থানচিতে পানি বন্দি দেড় শতাধিক পরিবার, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

fec-image

প্রবল ও ভারী বর্ষণ টানা ৭ দিন ব্যাপী অব্যাহত সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতে বান্দরবান-থানচিতে নিম্নাঞ্চলের দেড় শতাধিক পরিবার পানি বন্দি । বান্দরবান থানচি সড়কে কয়েকটি স্থানের পাহাড় ধসে পড়া কয়েকটি সেতু তলিয়ে যাওয়ার কারনে সম্পূর্নভাবে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

উপজেলা হতে কয়েকটি ইউনিয়নের আভ্যন্তরীন সড়কের বেশ কয়েকটি কালভার্ট সেতু পানিতে তালিয়ে যাওয়া সদর সাথে তিন ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে।

এছাড়াও বলিপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ক্যসাউ মারমা এর বাড়ীসহ সাংগু নদীর ভাঙ্গনের কবলের কয়েকটি ঘর ধসে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। প্রবল ও ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলে থানচি বাজার তিনশত দোকান পানির বন্দি হওয়া সম্ভাবনা করছে উপজেলা প্রশাসন। পানির বন্দি দেড় শতাধিক পরিবারকে নিরাপদ স্থানের সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় শিবিরে রাখা হয়েছে ।

উপজেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস এর কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানের আশ্রয় শিবিরে পরিবারের লোকজনদের শুকনো খাবার, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, বিনামূল্যে ঔষধ, দুপুর ও রাতে খাবার খিচুরী ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। অপরদিকে দুর্গত আপ্রুমং পাড়া, রবার্ট পাড়া ও তার আশেপাশে দুর্গত পরিবারকে চাল-ডালসহ শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, থানচি বলিপাড়া আশ্রয় শিবিরের অবস্থান করার পরিবারগুলিকে স্বাস্থ্য পরিক্ষা বিনামূল্যে ঔষধসহ আমাদের টিম সার্বক্ষনিক সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

সরেজমিনের জানা গেছে, সারা দেশের ন্যায় বান্দরবানে থানচিতে টানা ৭ দিনের ভারী বর্ষণে উপজেলা আপ্রংমং পাড়া, রবার্ট পাড়া, টিএন্ডটি পাড়া, সাংগু সেতু নিচের পাড়া, হিন্দু টাড়া, মুসলিম পাড়া, বাগান পাড়া, হাইলমারা পাড়াসহ কয়েকটি পাড়া দেড় শতাধিক পরিবারের ঘড়বাড়ী পানির নিচে বন্দি দেখা গিয়েছে।

বলিপাড়া বাসিনাদা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ক্যসাউ মারমা ৬২ বলেন, সাংগু নদীর ভাঙ্গনের কবলে আমার ঘরসহ আমাদের পাড়া ৬ টি ঘরবাড়ী ভাঙ্গনের কবলেন পড়তে পারে আমরা ভয়ে আত্বীয়স্বজনদের বাড়ীতে আপাতত আশ্রয় নিয়েছি।

থানচি সদর ইউনিয়নের থানচি হেডম্যান পাড়া মগকসে ঝিড়ির পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়া প্রায় ৩০ টি ঘরবাড়ী উপর পানির তলে দুইদিন স্থায়ী অবস্থান ছিল। পাহাড়ে ঘর গুলি মাচাং ঘর হওয়া তেমন কোন ক্ষতিগ্রস্ত হয় নি বলে জানান লাইনম্যান মংসিংনু মারমা।

উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাটনা অধিদপ্তর পিআইও মোহাম্মদ সূজন মিঞা বলেন, উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাথে গত দুইদিন ধরে দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করছি কোন কোন এলাকার নৌকায় যাতায়াত করতে হয়েছে। তবে পাহাড়ী ঢলে ক্ষয়ক্ষতি পরিমান কম দেখা গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মুহা. আবুল মনসুর বলেন, সদর ও বলিপাড়া দুই ইউনিয়নেন মোট ৫ টি কালভার্ট পানিতে তলিয়ে গেছে। যে কোন দুর্যোগে প্রশাসনিক ভাবে সেবা দেয়ার জন্য কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।

তিনি জানান, জরুরি প্রয়োজনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ফায়ার সার্ভিস, যুব রেড ক্রিসেন্ট ও থানা পুলিশ প্রস্তুত ও সেবা দিয়ে যাচ্ছে। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারী ও নিম্নাঞ্চল এ বসবাসকারী মোট ১২৫ টি পরিবারকে আশ্রয় শিবিরের রেখে দিয়েছি। আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসতে মাইকিং অব্যাহত রাখছি । আশ্রয় শিবিরের লোকজনকে শুকনো খাবারসহ খিচুরী পানীয় জল, চিকিৎসা সেবা, ঔষধ সরবরাহ করে আসছি। ছোটখাটো দুই একটি পাহাড় ধসের ঘটনার খবর পাওয়া গেলে ও তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয় নি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: থানচি, পরিবার, পানি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন