নিজেকে বাঁচাতে আদালতে মিথ্যা মামলা

বাইশারী প্রতিনিধি:

রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের উত্তর বড়বিল গ্রামে নিজেকে বাঁচাতে অসহায় লোকজনের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে।

উক্ত ঘটনায় এলাকায় মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, নিজেরা ঘটনা ঘটিয়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৩০ মার্চ দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের সময় গর্জনিয়া ইউনিয়নের উত্তর বড়বিল গ্রামে মো. হোছনের তামাক ক্ষেতের পার্শ্ববর্তী বাড়ীর ফজল করিমের ছাগল তামাক ক্ষেতে প্রবেশ করে তামাক ক্ষেত নষ্ট করছিল।

তখন ছাগলটি তামাক ক্ষেতের মালিক মো. হোসেনের ছেলেরা আটক করিলে ছাগলের মালিক ফজল করিমসহ তার নিকট আত্মীয়রা ৪/৫জন মিলে তাদের উপর লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে।

পরে আহতদের শৌর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় বাজারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে ঘটনাটি তামাক ক্ষেতের মালিক মো. হোছন স্থানীয় ইউপি মেম্বার নুরুল ইসলামকে জানালে তিনি উভয় পক্ষকে ডেকে শালিসী বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি নিস্পত্তি করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু ছাগলের মালিক ফজল করিম স্থানীয় শালিসী বৈঠককে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে যায়।

ক্ষতিগ্রস্ত তামাক ক্ষেতের মালিক মো. হোছন নিরুপায় হয়ে ১ এপ্রিল গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বরাবর একখানা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের খবর পেয়ে গত ৩ এপ্রিল ফজল করিম তার স্ত্রী নুর আয়েশা বেগমকে দিয়ে কক্সবাজার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একখানা মিথ্যা মামলা দায়ের করেন মোঃ হোছনও তার মাদ্রাসা পড়ুয়া ছেলেসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে।

গতকাল এ প্রতিবেদক সরজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে এলাকার অসংখ্য লোক জানান, মামলার বাদিনীর স্বামী ফজল করিম একাধিক মামলার পলাতক ও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী। সে নিজেদের রক্ষা করতে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অহেতুক নিরহ মো. হোছনও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াহিয়া চৌধুরী, মাওলানা আজিজুল হক, মো. ছিদ্দিক ও আবু তালেবসহ অনেকেই জানান, ফজল করিমের ছাগল প্রায় সময় মোঃ হোছনের তামাক ক্ষেত নষ্ট করে আসছিল। মোঃ হোছন ফজল করিমকে বারবার নিষেধ করলেও তারা কর্ণপাত করত না।

টনার দিনও ছাগলটি তামাক ক্ষেত নষ্ট করার সময় আটক করে রাখায় ফজল করিম ও তার আত্মীয় স্বজন ক্ষিপ্ত হয়ে উল্টো মো. হোছনের ছেলেসহ আত্মীয় স্বজনের উপর লাঠি-সোটা নিয়ে আতর্কিত হামলা চালায়। ঘটনাটি স্থানীয় মেম্বারসহ সমাজপতিরা নিস্পত্তি করতে চাইলেও ফজল করিম মানতে নারাজ।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, মোঃ হোছন ও তার পরিবারের সদস্যদের ফাঁসাতে গত ২ এপ্রিল গভীর রাতে নিজের ঘরে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় ফজল করিম।
পার্শ্ববর্তী বাড়ীর লোকজন জানায়, ঘরের বারান্দায় গাছের শুকনো পাতা মওজুদ করে সেখানে আগুন দিয়ে নিজেরাই শৌর চিৎকার শুরু করলে পার্শ্ববর্তী বাড়ির লোকজন এসে তাৎক্ষনিক আগুন নিভিয়ে দেন। এতে ফজল করিমের ঘরের কোনো ধরনের ক্ষতি হয় নাই এবং তার ঘরে কোন ধরনের লুটপাটও চালানো হয়নি বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

কিন্তু ফজল করিমের স্ত্রী মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে তার বসতঘর লুটপাট এবং সম্পূর্ণ ঘর পুড়ে যায় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং তার ঘরও কোনো ধরনের ক্ষতি হয় নাই। বর্তমানে ঘরটি অক্ষত অবস্থায় আছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, ছাগলে তামাক ক্ষেত নষ্ট করা নিয়ে ঘটনাটির সূত্রপাত হয়। আমি উভয় পক্ষকে নিয়ে ঘটনাটি নিস্পত্তি করতে চাইলেও ফজল করিম শালিসী বৈঠকে উপস্থিত হয়নি।

ঘটনার বিষয়ে ফজল করিম জানান, তার পালিত ছাগল মোঃ হোছনের তামাক ক্ষেত নষ্ট করার বিষয়টি সত্য। কিন্তু তার ছাগলটি তামাক ক্ষেতে আটক করার পর আনতে গেলে মো. হোছনের ছেলেসহ নিকট আত্মীয়রা আমাকে বেশামাল গাল মন্দ করে।

এছাড়া ঘরে আগুন দেওয়ার বিষয়ে ফজল করিম জানান, গভীর রাতে আমরা বাড়ীর ভিতর ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলাম। হঠাৎ দরজার ফাক দিয়ে আগুন দেখতে পাওয়ায় শৌর চিৎকার শুরু করলে পার্শ্ববর্তী বাড়ির লোকজন এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে। এতে তাদের কোন ক্ষতি হয়নি।

এলাকাবাসী ফজল করিমের স্ত্রী এহেন মিথ্যা অভিযোগের বিষয়ে সরজমিনে তদন্ত পূর্বক মিথ্যা অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন