পানছড়িতে নিষিদ্ধ গাইড-ব্যাকরণের স্লিপ বিতরণ ও শিক্ষক ম্যানেজ নিয়ে ব্যস্ত অসাধু ব্যবসায়ীরা
পানছড়ি প্রতিনিধি :
সরকার শিক্ষা ব্যবস্থায় সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করে গাইড নিষিদ্ধ করলেও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিম্ন মানের গাইড, বাংলা ব্যাকরণ ও ইংরেজী গ্রামার পাঠ্য করিয়ে এবার বুক লিস্ট বিতরণ ও শিক্ষক ম্যানেজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে এক শেণির অসাধু ব্যাবসায়ী। প্রশাসন ও আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর চোখের সামনে দিয়ে পুরো উপজেলা দাবড়িয়ে শিক্ষকদের লোভনীয় অফার আর গিফট সামগ্রী দিয়ে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের পাঠ্যকৃত নিম্ন মানের বই ক্রয়ে বাধ্য করানো হচ্ছে বলে জানা যায়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে নিম্ন মানের বইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকের অভিমত গোপন চুক্তির নিম্ন মানের গাইড, বাংলা ব্যাকরণ ও ইংরেজী গ্রামার থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা কি শিখবে। আবার অনেকে ক্ষোভের সাথে জানালেন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া কোমলমতি শিশুদেরও গাইড কিনতে ক্লাসে চাপ দেওয়া হচ্ছে। যা শিশুদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে টেনে নিবে বলে মনে করছেন তারা। তাছাড়া বাণিজ্যিকভাবে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীকে লাভবান করতে নিম্ন মানের প্রকাশকদের হাতে মেধাবীদের জিম্মি করা হচ্ছে বলেও অনেকে মত প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিটি বিদ্যালয়ে শ্রেণি ভিত্তিক ব্যাকরণ ও গ্রামার বিনামূল্যে সরবরাহ করছে। যা ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য যথেষ্ট মানসম্পন্ন ও যুগোপযোগী। এর পরও প্রতি বছর গাইডের সাথে ব্যাকরণ ও গ্রামার চুক্তিকৃত লাইব্রেরী থেকে ক্রয় করা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
জানা যায়, ১৯৮৪ সালে এক আইনের মাধ্যমে নোট/গাইড বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়। তাছাড়া ২০০৭ সালে ১০ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রতি জেলায় চিঠিও প্রদান করা হয়। চিঠিতে বাজারে নিম্ন মানের গাইড/নোট বিক্রি করা হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজ পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করার ফলে কতিপয় শিক্ষক ও বিক্রেতাদের সাথে গড়ে উঠেছে দারুণ সখ্যতা। বিক্রেতাদের শলা-পরামর্শে শিক্ষকরা স্লিপ বিতরণ করে আর দু’একদিন পর পর এক ধরণের চাপ প্রয়োগ করে বই ক্রয়ে বাধ্য করায়।
অনেক ছাত্র-ছাত্রীর সাথে গোপনে আলাপকালে জানা যায়, বিতরণকৃত বইয়ের স্লিপের কথা গোপন রাখতে স্যারদের কড়া নির্দেশ।
অনেক অভিভাবক জানালেন, স্কুল থেকে আগে স্থানীয় লাইব্রেরীর নামে টোকেন দেওয়া হতো। কিন্তু যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে টোকেনের পরিবর্তে এখন ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ইশারা ইঙ্গিতে বা ব্লাক বোর্ডের কোনায় চুক্তিকৃত লাইব্রেরীর নাম লিখে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে অনেকেরই প্রশ্ন, এই ধরণের চুক্তিভিত্তিক পাঠ্য বই ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কতটুকু সফলতা বয়ে আনবে? এ ব্যাপারে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সচেতন অভিভাবক মহল।