নাইজেরিয়ায় সেনাবাহিনীর ড্রোন হামলায় ৮৫ বেসামরিক নিহত

fec-image

নাইজেরিয়ায় সেনাবাহিনীর ড্রোন হামলায় দুর্ঘটনাবশত কমপক্ষে ৮৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিম কাদুনা রাজ্যের একটি গ্রামে রোববার দেশটির সবচেয়ে মারাত্মক সামরিক বোমা হামলার দুর্ঘটনাটি ঘটে। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত জরুরি ব্যবস্থাপনাবিষয়ক সংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রোববার রাতে সেনাবাহিনীর ড্রোন হামলায় বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানির ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এ ঘটনায় প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ টিনুবু তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ টিনুবু তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

তবে সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে, তাদের একটি ড্রোন সশস্ত্র গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে দুর্ঘটনাক্রমে টুডুন বিরি গ্রামে আঘাত করেছিল। সে সময় গ্রামের বাসিন্দারা মুসলিমদের একটি উৎসব উদযাপন করছিল।
সেনাবাহিনী কোনো হতাহতের পরিসংখ্যান দেয়নি। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, হামলায় ৮৫ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে।

অন্যদিকে জাতীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা (নিমা) এক বিবৃতিতে বলেছে, উত্তর-পশ্চিম জোনাল অফিস স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে খবর পেয়েছে, এখনো পর্যন্ত ৮৫ জনের দেহ দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় অনুসন্ধান চলছে। এ ছাড়া আরো ৬৬ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু জরুরি কর্মকর্তারা এখনো গ্রামে পৌঁছতে উত্তেজনা শান্ত করার জন্য সাম্প্রদায়িক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন।

প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘প্রেসিডেন্ট টিনুবু ঘটনাটিকে খুবই দুর্ভাগ্যজনক, বিরক্তিকর ও বেদনাদায়ক হিসেবে বর্ণনা করেছেন, নাইজেরিয়ার মানুষের মর্মান্তিক ক্ষতির জন্য ক্ষোভ ও শোক প্রকাশ করেছেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা ইদ্রিস দাহিরু এএফপিকে বলেন, ‘প্রথম বোমা ফেলার সময় আমি বাড়ির ভেতরেই ছিলাম…ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম এবং তারপর দ্বিতীয় বোমাটি ফেলা হয়।’ তাই অনেক আত্মীয়সহ তার বড় ভাইয়ের পরিবারের সবাই এ হামলায় নিহত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

নাইজেরিয়ার সশস্ত্র বাহিনী প্রায়ই দেশের উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-পূর্বে দস্যু মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে তাদের যুদ্ধে বিমান হামলার ওপর নির্ভর করে। সেখানে জিহাদিরা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে লড়াই করছে।

মিলিশিয়া গ্যাংগুলোর কারণে দীর্ঘকাল ধরে উত্তর-পশ্চিম নাইজেরিয়ার কিছু অংশে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা গভীর জঙ্গলের ঘাঁটি থেকে কাজ করছে এবং মুক্তিপণের জন্য বাসিন্দাদের অপহরণ ও লুটপাট করার জন্য গ্রামে অভিযান চালায়।

এএফপি অনুসারে, নাইজেরিয়ার সামরিক বোমা হামলা অতীতেও ভুলবশত বেসামরিক নাগরিকদের আঘাত করেছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে উত্তর-পূর্বে চাদের হ্রদে কোয়াতার দাবান মাসারায় একটি হামলায় কমপক্ষে ২০ জন জেলে নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিল। সামরিক বাহিনী তাদের জঙ্গি মনে করে হামলা করেছিল। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ক্যামেরুন সীমান্তের কাছে রান শহরে জিহাদি সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যুত ৪০ হাজার মানুষের বাসস্থানে একটি যুদ্ধবিমান আঘাত করলে কমপক্ষে ১১২ জন নিহত হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন