পেকুয়ায় পরীক্ষামূলকভাবে পল্লী বিদ্যুৎ সাবস্টেশনের উদ্বোধন

pic pekua 23-05-2015
এম.জুবাইদ, পেকুয়া:    
পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের হরিণাফাড়ি এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে পল্লী বিদ্যুতের সাবস্টেশনের উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার পেকুয়া পল্লী বিদ্যুত অফিসের ব্যবস্থাপনায় উক্ত সাবস্টেশন উদ্বোধন করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা পল্লী বিদ্যুতের সহকারী প্রকৌশলী শাহ আলম, চট্রগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব বানটা, কক্সবাজারের জিএম নুরুল হোছাইন, চকরিয়া অফিসের ডিজিএম কারিগরী গোলাম মর্তুজা, ডিজিএম আশরাফ উদ্দিন খান, সহকারী প্রকৌশলী বিবেক কান্তি দেব, চকরিয়া জোনাল অফিসের সহকারী ম্যানেজার মাদক নাগ, পেকুয়া পল্লীবিদ্যুতের ইনচার্জ কফিল উদ্দিন পেকুয়া উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম, উপজেলা যুবলীগের সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

এ সাবস্টেশন উদ্বোধন হওয়ার পর পেকুয়ায় ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহ থাকবে বলে সূত্রে নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৫ মেগাঃ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ সাবস্টেশন উপজেলার ১২হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহকের সেবা পৌঁছিয়ে দেবে। ২০১০ সালের জুলাই-এ প্রস্তাবিত বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে ১.৮মিলিয়ন(১৮লক্ষ) বিদ্যুৎ গ্রাহক সংযোগ প্রকল্পের আওয়তায় গত ৩মাস পূর্ব থেকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের হরিনা ফাঁড়ি এলাকায় প্রস্তাবিত ৩৩শতক জায়গার উপর নব নির্মিত এ স্বাস্টেশনের কাজ শুরু হয়। ৭০লক্ষ টাকা ব্যয়ে উক্ত সাবস্টেশন নির্মাণ করা হয়।

এদিকে উপজেলামুখী মানুষ কম্পিউটার ও ফটোকপিয়ারসহ বিভিন্ন প্রয়োজনের চাহিদা পূরণ ও প্রশাসনিক নানা কাজের সংগ্রহে বিদ্যুতের অভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও যেন নিস্তার পায়না। বিদ্যতের সঙ্কট আর নিয়ন্ত্রণহীন লোডশেডিংয়ের কারণে বিড়ম্ভনার মাত্রা যেন শেষ নেই। এমতাবস্থায় পেকুয়ায় বিদ্যুৎতের একটি সাবস্টেশন নির্মিত হওযায় বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মাঝে আনন্দের উচ্ছ্বাস নেমে এসেছে।

বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার খেলায় প্রশাসনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হওয়ায় ও মানুষের অপ্রত্যাশিত বিদ্যুত বিড়ম্বনার সম্মুখিন হতে হয়েছে প্রতিনিয়ত। এছাড়া এলাকার রাইচ মিল, বরফ কল, স’মিলস্, ফটোকপিয়ার-কম্পিউটারের দোকান, ছবি তোলার স্টুডিও, পেট্টোল পাম্প, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ ও মটর ওয়ার্কসপ, চায়ের দোকানসহ সব কিছুই পর্যাপ্ত বিদ্যুতের অভাবে ব্যবসায়ীদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছিল।

পেকুয়া চৌমহুনী ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম, নুর জাহান ফটোস্ট্যাট ও কম্পিউটার এর সত্তাধিকারী এস.এম ছাদেক, শুভেচ্চা স্টুডিও সত্বাধিকারী এস.এম এরশাদ জানান, লো-ভোল্টেজ  আশাতীতভাবে কমিয়ে আসলে ব্যবসার সুবিধার্থে অনেকটাই ভাল হবে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কক্সবাজার-১ পেকুয়া অফিস ইনচার্জ মোহম্মদ কপিল উদ্দিন জানান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কক্সবাজার-১ এর আওতায় উখিয়া, চকরিয়া, মহেশখালী ও পেকুয়াসহ চারটি সাবস্টেশন। এই চারটি সাবস্টেশনের ৩৫মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদা রয়েছে কিন্তু এসব এলাকার বিদ্যুৎ সাবস্টেশনগুলোতে বরাদ্দ পাচ্ছে ১৫মগাওয়াট।

এদিকে পেকুয়ায় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ করা হয় চকরিয়া সাবস্টেশন থেকে। আর এ স্টেশন থেকে চকরিয়া-পেকুযার মোট ১৪টি ইউনিয়ন সাড়ে ৩মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বরাদ্দ পায়। বর্তমানে পেকুয়া জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় মাত্র দেড় মেগাওয়াট। ওই সাবস্টেশন থেকে যতটুকু বিদ্যুৎ দেওয়া হয় ততটুকু পেকুয়ার চাহিদা অনুসারে অনেকটাই কম।

পেকুয়ার ৭ ইউনিয়নের  ৪ লেইন-এ বিভক্ত করে এ সাবস্টেশন থেকে বিদ্যুৎ বরাদ্দ দেওয়া হবে। এর আওতায় পোকুয়া সদরের প্রশাসন ও তার আশ-পাশ এলাকাগুলোকে ভিআইপি লাইনের অন্তর্ভুক্ত করা কবে। তবে শুরুতে একটি লেইনের মাধ্যমে উপজেলার বিদ্যুৎ প্রাহকরা উপকোর ভোগ করবে। আগামী দু’মাসের মধ্যে অবশিষ্ট তিনটি লেইন চালু করা হবে।

যদিও পেকুয়ায়  ২.৮০ অথবা ৩মেগাওয়াট(প্রায়) বিদ্যুৎ প্রয়োজন হলেও ১২হাজারের অধিক গ্রাহকের ক্ষেত্রে তা নূন্যতম। এতে বৈদ্যুতিক লোডশেডিং কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

এ ব্যাপরে চকরিয়া জোনাল অফিসের সহকারী ম্যানেজার মাদ্ব নাগ এই প্রতিবেদকে জানান, বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে অনেকটাই বেশী। যার ফলে লোডশেডিংয়ে হিমশিমের সম্মুখিন হতে হয় কতৃপক্ষকে। এজন্যে অনেক সময় লোহাগাড়া পিডিভি(পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট ভোল্ট) থেকে বিদ্যুৎ সংগ্রহ করে চকরিয়ার সাবস্টেশনে সংযোগ দেওয়া হয়।

আঞ্চলিক মহা সড়কের সংযোগ চকরিয়া-বদরখালী সড়কের লাল ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে ৩৩কেবি’র ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ১০কি:মি: বৈদ্যুতিক তার ও খুঁটি স্থাপন করে পেকুয়ায় বিদ্যুৎ আনা হচ্ছে। ঘন ঘন লোডসেডিং কমিয়ে আনতে পল্লী বিদ্যৎ সমিতি কক্সবাজার-১ এর মেইন স্টেশন থেকে ৩৩কেবি’র ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি সরাসরি বিদ্যুৎ লাইন পেকুয়া সাবস্টেশনের সাথে যোগ করতে হবে। আর ওই স্টেশন থেকে গ্রিডের মাধ্যমে বিদ্যুৎ দেওয়া হলে লোডসেডিং আর ভোল্টেজ সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন