ঢাকায় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ১৭তম বর্ষ পালিত

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

দেশের এক ও অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ পার্বত্য চট্টগ্রাম রক্ষার বজ্রশপথ নিয়ে ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি তথা শান্তিচুক্তির ১৭তম বর্ষ পালন করেছে পাহাড়ের বৃহত্তম মানবাধিকার সংগঠন সমঅধিকার আন্দোলন।

ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় সমাবেশ ও মানববন্ধন। এতে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মনির। সমঅধিকার ছাত্র-যুব আন্দোলন এবং সমঅধিকার নারী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরাও মানববন্ধনে যোগদান করেন।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা বাংলাদেশ ইসলামীক পার্টি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আব্দুল মবিন এবং প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা সিলেট বিভাগ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি এ্যাডভোকেট আবেদ রেজা। আরো বক্তব্য রাখেন ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক সর্দার সাহাদাত হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

কর্মসূচীর শুরুতে সমঅধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মশিউল আলম হুমায়ুন এর বিদেহী আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং পাহাড়ে বর্বর লারমা বাহিনীর হামলায় নিহত ৩০ হাজার পার্বত্যবাসী বাঙালীদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি উপলক্ষে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামে ও সমঅধিকার আন্দোলনের উদ্যোগ একাধিক কর্মসূচী পালিত হয়েছে। ঢাকার মানববন্ধনে সমঅধিকার আন্দোলনের ৯ দফা দাবীনামা সম্বলিত লিফলেট বিতরন, কালোব্যাজ ধারন ও কালোপতাকা প্রদর্শন করা হয়েছে।
সমঅধিকার নারী আন্দোলন নেত্রী রওশন-আরা-সুরমাসহ মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন ছাত্র আন্দোলন নেতা প্রকৌশলী ফেরদৌস মানিক।

বক্তারা সবাই বলেন তিন পার্বত্য জেলা থেকে সকল বে-আইনী অস্ত্র উদ্ধার, পাহাড়ী রাষ্ট্রদ্রোহী সন্ত্রাসীদের আটক এবং ৯ দফা দাবীনামা বাস্তবায়ন করতে হবে। নতুবা শান্তিচুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়ন করে সন্তু লারমাদের হাতে সমগ্র ক্ষমতা ছেড়ে দিলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এতে করে জনসংহতি সমিতিও ইউপিডিএফ এর চাহিদা মোতাবেক তথাকথিত ‘জুম্মল্যান্ড’ দাবী জোরদার করন করা হবে। জাতি যে কোন মূল্যে দেশের অখন্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করবে এবং রাষ্ট্রদ্রোহী সশস্ত্র সন্ত্রাস প্রতিহত করবে।

সভাপতির ভাষণে সমঅধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মনিরুজ্জামান মনির বলেন-সন্তুু লারমা একজন পরাজিত ও আত্মসমর্পনকারী দলের নেতা হয়েও তার বাচনভঙ্গী ও হুমকি-ধামকী দেখে সেটি মনে হয় না। সরকার আত্মসমর্পনকারী রাষ্ট্রদ্রোহী, সেনা-পুলিশ-বিডিআর-হিলআনসারসহ ৩০ হাজার বাঙ্গালীর ঘাতক সন্তুু লারমাকে এবং জনসংহতি সমিতি নেতাদেরকে যেসব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, বিশ্বের ইতিহাসে কোথাও তার নজিড় নাই। তিনি বলেন- ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় আত্মসমর্পনের পর জেঃ নিয়াজীকে মিত্রবাহিনীর ক্যাম্পে বন্দী রাখা হয়েছিল। অথচ সন্তুু লারমা ও ২০০০ শান্তিবাহিনী সদস্যকে আত্মসমর্পনের পর জামাই আদরে রাখা হচ্ছে। তারা কথায় কথায় আবারো অস্ত্র ধরার হুমকি দেয়, সর্বশেষ জুমল্যান্ড দাবী না মানলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১লা মে থেকে অসহযোগ আন্দোলনে হুমকি দিয়েছে- যা’ অত্যন্ত দুঃখজনক।

দেশের ১৬ কোটি মানুষ সন্তুুলারমার এই আস্ফালনকে তীব্র ঘৃণা ও ধিক্কার জানাচ্ছে বলেও সমঅধিকার আন্দোলন নেতারা মন্তব্য করেছেন। বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলনের ৯ দফা দাবী নামা বাস্তবায়ন করে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় স্থায়ীভাবে উপজাতীয় এবং বাঙালিদের মধ্যে ঐক্য, শান্তি ও সম্প্রীতি স্থাপনের দাবী জানান এবং কালো চুক্তি বাতিল করে পরাজিত ও আত্মসমর্পনকারী জনসংহতি সমিতির নেতা সন্তুুলারমাকে দেশের আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন