ফাইনালে আছে অন্য লড়াইও

fec-image

ঠিক যেন ২০২২ বিপিএলের ফাইনালের প্রতিচ্ছবি। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসর বিপিএলের ফাইনালে ফরচুন বরিশাল এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সেবার অবশ্য নাটকীয় এক ফাইনাল জিতেছিল কুমিল্লা। একেবারে শেষ বলে গিয়ে স্বপ্ন ভেঙেছিল বরিশালের। কুমিল্লার জার্সিতে সেবার উঠেছিল তৃতীয় তারকা। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে দলের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানালেন, আজই ৫ম তারকা জার্সিতে ওঠাতে চান তিনি।

বিপিএলে এখন পর্যন্ত চারবার ফাইনালে উঠে কখনোই হারেনি গোমতী পাড়ের দলটি। আর বরিশাল বিভাগে কখনো যায়নি বিপিএলের ট্রফি। বিপিএলের প্রথম আসরেও ফাইনাল খেলেছিল বরিশাল। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের আক্ষেপ তাই সবচেয়ে বেশি পুরাতন। আর ফরচুন বরিশাল ফ্র্যাঞ্চাইজের জন্য লড়াইটা প্রতিশোধের। আর কুমিল্লার মিশন নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বাড়িয়ে নেওয়ার।

তবে এই ফাইনালের মঞ্চেও আছে অন্যরকম এক লড়াই। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ব্যাটারদের খেলা। বিপিএলের ফাইনালের দিনে এসেও সেরা ব্যাটার কে সে লড়াইয়ের নিষ্পত্তি হয়নি। সেরার দৌড়ে অন্তত চারজন আছেন যারা উঠে আসতে পারেন শীর্ষস্থানে। সম্ভাবনার অঙ্গে এদের মাঝে সবার চেয়ে এগিয়ে বরিশালের তামিম ইকবাল এবং কুমিল্লার তাওহিদ হৃদয়।

নিশ্চিতভাবেই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে আলোচিত দুজন ব্যাটার। দুই ক্রিকেটারঅ ফাইনালে নিজেদের রানসংখ্যা বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগও পাচ্ছেন। আপাতত দুজনের পার্থক্যটা মাত্র ৬ রানের। খেল দেখাতে পারেন লিটন কুমার দাস কিংবা মুশফিকুর রহিম। শীর্ষ পাঁচে যারা আছেন, তাদের মাঝে একমাত্র তানজিদ হাসান তামিমই (৩য় স্থান) ফাইনাল খেলছেন না।

এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এখন পর্যন্ত তামিম ইকবাল। ১৪ ইনিংসে করেছেন ৪৫৩ রান। এক ইনিংস কম খেলে হৃদয়ের সংগ্রহ ৪৪৭ রান। তবে ধারাবাহিকতা এবং ব্যাটিং নৈপুণ্যের দিক থেকে এগিয়ে থাকবেন হৃদয়ই। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে ১৩ ইনিংসে হৃদয়ের রান ৪৪৭, গড় ৪০.৬৩, স্ট্রাইক রেট ১৪৯.৪৯।

হৃদয় চলতি বিপিএলে যা করেছেন, তা এর আগে কোনো বাংলাদেশীই করতে পারেননি। বিপিএলের ইতিহাসে ১৪০-এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ৪০০-এর বেশি রান করা একমাত্র বাংলাদেশি হৃদয়। এর আগে কেবল বিদেশীরাই ছিলেন এই তালিকায়। হৃদয় এবারের টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ২৪টি ছক্কা মেরেছেন। এক আসরে যা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ।

তামিম যে ফুরিয়ে যাননি সেটা প্রমাণ করেছেন এবারের বিপিএলে। বড় ইনিংস নিয়মিত না এলেও দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে খেলেছেন ৭১ রানের চমৎকার এক ইনিংস। টুর্নামেন্টে এরপর আরও দুটি ফিফটি পেয়েছেন। এলিমিনেটরে চট্টগ্রামের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৪৩ বলে ৫২ রানের অপরাজিত ইনিংস। ৪৫৩ রান করা তামিম ছন্দে আছেন, বরিশালের জন্য এটা বাড়তি প্রেরণা।

চারে থাকা লিটন ১৩ ইনিংসে রান করেছেন ৩৭৫। গড় ২৮.৮৪, স্ট্রাইক রেট ১৩০.৬৬। ভিক্টোরিয়ানস অধিনায়ক প্রথম ৫ ম্যাচে করেছিলেন মাত্র ৩৭ রান। স্ট্রাইকরেটও ছিল মোটে ৭৫। তবে পরের ৮ ইনিংসে লিটন নিজেকে ফিরে পেয়েছেন। ফিফটি আছে ৩টি, যার মধ্যে দুটিতেই ৮০ রানের বেশি করেছেন। সর্বশেষ ম্যাচে করেছেন ৮৩ রান। তাই আরেকটি বড় ইনিংস খেললে লিটনের সামনে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের সুযোগ থাকছে।

মুশফিক ৩৬৭ রান নিয়ে পঞ্চম। মিডল অর্ডারে বড় স্কোর করতে পারলে সেরার তালিকায় থাকতে পারে তার নামটাও।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বিপিএল
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন