বান্দরবানে ম্যালেরিয়ায় ৩ শিশুর মৃত্যু, আক্রান্ত শতাধিক

melarea

স্টাফ রিপোর্টার
বান্দরবানের থানছি উপজেলায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও শিশু ও বৃদ্ধসহ শতাধিক এসব রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো চিকিৎসক না থাকায় পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন জনপ্রতিনিধিরা।

জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা জানান, সপ্তাহ জুড়ে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে দুর্গম থানছিতে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। রবিবার থানচির রেমাক্রী এবং ছোটমদক ইউনিয়নে ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এরা হলো রেমাক্রী ইউনিয়নের গ্রোপিং পাড়ায় পাড়ায় মপুশে মারমা (৭) এবং ছোটমদক পাড়ায় অংথুই মারমা (৬)। সপ্তাহ আগে থানছি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরো এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

থানচি উপজেলার রেমাক্রী, তিন্দু ইউনিয়ন ও থানচি সদরের অংহ্লা খুমি পাড়া, মালিরাম পাড়া, পেনেদং পাড়া, গ্রোপিং পাড়া, অংসু খুমি পাড়া, রেমাক্রী বাজার পাড়া, তিন্দু বাজারপাড়াসহ বিভিন্ন পাহাড়ি গ্রামে ব্যাপকভাবে ম্যালেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। পাহাড়ি গ্রামগুলোতে শিশু-কিশোর, বয়স্ক আরও শতাধিক লোকজন ম্যালেরিয়া এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় এলাকার বাজারগুলোতে ঔষধের সংকট দেখা দিয়েছে।

অপরদিকে জেলা সদরেও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। গত রবিবার ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত দুই শিশু তাহমিনা আক্তার (৯) এবং ছোট ভাই সায়েম হোসেন (৬) দুজনকে গুরুতর অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও বর্তমানে সদর হাসপাতালে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত আরও ৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে।
রেমাক্রীর নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মুইশা থুই মারমা জানান, বর্তমান নদীতে পানি বেশি থাকায় নৌকা চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে অনেকটাই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে তিন্দু ও রেমাক্রী ইউনিয়নের পাড়াগুলো।

থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যাহ্লাচিং মারমা বলেন, থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো চিকিৎসক নেই। বৃষ্টিতে রেমাক্রী, তীন্দু ইউনিয়নের পাহাড়ি পাড়াগুলোতে ম্যালেরিয়া এবং নিউমোনিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে । গত রবিবার রেমাক্রী ইউনিয়নে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত ২ শিশু মারা গেছে। ম্যালেরিয়া রোগীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেও চিকিৎসা পাচ্ছে না। কোনো ডাক্তার নেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

বান্দরবান সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (আরএমও) প্রবীর চন্দ্র বণিক জানান, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত ৫ জন বর্তমানে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত দুই শিশুকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছিল। অনেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতালে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. উদয়শংকর চাকমা সাংবাদিকদের জানান, বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ায় এ সময়ে ম্যালেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। রোগ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য বিভাগ ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। একজন শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়েছি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন