পর্যটক বরণে প্রস্তুত রূপের রাণী রাঙামাটি: সীমান্তবর্তী সাজেক ভ্যালীতেই ভিড় জমবে বেশি

sajekvalleyjpg_2015-07-26_19-24-41

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পবিত্র ঈদ-উল-আযহার ছুটির উৎসবকে ঘিরে  পর্যটকদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত হয়েছে রাঙামাটি জেলার পর্যটন স্পটগুলো। প্রতি বছরই ঈদের লম্বা ছুটিতে অশান্ত মনকে শান্ত করার জন্য জীবনের একটু ক্লান্তি দূর করতে বিনোদনের খোঁজে মানুষ ছুটে আসেন কাপ্তাই হ্রদ পাহাড় ঘেরা মনোরম প্রাকৃতিক লীলাভুমি রাঙামাটিতে। ইতিমধ্যেই ঈদের আগে রাঙামাটি শহরে হোটেল মোটেল বুকিং শেষ হয়ে গেছে। এ বছর হোটেল মোটেলগুলোতে আশানুরূপ বুকিং করেছে পর্যটকরা।

রাঙামাটিতে পর্যটকদের জন্য বিনোদনের রয়েছে ঝুলন্ত ব্রীজ, সুখী নীলগঞ্জ, মিনি চিড়িয়াখানা, রাজবন বিহার, ডিসি বাংলো, পলওয়েল পর্যটন পার্ক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি যাদু ঘর, কাপ্তাই লেক ও সুভলং ঝর্ণা, পেদা টিং টিং, টুকটুক ইকোভিলেজসহ নানা বিনোদন কেন্দ্র। প্রতিবছর ঈদের বন্ধে এসব বিনোদন কেন্দ্রে মানুষের আগমন ঘটে বেশী।

পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িত ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মনে করছেন ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ঢল নামবে রাঙামাটিতে। ঈদকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই হোটেল মোটেলগুলোতে প্রায় সবগুলো রুম বুকিং হয়ে গেছে। ঈদের আগের দিন থেকে প্রায় সপ্তাহ ধরে কর্ম ব্যস্ততায় দিন অতিবাহিত করতে হবে। এরপরও অনেকে হোটেলে রুমের বুকিংয়ের জন্য অনুরোধ করছেন পর্যটকরা। কিন্তু হোটেলের সবগুলো রুম আগেই বুকিং হয়ে যাওয়ায় আমরা আর রুম বুকিং দিতে পারছিনা।

অপরদিকে, পর্যটকদের পাড়ি জমবে নতুন গড়ে ওঠা পর্যটন ক্ষেত্র রাঙামাটি জেলার সীমান্তবর্তী বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্যোগে সাজেকভ্যালিতে গড়ে তোলা হয়েছে বিশ্বমানের পর্যটন অবকাঠামো। ভারতের মিজোরাম রাজ্যের সীমান্ত সংলগ্ন পাহাড়বেষ্টিত বিশাল উঁচুভূমির ওই সাজেকভ্যালির অবস্থান বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে। উপজেলা সদর থেকে যার দূরত্ব প্রায় ৮০ কিলোমিটার। পাহাড়ে পর্যটন শিল্পের এ অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সাজেকে পর্যটকদের অবকাশ যাপনের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্যোগে গড়ে উঠেছে চমৎকার পর্যটন অবকাঠামো রুইলুই রিসোর্ট। ঈদকে সামনে রেখে সেই রিসোর্টও পর্যটক বরণের অপেক্ষায় আছে।

রাঙামাটি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, ঈদের পরদিন থেকে সপ্তাহজুড়ে মোটেল সবগুলো কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। আগামী ১৪-১৮ সেপ্টেম্বর মোটেলের সবগুলো কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। আমরা প্রস্তুত পর্যটকদের স্বাগত জানাতে। ঝুলন্ত সেতুটি মজবুত রাখতে নড়বড়েগুলো পাল্টিয়ে নতুন পাটাতন স্থাপনার কাজ শেষ করেছে। নৌযানগুলো সব ঠিকঠাক করা হয়েছে। এখন সুবলং ঝরণাটি জীবিত। জমজমাট পানি রয়েছে। সতেজ হয়েছে প্রকৃতি। এবার পানিতে পূর্ণ কাপ্তাই লেক। যে কেউ পর্যটন মোটেল থেকে নৌযান নিয়ে কাপ্তাই লেকে নৌ-ভ্রমণসহ সুবলং র্ঝণাটি উপভোগ করে আসতে পারবেন।

রাঙামাটি হোটেল মোটেল মালিক সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক আবু নাসের আহম্মেদ বলেন, রাঙামাটিতে পবিত্র ঈদুল আযহাকে ঘিরে এবার ঈদে আগে রাঙামাটির বেশীর ভাগ হোটেল বুকিং করে ফেলেছে পর্যটকরা। প্রায় সপ্তাহ ধরে অগ্রিম বুকিং রয়েছে। এটা টানা এক মাস চলতে পারে। আর রাঙামাটি ঘুরতে আসা ভ্রমন পিপাসু পর্যকদের জন্য সব রকম সুযোগ সুবিধা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। তবে দেশের পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক থাকে তা হলে ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের আগমন বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

পর্যটন কমপ্লেক্সে নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ জানায়, রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা এসে যেন কোন ধরনের হয়রানির স্বীকার না হতে হয় সে জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রস্তুত রয়েছে। আর কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকেও সব সময় কড়া নজর রাখা হবে বলেও জানিয়ে নিরাপত্তাবাহিনী।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন