ফিরে দেখা ৬০ ঘন্টা হরতাল : খাগড়াছড়ির পাহাড়ী জনপদ ছিল স্থবির: হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ মামলা আটক ২৬

Misli

মুজিবুর রহমান ভুইয়া :

বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, হামলা-ভাঙচুরের মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়িতে পালিত হয়েছে প্রধান বিরোধী দল-বিএনপির নেতৃত্বধীন ১৮ দলীয় জোটের নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে ডাকা টানা ৬০ ঘন্টার হরতাল। হরতালকে ঘিরে জেলার মানিকছড়ি ও মহালছড়ি ছিল বেশ উত্তপ্ত।  টানা ৬০ ঘন্টার হরতালকে ঘিরে পুরো খাগড়াছড়ি জেলার প্রতিটি জনপদ ছিল বিএনপির নেতা-কর্মীদের দখলে। টানা ৬০ ঘন্টার হরতালের খাগড়াছড়ি থেকে ছেড়ে যায়নি দুর পাল্লার কোন যানবাহন। এমনকি চলেনি আভ্যন্তরীণ সড়কের কোন হালকা যানবাহনও। স্কুল-কলেজ গুলোতে ছিল অঘোষিত ছুটি। অফিস আদালত ও ব্যাংক গুলো খোলা থাকলেও তেমন উপস্থিতি ছিলনা বললেই চলে। সর্বোপরি হরতাল চলাকালে স্থবির হয়ে পড়েছিল পাহাড়ী জনপদ খাগড়াছড়ি।

প্রথম দুই দিনে খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলায় ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। মানিকছড়িতে দুই পক্ষের সংঘর্ষের জের ধরে সেখানে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। অন্যদিকে মাটিরাঙ্গায় হরতাল বিরোধীদের সাথে হরতাল সমর্থকদের সংঘর্ষে আওয়ামীলীগের ৪ কর্মী ও সমর্থক আহত হয়েছে।
    
হরতালকে ঘিরে খাগড়াছড়ি জেলা শহরে যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। শহরজুড়ে ছিল পুলিশ ও বিজিবির কড়া নজরদারী। তবে অতীতের ন্যায় মারমুখী দেখা যায়নি পুলিশ সদস্যদের। ব্যাপক পুলিশ-বিজিবি‘র উপস্থিতিতেই পিকেটিং করে হরতাল সমর্থক বিএনপির নেতাকর্মীরা। তৃনমুল নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সার্বক্ষনিক মাঠে ছিলেন জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা। মিছিল-পিকেটিংয়ে অংশ নিয়ে তৃনমুল কর্মীদের উজ্জীবিত রাখার চেষ্টা করেছেনএসব নেতৃবৃন্দ।

খাগড়াছড়িতে নিকট অতীতে এতোবেশী শীর্ষ নেতার রাজনৈতিক কর্মসুচীতে মাঠে থাকার নজির এটাই প্রথম বলে মনে করছে বিএনপির তৃণমুল নেতাকর্মীরা।

মহালছড়ি
৬০ ঘন্টার হরতালের প্রথম দিনে মহালছড়িতে হরতাল সমর্থক বিএনপি ও হরতাল বিরোধী আওয়ামীলীগের মধ্যে ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে মহালছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক রতন কুমার শীল সহ উভয় পক্ষের ৯ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পিকেটিং করার সময় এক ছাত্রলীগ কর্মীর সাথে কথা কাটাকাটির জের ধরে হরতাল সমর্থকদের উপর হামলা করে হরতাল বিরোধীরা। এক পর্যায়ে হরতাল সমর্থকরা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের সামনে আসলে তাদের হামলা করে হরতাল বিরোধীরা। এতে করে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।

এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ও রাবার বুলেট ছোঁড়ে। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রতন কুমার শীল সহ ৭ জন ও বিএনপি’র দুই কর্মী আহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে একটি স্টুডিওসহ বিএনপি ও ছাত্রদল নেতার মালিকানাধীন কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ব্যাপক ভাঙচুর করে বিএনপি ও আওয়ামীলীগ সমর্থকরা। এসময় বিক্ষুদ্ধ হরতাল সমর্থকরা উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙ্চুর চালায়।

সংঘর্ষের ঘটনায় আহতরা হলেন মহালছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রতন কুমার শীল, সহ-সভাপতি মন্টু মিয়া, যুগ্ম-সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি দীপক ধর, সহ-সভাপতি আবুল কালাম, সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম মাসুদ, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আযাদ, জেলা যুবদল নেতা মুন্না ও ছাত্রদল নেতা ইকবাল হোসেন প্রমুখ।

এদিকে হরতালের প্রথমদিনে মহালছড়িতে হরতাল সমর্থক বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগ অফিসে হামলা ও নেতাকর্মীদের আহত করার ঘটনায় প্রায় আড়াই‘শ বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামী কওে মহালছড়ি থানায় মামলা দায়ের করেছে মহালছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রতন কুমার শীল। এ মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত বিএনপি ও ছাত্রদলের ৫ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে গ্রেফতার এড়াতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অনেকেই আত্মগোপনে রয়েছে বলে জানা গেছে। মহালছড়ি উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো: শহিদুল ইসলাম বকুল অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ যাকে যেখানে পাচ্ছে গণহাওে গ্রেফতার করছে।

অপরদিকে মহালছড়ি উপজেলা ও চৌংড়াছড়ি অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপি প্রায় দুই শতাধিক আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীকে আসামী করে মামলা দিলেও পুলিশ মামলা গ্রহন করেনি বলে অভিযোগ করেছেন মহালছড়ি উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন বাবু। বিএনপির এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মহালছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ সেমায়ুন কবীর চৌধুরী। এদিকে মহালছড়িতে এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যেকোন ধরনের সহিংসতা এড়াতে পুলিশের পাশাপাশি মহালছড়িতে এখনো বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।

মানিকছড়ি
অন্যদিকে হরতালের প্রথম দিন হরতাল সমর্থরা পিকেটিংয়ের সময় কয়েকটি কয়েকটি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করলে হরতাল সমর্থক ও হরতাল বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে করে উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। সেখানে দুই মামলায় আসামী করা হয়েছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের প্রায় চার‘শ নেতাকর্মীকে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত বিএনপি-যুবদল ও ছাত্রদলের ২১ নেতাকর্মীকে আটক করেছে মানিকছড়ি থানা পুলিশ।

সম্ভাব্য গ্রেফতার এড়াতে বিএনপি নেতাকর্মীরা এলাকাছাড়া। এবিষয়ে মানিকছড়ি উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মো: এনামুল হক‘র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সরকারী দলের নেতাকর্মীরা একদিকে আমাদের শান্তিপূর্ণ ভাবে হরতাল কর্মসুচী পালনে বাধা দিচ্ছে অন্যদিকে চোরগোপ্তা হামলা করছে অন্যদিকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের হয়রানী করছে। তিনি বলেন, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার এড়াতে আমাদের কর্মীরা প্রকাশ্যে আসতে না পারলেও যেকোন কর্মসুচী পালনে সচেষ্ঠ আছে এবং থাকবে। তিনি অবিলম্ভে এসব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারেরও দাবী করেন।

এর বাইরে টানা ৬০ ঘন্টার হরতাল ছিল স্বত:স্ফুর্ত এবং শান্তিপূর্ণ। হরতালের প্রতি মানিকছড়ির বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সমর্থন ছিল লক্ষণীয়।

মাটিরাঙ্গা
হামলা, মামলা ও ভাঙচুরের মধ্য দিয়ে জেলার মাটিরাঙ্গায় পালিত হয়েছে বিরোধীদলীয় জোটের ডাকা টানা ৬০ ঘন্টার হরতাল। হরতালের প্রথম দিন সকালে মািিটরাঙ্গা পৌরসভার বাধিরাম কার্বারী পাড়ায় একটি মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে হরতাল সমর্থকরা। এছাড়াও আদর্শগ্রাম এলাকায় একটি জীপ ভাঙচুর করে বিক্ষুদ্ধ হরতাল সমর্থকরা। তবলছড়ি ইউনিয়নের তুলাতলী এলাকায় এদিন বিকাল সাড়ে চারটার দিকে হরতাল বিরোধীদের সাথে হরতাল সমর্থকদের সংঘর্ষে আওয়ামীলীগের ৪ কর্মী ও সমর্থক আহত হয়েছে। আহতরা হলো তুলাতলী গ্রামের মো: খোরশেদ আলম (৪০), পিতা- মৃত শাহজাহান মিয়া, মো: আলী আকবর (৪৫), পিতা-দুধ মিয়া,  মো: আমান উদ্দিন (৪৩), পিতা- রমজান আলী, সফিকুল ইসলাম (২৮), পিতা-মোহাম্মদ আলী ।

ঘটনার একদিন পরে আহত মো: আমান উদ্দিন বাদি হয়ে বিএনপির অর্ধশত নেতাকর্মীকে আসামী করে মাটিরাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় পুলিশ এখনো কাউকে আটক করেনি।
এছাড়া মাটিরাঙ্গায় স্বত:স্ফুর্ত ও শান্তিপূর্ণ ভাবে পালিত হয় ৬০ ঘন্টার হরতাল। হরতাল প্রতিহতের ঘোষনা দিলেও মাঠে ছিলনা সরকারী দলের কোন নেতাকর্মী। ৬০ ঘন্টার হরতাল চলাকালের মাটিরাঙ্গার প্রতিটি জনপদ ছিল হরতাল সমর্থক বিএনপি নেতাকর্মীদের দখলে।

পানছড়ি
 জেলার পানছড়িতে হরতালকে ঘিরে পুরো পানছড়িতে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করলেও দুই শীর্ষ রাজনৈতিক দলের দলের নেতাদের নমনীয় মনোভাব ও আন্তরিকতার ফলে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ৬০ ঘন্টার হরতাল শেষ হয়। হরতালের শেষ দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে ছাত্রলীগের আকস্মিক হামলায় এক ছাত্রদল কর্মী আহত হয়। এসময় ছাত্রলীগ কর্মীরা পাইলট ফার্ম এলাকায় ঐ ছাত্রদল সমর্থককে মারধর করে এবং তার পকেটে থাকা টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ৫ জনকে আসামী করে পানছড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ এখনো কাউকে আটক করেনি।

এর বাইরে পানছড়িতে ৬০ ঘন্টার হরতাল চলাকালে পানছড়ির রাজপথ ছিল বিরোদী দলীয় জোটের দখলে। হরতালকে ঘিওে উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা সার্বক্ষনিক কর্মীদের সাথে সমানতালে মাঠে ছিলেন।

রামগড়
নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবীতে ১৮ দলীয় জোটের টানা ৬০ ঘন্টা হরতালে প্রথম দিনে বিএনপির দূর্গ খ্যাত রামগড়ের চৌধুরী পাড়ায় দুপুর সাড়ে ১২ টার সময় স্থাীনয় আওয়ামীলীগের কর্মীদের হামলার শিকার হয়েছেন রামগড় ৫নং পৌর ওয়ার্ড বর্তমান কাউন্সিলর ও পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো: নুর নবী জামাল।

৬০ ঘন্টার হরতাল চলাকালে সাবেক মহকুমা শহর রামগড় থেকে দুর পাল্লার কোন যানবাহন ছেড়ে যায়নি। চলেনি স্থানীয় কোন হালকা যানও। বিএনপি সমর্থক নেতাকর্মীদের কোন ধরনের পিকের্টি ছাড়াই স্বত:স্ফুর্ত হরতাল ছিল চোখে পড়ার মতো।

তবে সরকারী দলের নেতাকর্মীদের চাপে কিছু দোকান-পাট খোলা থাকলেও ব্যবসায়ীরা ছিল উৎকন্ঠিত। আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন ছিল রামগড়ের বিভিন্ন এলাকায়।

দীঘিনালা
কড়া পিকেটিং ও কোন ধরনের সহিংসতা ছাড়াই জেলার দীঘিনালায় নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবীতে ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা ৬০ ঘন্টা হরতাল পালিত হয়েছে। হরতাল চলাকালে হরতাল সমর্থক বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের রাত জেগে পিকেটিং করার বিষয়টি ছিল চোখে পড়ার মতো।

দীঘিনালার কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে হরতাল চলাকালে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা রাজনীতির মাঠে সরব ছিল। পাশাপাশি হরতাল বিরোধী মিছিল করেছে শাসকদলের নেতাকর্মীরা। সবমিলিয়ে দীঘিনালায় শান্তিপূর্নভাবেই শেষ হয়েছে ৬০ ঘন্টার হরতাল।

লক্ষীছড়ি
এদিকে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়ই জেলার লক্ষীছড়িতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা ৬০ ঘন্টা হরতাল স্বত:স্ফুর্ত ও শান্তিপূর্ণ ভাবে পালিত হয়েছে। হরতাল চলাকালে হরতাল সমর্থকদের হরতালের মাঠে উপস্থিতি ছিল সরব।

এদিকে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কর্তৃক ডাকা টানা ৬০ ঘন্টার হরতাল স্বত:স্ফুর্তভাবে পালন করায় খাগড়াছড়ি জেলাবাসীসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয় বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান, সাবেক সংসদ সদস্য ও খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভুইয়া। সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত অভিনন্দন বার্তায় ওয়াদুদ ভুইয়া বলেন, যারা আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে রাজনীতির মাঠ দখলে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করেছে ৬০ ঘন্টার টানা হরতাল সফল করে জনগণ তাদের প্রতি লালকার্ড প্রদর্শন করেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন