পরকিয়া প্রেমের বলি হলো রামগড়ের ইউসুফ: নিখোঁজের দশদিন পর টয়লেটের টাংকি থেকে হাত-পা বাঁধা গলাকাটা লাশ উদ্ধার

s

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥

নিখোঁজের ১০ দিন পর খাগড়াছড়ি’র রামগড় উপজেলার দক্ষিন গর্জনতলী এলাকা থেকে আবু ইউছুফ (২৫) নামের এক যুবকের কাঁথা মোড়ানো গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে রামগড় থানা পুলিশ। রবিবার দুপুরে টয়লেটের টাংকি থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ৩০শে আগষ্ট থেকে আবু ইউছুফ নিখোঁজ হওয়ার প্রায় দশ দিন পর নিজ বাড়ীর পার্শ্বে টয়লেটের টাংকি থেকে তল্লাশী চালিয়ে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এসময় পুলিশকে খবর দিলে লাশ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি জেলা মর্গে প্রেরণ করা হয়।

থানায় যাওয়ার খবর পেয়ে ঐদিন রাতই ইউছুফের খালাতভাই আব্দুল জলিল প্রকাশ বেচু তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। সোমবার সকালে ইউছুফের মেঝভাইর স্ত্রী ফাতেমা সন্দেহবশত: খোঁজাখুজি করতে গিয়ে বেচুর ঘরের পাশের খোলা পায়খানার গর্তের মধ্যে লাশের সন্ধান পান। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।

নিহত ইউছুফের বড় ভাই হানিফ জানান, বেচুর স্ত্রী শিরিন বেগমের সাথে ইউছুফের পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এনিয়ে বহুবার শালিশ বিচারও হয়। এ সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করতে দুই বছর আগে ইউছুফকে বিয়ে করানো হয়। তার একটি ছেলেও আছে। বিয়ের পরও বেচুর স্ত্রীর সাথে পরকিয়া সম্পর্ক বজায় ছিল। তিনি অভিযোগ করেন, স্ত্রীর সাথে এ পরকিয়া প্রেমের জের ধরেই বেচু ইউছুফকে হত্যা করেছে। এ হত্যাকান্ডের সাথে বেচুর স্ত্রীর আত্মীয়স্বজনদের মধ্যেও কেউ জড়িত আছে। রামগড় সার্কেলের এএসপি মো: শাহজাহান হোসেন জানান, খবর পেয়ে তিনি থানার অফিসার ইনচার্জকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। নিহতের আত্মীয় সজন ও গ্রামের অন্যান্য লোকজনের দেয়া প্রাথমিক তথ্যমতে পরকিয়া প্রেমের কারণেই এ হত্যাকান্ড হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তিনি জানান, লাশ উদ্ধারের অল্প সময়ের পরই নুরনবী (৪৫)নামে একজনকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়। তিনি বেচুর স্ত্রী শিরিন বেগমের খালু। রামগড় সদরের শ্মশানটিলা গ্রামের বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। তিনি জানান, বেচু ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতারের জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আব্দুল জলিল প্রকাশ বেচু ও তার স্ত্রী শিরীন বেগমসহ ৭ জনকে আসামী করে নিহতের মা হাজেরা বেগম বাদি হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

এদিকে ঘটনার পর থেকে খালাতু ভাই আব্দুল জলিল ও তার পরিবার পলাতক রয়েছে। এব্যাপারে রামগড় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জুবায়ের হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এবিষয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে এবং ময়না তদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি জেলা মর্গে প্রেরন করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন