নিউজিল্যান্ডকে কাঁদিয়ে ফাইনালে পাকিস্তান

fec-image

আরো একটা বাবর-রিজওয়ান জুটি, আরো একটা জয় পাকিস্তানের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ডকে শুরু থেকেই দারুণভাবে চেপে ধরেছিল পাকিস্তান। ৪৯ রানে হারিয়ে কিউইরা হারিয়ে বসে ৩ উইকেট। সেখান থেকে কেন উইলিয়ামসন দলকে কিছুটা এগিয়ে দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। পাকিস্তান ৪ উইকেটে ১৫২ রানেই আটকে দেয় উইলিয়ামসনের দলকে। ফলে ফাইনালে উঠতে পাকিস্তানের দরকার হয় ১৫৩। অবশেষে ৭ উইকেট হাতে রেখেই এবারের বিশ্বকাপের ফাইনাল নিশ্চিত করে পাকিস্তান।

‘কিছু মুহূর্ত আসে যখন সবকিছু নিস্তব্ধ হয়ে যায়। আবহাওয়ার কথাই ধরুন, ঝড়ের আগে প্রায় সময়ই পরিবেশ খুব শান্ত হয়ে যায়। তাই চোখ রাখুন, আমি মনে করি, তাদের কাছ থেকে খুব বিশেষ কিছু দেখতে চলেছেন।’ — ম্যাচের আগের দিন বাবর-রিজওয়ানের সাম্প্রতিক ফর্ম নিয়ে এমন মন্তব্যই করেছিলেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার ম্যাথু হেইডেন।

হেইডেনের কথা যেন অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেলো। নিজেদের চেনাতে সেমিফাইনালটাই বেছে নিলো। কথায় আছে না ‘বড়রা বড় মঞ্চকে বেছে নেয়, বড় ম্যাচেই জ্বলে উঠে।’ আজকের মঞ্চটাও তাই বাবর-রিজওয়ান নিজেদের করে নিয়েছে। দু’জনের জুটিতে ১১.৪ ওভারেই দলীয় তিন অংক ছুঁয়ে ফেলে পাকিস্তান। ১৩তম ওভারে যতক্ষণে জুটি ভাঙে, ততক্ষণে ৭৬ বলে ১০৫ রান চলে এসেছে স্কোরবোর্ডে।

৪২ বল থেকে ৫৩ করে ফেলা বাবর আজমকে ফেরান ট্রেন্ট বোল্ট। বাবর ট্রেন্ট বোল্টের শিকার হতে পারতেন প্রথম ওভারেই। ডেভন কনওয়ের গ্লাভস থেকে ক্যাচটা না ফসকালে ১ রানেই ফিরতে হতো পাকিস্তানের অধিনায়ককে। তবে ভাগ্য তো সাহসীদেরই সাথী হয়।

১৭তম ওভারের শেষ বলে মোহাম্মদ রিজওয়ান যখন ট্রেন্ট বোল্টের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন, তখন শেষ ৩ ওভারে পাকিস্তানের জন্য প্রয়োজন ২১ রান। মোহাম্মদ রিজওয়ান করেন ৪৩ বলে ৫৭ রান। রিজওয়ান ফিরে গেলে হার খুলতে শুরু করেন মোহাম্মদ হারিস। ১৮তম ওভারে সংগ্রহ করেন ১৩ রান। শেষ ২ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন তখন ৮ রান। তবে ১৯তম ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে হারিসের উইকেট তুলে নেন সান্টনার। আউট হওয়ার আগে ২৬ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলেন হারিস। শেষ ওভার প্রয়োজন ছিলো ২ রান, প্রথম বলেই পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়।

এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ডেরিয়েল মিচেলের ব্যাটে লড়াই করার পুঁজি পায় নিউজিল্যান্ড। মিচেলের হার না মানা ৩৫ বলে ৫৩ রানের ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৫২ রানের সংগ্রহ পেয়েছে তার দল। কেন উইলিয়ামসনের ব্যাটে আসে ৪৬ রান। জয়ের জন্য পাকিস্তানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৫৩ রান।

দলীয় ৪ রানেই প্রথম উইকেট হারায় ব্ল্যাক ক্যাপসরা। ফিন অ্যালেনকে প্রথম ওভারেই নিজের শিকার বানান শাহিন আফ্রিদি। প্রথম উইকেট হারানোর পর দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন ডেভন কনওয়ে ও অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। দুজনের ৩৩ বলে ৩৪ রানের জুটিত পাওয়ার প্লের শেষ বলে। শাদাব খানের দুর্দান্ত থ্রোতে রান আউট হয়ে ফিরেন কনওয়ে। কনওয়ের ব্যাটে আসে ২০ বলে ২১ রান।

এদিন নিউজিল্যান্ডের ভরসা হয়ে উঠতে পারেননি গ্লেন ফিলিপস। স্বরূপে ফেরার আগেই তাকে ফিরেয়েছেন মোহাম্মদ নওয়াজ। তার বলে তাকেই ক্যাচ উপহার দিয়ে মাত্র ৬ রানেই ফিরেছেন টুর্নামেন্টে এখম পর্যন্ত কিউইদের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ফিলিপস ফিরে গেলে ডেরিয়েল মিচেলকে নিয়ে এবার ইনিংস গড়ার কাজে মন দেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।

দুজনের জুটিতেই ১৫তম ওভারে তিন অংকের ঘর ছুঁয়ে ফেলে কিউইরা। ১৭ তম ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদি কেন উইলিয়ামসনকে ফেরালে ভাঙে দু’জনের ৫০ বলে ৬৮ রানের জুটি। ৪২ বল থেকে ৪৬ রান করেন কিউই অধিনায়ক। তবে নিজের মতো খেলতে থাকেন ডেরিয়েল মিচেল। ৩২ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় অর্ধশতক। জিমি নিশামের ব্যাটে আসে ১২ বলে ১৬ রান। ৪ ওভারে ২৪ রানে ২ উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, সেমিফাইনাল
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন