পাহাড়ে আঞ্চলিক সংগঠনের সশস্ত্র সন্ত্রাসে অতিষ্ঠ মানুষ: অসহায় পুলিশ, র‌্যাব ক্যাম্প স্থাপনের দাবি

%e0%a6%85%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0

মমিনুল ইসলাম, পার্বত্যাঞ্চল থেকে ফিরে:

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ এক দশমাংশ ভূখণ্ড নিয়ে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম (রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি)। যেখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের পাশাপাশি রয়েছে অপার সম্ভাবনা। ১৯৯৭ সালের শান্তি চুক্তি পরবর্তী সময়ে হয়েছে ব্যাপক উন্নয়ন। কিন্তু আজ তা মলিন করে দিচ্ছে এ অঞ্চলের আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলগুলো।

মূলত পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি আঞ্চলিক দলকে ঘিরে খুন, গুম, অপহরণ, ধর্ষণ ও বেপরোয়া চাঁদাবাজিসহ নানা নৃশংস অপরাধের যতসব অভিযোগ, যা আজ নতুন কিছু নয়। এ দলগুলো হলো- শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষরকারী জনসংহতি সমিতি (জেএসএস-সন্তু লারমা), জেএসএস সংস্কার এবং শান্তি চুক্তি বিরোধী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।

পাহাড়ের সূর্যাস্ত যেন সেখানকার সাধারণ উপজাতীয় ও বাঙালিদের মাঝে বয়ে আনে এক আজানা আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা। সূর্যোদয়ের জন্য অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হয় না। রাতের আঁধারে দূর্গম পাহাড়ে গুম, খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, চাঁদাবাজি নিত্যদিনের ঘটনা। এমনকি প্রকাশ্য দিবালোকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভারী অস্ত্র নিয়ে চলাচল করে সন্ত্রাসীরা।

সরেজমিনে জানা যায়, দেশের বাকি ৬১ জেলার সাধারণ মানুষের মতো পাহাড়ে বসবাসকারী বাঙালি ও নিরীহ পাহাড়িরা স্বাভাবিকভাবে ঘুমাতে পারেন না। সারাক্ষণই আতঙ্কে থাকেন- এই বুঝি সন্ত্রাসীরা তাকে তুলে নিয়ে যায়, দাবি করে মুক্তিপণ। মেয়েরা শঙ্কায় থাকে- কখন শিকার হবেন ধর্ষণের, কেউ জানে না কাকে কখন কুপিয়ে-গুলি করে হত্যা করা হবে।

সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী এই এলাকায় চাকরি করেন, তারা দিন গুণতে থাকেন শুধু কবে এ এলাকা থেকে অন্যত্র বদলি হবেন।

এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা যায়, চোখের সামনে নিজের নিকট আত্মীয়রা সন্ত্রাসীদের হাতে গুম, খুন, ধর্ষণসহ নানা নৃশংসতার শিকার হলেও পরিবারের বাকি সদস্যদের উপায় নেই মুখ খোলার। থানায় অভিযোগ করলেই নিজেকেও একই পরিণতির শিকার হতে হয়। আবার কেউবা যদি থানায় অভিযোগ করার সাহস দেখাচ্ছেন, তাদের মামলাও নিতে চায় না পুলিশ। এমন অসংখ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে।

অনেক চাপে পড়ে পুলিশ কখনও মামলা নিলেও, অভিযোগকারীদের পড়তে হয় কঠিন নিরাপত্তাহীনতায়। মামলা তুলে নিতে হুমকি অব্যাহত রাখে সন্ত্রাসীরা। এমন অনেক ভুক্তভোগীকে পাওয়া গেছে যারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করে সপরিবারে বাড়ি ছাড়া হয়ে আত্মগোপনে থাকছেন। তাদের অভিযোগ, পুলিশকে বলেও কোনো লাভ নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাও নিজেদের অসহায়ত্ব ও প্রাণনাশের আশঙ্কার কথা জানান।

এ অরাজক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসনকে শক্তিশালী করা, প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে র্যা ব ক্যাম্প স্থাপনের জোরালো দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

পাহাড়ের এসব আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনের কাছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। সাধারণত উপজাতিদের মধ্য থেকে যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়েছেন, শিকারের জন্য তাদেরকেই বেছে নিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। কথা না শুনলেই অপহরণ, গুম-খুনের ভয়। ক্ষমতাসীন হয়ে চাঁদা আদায় তো দূরের কথা চাঁদা দিয়েও টিকতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন একাধিক নেতাকর্মী।

সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর একদিকে সাধারণ মানুষের ওপর তাণ্ডব, আরেকদিকে নিজেদের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে লড়াইয়ের সশস্ত্র প্রতিযোগিতা অস্থিতিশীল করছে বাঙালি ও ১৩টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পাহাড়কে। প্রায়ই এসব সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে এমন সব বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়, যা পুলিশের কাছেই নেই।

তবে পাহাড়ে যেসব অঞ্চলে সেনাক্যাম্প রয়েছে, সেখানকার মানুষ অনেক নিরাপদে রয়েছেন। সেনাবাহিনীর সহায়তায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা থেকে শুরু করে সব ধরনের মৌলিক সহায়তা পাচ্ছেন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী। সেনাবাহিনীর উপস্থিতি ছাড়া পাহাড়ে এক মুহূর্তও টিকে থাকার কথা ভাবতে পারছেন না তারা।

পাহাড়ে আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসে অতিষ্ঠ মানুষনানা কারণে নিজেদের সীমাবদ্ধতা ও অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের ওপর আস্থা না থাকার প্রমাণও মিলেছে কয়েকটি থানায়। যেখানে অহরহ অপরাধ হলেও বছরে মামলা হয়েছে মাত্র ৬টি। জায়গা বিশেষ পুলিশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সমঝোতা করে চলার অভিযোগও পাওয়া গেছে।

শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায় পুলিশের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। পাশাপাশি লোকবল ও যাতায়াত ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্টের অভাব রয়েছে। যার কারণে প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে জরুরি ডাকে সাড়া দেয়া সম্ভব হয় না।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র অবস্থায় অবস্থান করছে। অবৈধ অস্ত্রের ভাণ্ডার গড়ে তুলেছে সন্ত্রাসীরা। সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে আসছে অত্যাধুনিক সব অস্ত্র। অভিযানে প্রায়ই ধরা পড়ছে এসব অস্ত্র। নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে নেই এমন অত্যাধুনিক মডেলের অস্ত্রও পাওয়া যাচ্ছে সন্ত্রাসীদের কাছে। সন্ত্রাসী দলগুলো বছরে কয়েকশ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করে, যা দিয়ে ক্রয় করে উচ্চমূল্যের এসব অত্যাধুনিক অস্ত্র। তাদের হাত এতটাই শক্তিশালী যে জামিন অযোগ্য মামলায় ধরা পড়লেও নিমিষেই জামিন নিয়ে পুনরায় সন্ত্রাস শুরু করছে।

গত ১৪ ডিসেম্বর জেএসএস (সংস্কার) এর দুই কর্মীকে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা। তারা হলেন রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার উত্তর হাগলা ছড়ার নয়ন চাকমা (২৬) ও যুদ্ধ চন্দ্র চাকমা (২৯)। নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আপনজন হারিয়েও বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছেন স্বজনরা।

অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট মুকুল কান্তি চাকমার পরিণতি কী হয়েছে, তা জানা নেই কারো। গত ৩০ মে রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে জেএসএস কর্মীরা তাকে ডেকে নেয়ার পর আজও তার খোঁজ মেলেনি। এ ঘটনায় অনেক কাটখড়ি পুড়িয়ে ১ মাস ৪ দিন পর পুলিশ মামলা নিলেও অব্যাহতভাবে ফোনে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে ভুক্তভোগীর পরিবারকে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মামলা তুলে নিতে বাদি মেয়ে নমীসা চাকমাকে একাধিকবার ফোনে হুমকি দেয়া হয়েছে। হুমকির মুখে পরিবারটি এখন আত্মগোপনে আছে। এতে করে ভুক্তভোগীর দুই মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম। অন্যদিকে, আইনি জটিলতায় রেশন না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছে পরিবারটি। এ মামলায় জামিন নিতে আসলে প্রধান আসামি বাঘাইছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেএসএসের উপজেলা সভাপতি বড় ঋষি চাকমাসহ চার জেএসএস নেতাকে জেল হাজতে পাঠায় আদালত। পরে জামিনে ছাড়া পায় বড় ঋষি চাকমাসহ দুইজন।

গত ২৯ নভেম্বর খাগড়াছড়িতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপির জনসভায় যোগ দেয়ায় জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা নিলবর্ণ চাকমাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে ১০-১২ জন উপজাতীয় সন্ত্রাসী। নিখোঁজ হওয়ার ৩ দিন পর খোঁজ মেলে। ক্ষমতাসীন দলের নেতা হয়েও এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেযার মতো সাহসও পাননি তিনি।

এর আগে সন্ত্রাসীদের নিষেধের পরও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করায় বান্দরবানের আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক ইউপি সদস্য বাবু মংপু মারমাকে গত ১৩ জুন অপহরণ করা হয়। কয়েক মাস পর তাকে ছেড়ে দেয়া হলেও শর্ত দেয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার। এর আগেও জেএসএসের সন্ত্রাসীরা তাকে তিন বার অপহরণ করে বলে জানা যায়।

১০ ডিসেম্বর রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচরের ৩নং বুড়িঘাট মধ্যমপুলি পাড়ায় বাঙালিদের ২ একর আনারস বাগান কেটে ধ্বংস করেছে উজাতীয় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৫ উপজাতিকে আটক করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ক্ষতিগ্রস্ত আনারস বাগান মালিক মো. জামাল সিকদার ও মধু মিয়া জানিয়েছেন, তাদের সাড়ে তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এভাবে গত দুই বছরে বাঙালিদের আনারস, কলা, লিচু, পেঁপে, রাবার, লেবুসহ বিভিন্ন ধরনের গাছের বাগান ধ্বংসের ৮টি ঘটনা ঘটেছে।

শুধু এখানেই থেমে থাকেনি সন্ত্রাসীরা। একই সময়ের মধ্যে মধু মিয়ার পুত্রবধূ আয়েশা সিদ্দিকাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় সন্দেহভাজন ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা। গলায় শিকল পরিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় তাকে আটকে রাখা হয়। চাপে পড়ে একদিন পরে ছেড়ে দেয়া হয়। তার অপরাধ সে কেন ইসলাম গ্রহণ করেছে এবং বাঙালি ছেলেকে বিয়ে করেছে। পারিবারিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

একইভাবে গত জুলা্ইয়ে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার লালছড়ি গ্রাম থেকে বিবি মরিয়ম (২০) নামের এক ধর্মান্তরিত নববধূকে ঘর থেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা।

উপজাতি সন্ত্রাসীরা গত ১৭ নভেম্বর খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলায় কুমারী গ্রামে (ডেবাতলী) গভীর রাতে বাঙালি গৃহবধূ আমেনা বেগমকে ঘরে একা পেয়ে জোরপূর্বক অস্ত্র ঠেকিয়ে অপহরণ ও পালাক্রমে গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে পাহাড়ে অবরোধ কর্মসূচিও পালিত হয়েছে।

গত ২০ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন আমেরিকান প্রবাসী আবু মো. হোসেন আলী (৬০)। তিনি মানিকছড়ির ভোলাইয়া পাড়া গ্রামে প্রাইভেট কারে করে নিজ বাগান দেখতে গিয়ে ছোট বোন শিউলি ও গাড়ির চালক এরশাদসহ এই হামলার শিকার হন।

খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির এক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পাহাড়ে আঞ্চলিক দলগুলোর বেপরোয়া চাঁদাবাজি চলছে। গাড়ি প্রতি চাঁদা দিতে হয়। পুলিশকে বলেও কোনো লাভ হয় না। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সন্ত্রাসীরা প্রায়ই গাড়ি ভাঙচুর করছে। উপজাতিদেরও এ চাঁদা দিতে হয়। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনীর পাশাপশি র‌্যাব ক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুল মজিদ বলেন, পাবর্ত্য এলাকা দুর্গম এবং সন্ত্রাসীরা এসব এলাকায় সশস্ত্র অবস্থায় থাকে। মাঝে মাঝে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয় এবং ধরাও পড়ে। ইউপিডিএফ এর শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের ধরেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ইউপিডিএফের শীর্ষ নেতা মিঠুন চাকমার বিরুদ্ধে অস্ত্র, চাঁদাবাজি, অপহরণ ও হত্যার ১০-১২টি মামলার ওয়ারেন্ট ও বিপুল চাকমার বিরুদ্ধে ১৫টি মামলার ওয়ারেন্ট ছিল।

সন্ত্রাসীরা অস্ত্র কোথা থেকে পায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে তাদের কাছে অত্যাধুনিক অস্ত্র আসছে।

রাঙামাটি জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) সাঈদ তরিকুল হাসান বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে এবং সন্ত্রাসীদের ধরতে প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে দুর্গম এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয়ে। যোগাযোগ ব্যবস্থার বিকাশ ও উন্নত প্রযুক্তির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট থাকলে সমস্যার কিছুটা সমাধান হবে বলে তিনি মনে করেন।

পার্বত্য জেলার সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি ফিরোজা বেগম চিনু বলেন, পার্বত্য অঞ্চল থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার না করলে জনজীবন স্বাভাবিক হবে না এবং জনগণ তার ভোটাধিকারও পাবে না। এমন কোনো ভারী অস্ত্র নেই যা তাদের না আছে।

চিরুনী অভিযানের মাধ্যমে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধাদের দাবি জানিয়ে চিনু বলেন, যাদের কাছে অস্ত্র পাওয়া যাবে তাকেই গ্রেফতার করতে হবে। এসব সন্ত্রাসী একমাত্র সেনাবাহিনীকে ভয় পায় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সাবেক পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দীপংকর তালুকদার বলেন, জেএসএস-ইউপিডিএফ মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। পাহাড়ে মূল সমস্যা অবৈধ অস্ত্র। এসব অস্ত্র উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না। পাহাড়ে প্রয়োজনে র্যা বও দেয়া যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে, কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে জেএসএস। দলটির সহ-প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমা ফোনে বলেন, জেএসএসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে এখানে মূল সমস্যা হচ্ছে পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন না করা। ভূমি সমস্যার সমাধানসহ চুক্তি বাস্তবায়ন না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ইউপিডিএফের প্রচার ও প্রকাশনা শাখার প্রধান নিরন চাকমাকে ফোন করলেও পাওয়া যায়নি।

– সূত্র: যমুনা নিউজ

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন