১২জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে নিহতের স্ত্রী রিতা মার্মা। পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত করে ২০১০ সালের ১২ জুন ৮জনকে অভিযুক্ত করে তৎকালীন তদন্তকারি অফিসার আদালতে ফাইনাল চার্জশটি দেয়। মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। তবে সব আসামীরাই পলাতক রয়েছেন বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন