তাইন্দং সহিংসতায় প্রশাসন ও তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের বিরূপ আচরণের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে পিবিসিপির বিক্ষোভ

1170711_529095313806799_1447424051_n

নিজস্ব প্রতিনিধি :

মাটিরাঙ্গার তাইন্দং সহিংসতার ঘটনায় স্থানীয় প্রসাশন ও তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের বিরুদ্ধাচরনের প্রতিবাদসহ আটককৃতদের মুক্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন শেষে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ (পিবিসিপি)। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো: আব্দুল মজিদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পিবিসিপির জেলা শাখার যুগ্ন সম্পাদক মো: সোহেল রানা, সদস্য উমর ফারুক, খাগড়াছড়ি পৌরসভা সভাপতি নুরে আলম প্রমুখ।

পার্বত্য চট্রগ্রামে বাঙ্গালীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ আটক পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ নেতৃবৃন্দ ও গ্রেফতারকৃত স্থানীয়দের মুক্তিদাবী জানিয়ে ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত পুর্বক স্বার্থান্বেষী মহল ও ইন্ধনদাতা এবং ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিচারের দাবী জানায়িছে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ। মানববন্ধনে বক্তব্যে উপস্থিত নেতৃবৃন্দরা অভিযোগ করেন, পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের মধ্যে সাম্পদায়িক সম্প্রতি নষ্টের লক্ষে কিছু স্বার্থনীশি মহলের প্ররোচনায় ঘটনাটি ঘটিয়ে বর্তমানে বাঙ্গালীদের উপর তার দায়ভার চাপানোর চেষ্টা করছে। পাহাড়ের বাঙ্গালীদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র ও পার্বত্য অঞ্চল থেকে বিতারিত করার নীল নকশা করছে বলে দাবী করেছে সংগঠনটি।

গত ৩ আগষ্ট মাটিরাঙ্গার তাইন্দংয়ের বান্দরশিং এলাকায় কামাল হোসেন (৩০) নামক এক বাঙ্গালী যুবক ২ উপজাতীয় মহিলা যাত্রী নিয়ে গিয়ে ফেরার পথে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা তাকে অপহরন করে হত্যার চেষ্টার এক পর্যায়ে জানাজানি হয়ে যাওয়ায় তাকে বেদড়ক মারধর করে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেওয়ার সুযোগে স্বার্থনীশি মহল তাদের স্বার্থ হাসিল করতে পরিকল্পিত ভাবে উপজাতীদের বাড়ী ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট করে তা স্থানীয় বাঙ্গালীদের উপর চাপানোর চেষ্টা করে। তাইন্দংয়ের ঘটনা চাঁদাবাজী ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটনানোর বিষয়টি উল্লেখ করলেও পরে উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থল তাইন্দংয়ের বগাপাড়া, সর্বেশ্বরপাড়া, তালুকদার পাড়া ও বান্দরশিং পাহাড়ী গুলোতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দিপঙ্কর তালুকদারসহ উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে ঐ এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ অনিল বিকাশ চাকমাকে বাদী করিয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাতপরিচয়ে দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করে।

এ সকল ঘটনায় বর্তমানে বাঙ্গালীরা নিরাপত্তা হীনতায় ভূগছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন এখনো থেমে নেই পাহাড়ে অপহরন,চাঁদাবজী ও খুনের ঘটনা। পরিকল্পনা কারী উপজাতীয় স্বশস্ত্র সংগঠনগুলো ঘটনার সাথে জড়িত থাকলেও তারা আজও ধরা ছোয়ার বাইরে থেকেই যাচ্ছে বলে নেতৃবৃন্দরা উল্লেখ করেন। পাহাড়ে বর্তমানে বাঙ্গালীদের বিতাড়ীত করতে গভীর ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে অভিযোগ করে নেতৃবৃন্দরা তাইন্দংয়ের ঘটনায় আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর যোগ সাজেশে ভারতসহ দেশের মিডিয়ায় বাঙ্গালীদের দায়ী করে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।

গত ৩ আগস্ট এ ঘটনায় ঘরবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো করার অভিযোগে মামলায় নাম উল্লেখহীন পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের তাইন্দং ইউনিয়ন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, তবলছড়ি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান ও জনপ্রতিনিধি সিরাজুল ইসলামসহ গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দাবী করে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে ৬ দফা দাবী পেশ করেন নেতৃবৃন্দ। দাবী সমুহ হলো- পরিকল্পত ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটনে জন্য উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন, আটক ২ বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ নেতাসহ নিরপরাধ বাঙ্গালীদের মুক্তি, জড়িতদের খুজে বের করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তিদাবী, রাষ্ট্রের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে তথাকথিত যে সকল বুদ্ধিজীবিরা উস্কানিমূলক কথা বলে পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করায় লিপ্ত রয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি প্রদান।

প্রত্যাহারকৃত সেনা ক্যাম্প পুন: স্থাপনসহ পাহাড়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর প্রতিশ্রুত র‌্যাবের ইউনিট স্থাপন এবং অবিলম্বে বাংলাদেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক (কালো চুক্তি খ্যাত) পার্বত্য চুক্তি বাতিল।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন