টেকনাফ গরু বাজারে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের হামলা

fec-image

টেকনাফের সদরে গরুর বাজারে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সন্ত্রাসী হামলায় জাফর আলম নামে এক গরু বিক্রেতা গুরুতর আহত হয়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে।

রবিবার(১ মার্চ) বিকেলে টেকনাফ সদরের ডেইল পাড়াস্থ গরুর বাজারে নিজের গরু বিক্রির সময় এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে এঘটনা ঘটে। আহত জাফরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, আহত জাফর আলম টেকনাফ সদরের গোদারবিল এলাকার বাদশা মিয়ার পুত্র। তিনি উক্ত বাজারে গরু বিক্রি করার সময় স্থানীয় ইয়াবা ব্যবসায়ী আবু ছৈয়দের নেতৃত্বে ৮/১০ জনের একদল সন্ত্রাসী তার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে।

এ সময় তিনি চাঁদা দিতে অপারগতা জানালে সন্ত্রাসীরা লাঠি ও লোহার রড দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। এতে জাফরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত হলে সে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তাকে টেকনাফ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ ইয়াবা ব্যবসায়ী আবু ছৈয়দসহ তার আত্বীয় স্বজনরা চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে উক্ত গরুর বাজার নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ইন্ধনে প্রশাসনের নাকের ডগায় তারা এ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

আবু ছৈয়দ টেকনাফ সদরের গোদারবিল গ্রামের মৃত কালা মিয়ার পুত্র। সে একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী তার ভাই ছৈয়দ কাছিম এক লক্ষ ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে আটক হয়ে ১৪ বছরের সাজা ভোগ করছে কক্সবাজার জেলা কারাগারে।

এছাড়াও আবু ছৈয়দের আপন দুই শ্যালক মো: আমিন ও নুরুল আমিন টেকনাফ সদরের ডেইল পাড়া গ্রামের কালা মো: আলীর পুত্র।ওই মো: আমিন ও নুরুল আমিন ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসাবে আত্বসমর্থন করে বর্তমানে কক্সবাজার জেলখানায় বন্দি জীবন কাটাচ্ছে।

ইয়াবা ব্যবসায়ী আবু ছৈয়দ, পুত্র আবদুল্লাহ ও কেফায়ত, ভাই ছৈয়দ কাছিম, মীর কাসেম, মো: কাছিম, শ্যালক মো: আমিন ও নুরুল আমিন এরা সবাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী।

সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৪ মার্চ টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির দাতা সদস্যদের নির্বাচন, উক্ত কমিটিতে দাতা সদস্য নির্বাচনে ইয়াবা ব্যবসায়ী আবু ছৈয়দের পুত্র ইয়াবা ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ ৩ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়ে উক্ত কমিটিতে নির্বাচন করার অভিযোগ উঠেছে। একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী বিদ্যালয়ের নির্বাচনে অংশ নেয়াকে কেন্দ্র করে টেকনাফ সদরের সচেতন মহলের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এলাকার লোকজন জানায়, আবু ছৈয়দ ও তার ভাই মীর কাসেমসহ সবাই কসাই কাজ ও গরুর ব্যবসা করত। কিন্তু তারা ইয়াবা ব্যবসাকে আড়াল করার জন্য গরু ব্যবসায় নেমে পড়েছে। তারা মায়ানমার থেকে গরু আমদানীর নামে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

আবু ছৈয়দ সিন্ডিকেট, হুন্ডির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা মায়ানমায়ারে পাচার করছে এবং এ কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে গরু ও গরুর পেটে করে ইয়াবা আমদানী করছে।

প্রাপ্ত তথ্যে আরো জানা যায়, মায়ানমার থেকে গরু আমদানীর পূর্বে গরুর পেটে ইয়াবা ট্যাবলেট ডুকিয়ে দেয় পরে টেকনাফে এনে উক্ত গরু জবেহ করে ট্যাবলেটগুলো পেট থেকে বের করে মাংসগুলো বিক্রি করে দেয়। এভাবেই তারা অভিনব কায়দায় সুকৌশলে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান আহত জাফর আলম।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইয়াবা, টেকনাফ, সন্ত্রাস
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন