পানছড়িতে হাট নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা
শাহজাহান কবির সাজু, পানছড়ি:
খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ির বিভিন্ন হাট নিয়ে শুরু হয়েছে নানান তালবাহানা। এরই মাঝে বিগত প্রায় মাস খানেক পানছড়ি সদর, লোগাং ও ভাইবোনছড়া বাজারে চলছে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা। এই নিষেধাজ্ঞা কি কোন ব্যক্তি বিশেষের, নাকি সংগঠন ভিত্তিক, না কোন তান্ত্রিক ইশারা তা আজো হয়ে আছে অদৃশ্য।
সিডিউল মতে, এলাকার যত্র তত্র স্থানে বাজার বসানো নিষিদ্ধ। কারণ সরকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষে বিভিন্ন বাজার বছর শেষে নিলাম দিয়ে থাকে। এই নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা এক বছরের জন্য বাজারে টোল আদায় করে থাকে। কিন্তু ডাক নিয়ে পানছড়ি সদর বাজার, লোগাং বাজার ও ভাইবোনছড়া বাজারের ডাক দাতারা ফেলছে চোখের পানি। লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে বাজার নিলাম নিয়ে আজ তারা লোকসানের সম্মুখীন।
এদিকে কৃষক কূলও পড়েছে বিপাকে। তারা বাজারে আসতে না পারার কারণে কাঁচা তরি-তরকারি সহ বিভিন্ন ফলফলাদি সস্তায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। তাই তারাও নীরব ক্ষোভ ঝাড়ছে।
উপজেলার বিভিন্ন বাজারগুলোতে কেন অঘোষিত বর্জন চলছে সে বিষয়ে কেউ মূখ খুলছে না। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকে জানান, সম্প্রতি দূর্গা পূজা চলাকালীন সময়ে উপজেলার কুড়াদিয়াছড়া এলাকায় পুলিশ সদস্য নায়েক লক্ষী কুমার চাকমার হারিয়ে যাওয়া সাব মেশিন গান (এসএমজি)টি উদ্ধারের পরপরই শুরু হয় এসব নাটকীয়তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, অস্ত্র উদ্ধারের পর বাজার অঘোষিত বর্জনের ডাক দিয়ে কৃষককূলের সর্বনাশ ডাকা হয়েছে। অনেকেই জমির ফলন বিক্রি করে ছেলে-মেয়েদের ফরম ফিলাপের টাকা যোগাড় করার কথা থাকলেও যত্রতত্র স্থানে ফসল বিক্রি করে নায্যমূল্য তারা পাচ্ছেন না। প্রয়োজনের টাকা যোগাড় নিয়ে তারা পড়ছেন বিপাকে। তাই ক্ষোভে ফুঁসছেন ভুক্তভোগীরা।
বাজারের নিয়ে নানান নাটকীয়তা সম্পর্কে জানতে চাইলে, পানছড়ি বাজার উন্নয়ন কমিটির সভাপতি হেদায়েত আলী তালুকদার, লোগাং বাজার উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: আবু তাহের ও বাজার উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদারা প্রায় একই মত পোষণ করেন। তারা জানান, বিশালাকার বাজারগুলো বিগত কয়েকদিনে মরুভুমিতে পরিণত। দোকানীরা কাটাচ্ছে অলস সময়, বাজারের ডাক দাতারা গুনছেন লোকসান আর কৃষক হারাচ্ছে নায্য মূল্য আর নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন দ্রব্যাদি। সব মিলিয়ে একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতি। এসব পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলে তারা মনে করেন।