বান্দরবানে সন্ত্রাসীদের সাথে সেনা-বিজিবি গুলিবিনিময় চলছে

remakri bgb camp

স্টাফ রিপোর্টার:

 বান্দরবানের থানছি উপজেলার রোমাক্রী ইউনিয়নের বড় মদক এলাকায় বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সাথে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের মধ্যে গুলি বিনিময় চলছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে সন্ত্রাসী সংগঠনটির অস্ত্রধারী সদস্যরা বড় মদক বিজিবি ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে বিজিবিও পাল্টা গুলি চালায়। এ ঘটনায় বিজিবি সদস্য নায়েক জাকিরের হাতে গুলি লাগলে তিনি আহত হন বলে নিরাপত্তাবাহিনী সূত্রগুলো পার্বত্যনিউজকে নিশ্চিত করেছে।

সূত্র মতে, বুধবার দুপুর ১ টা পর্যন্ত থেমে থেমে গুলি বিনিময় চলছে। ইতোমধ্যে ২ প্লাটুন সেনা সদস্য হেলিকপ্টারে করে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিজিবি’র সদস্যদের সাথে যোগ দিয়েছে। ঘটনাস্থলের উপরে হেলিকপ্টার থেকে টহল অব্যাহত রয়েছে। বলিপাড়া বিজিবির ব্যাটালিয়ন থেকে বিজিবির সদস্যদের বড় মদক তিন্দু রেমাক্রী ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।  একইসাথে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে সতর্কতা জারী করা হয়েছে। আহত বিজিবি সদস্যকে হেলিকপ্টারে করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসার প্রস্তুতি চলছে।

থানচি

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ জানিয়েছেন, আজ সকাল নয়টার দিকে বান্দরবানের থানচি উপজেলার গহীন পাহাড় এলাকায় বিজিবির একটি ক্যাম্পের কাছে পেট্রোলের ওপরে একদল সন্ত্রাসী গুলি চালায়। এরপর তাদের সাথে সকাল নয়টা থেকেই সেখানে থেমে থেমে গোলাগুলি হচ্ছে। বিজিবির মহাপরিচালক আরও বলেছেন যারা গুলি করেছে তারা মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী কোন সংগঠনের সদস্য বলে তারা ধারণা করছেন।

বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহসিন রেজা জানান, বান্দরবানের বড় মোদকে বিজিবি টহলদলের ওপর মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় আক্রমণ করলে বিজিবিও পাল্টা আক্রমণ করে। এ ঘটনায় বিজিবির একজন নায়েক আহত হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, ঘটনাস্থল থেকে বিজিবির আহত সদস্যকে উদ্ধার করা হয়েছে। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ পরিচালনার জন্য হেলিকপ্টারযোগে ওই এলাকায় অতিরিক্ত বিজিবি ও সেনা সদস্য পাঠানো হয়েছে।

থানছির রেমাক্রী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মালিরাম ত্রিপুরা জানিয়েছেন, বুধবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বড় মদক বিজিবি ক্যাম্প লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা জঙ্গল থেকে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। বিজিবিও আত্মরক্ষার্থে কয়েক রাউন্ড পাল্টা গুলি চালিয়েছে।

হামলাকারী কারা এ ব্যাপারে কোনো সূত্রই কিছু নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছে না। ঘটনাস্থল গভীর বনে আচ্ছাদিত পাহাড়ে অতি দূর্গম বলে সেখান থেকে সঠিক খবর পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে স্থানীয়দের ধারণা, হামলাকালীরা মায়ানমারের আরাকান রাজ্যের আরাকান লিবারেশন পার্টি (এএলপি) ও আরাকান আর্মির (এ, এ) সদস্য বা বাংলাদেশের বিছিন্নতাবাদী পাহাড়ী সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হতে পারে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিজিবি তিন্দু ও আন্দারমানিক এলাকা থেকে ১৩টি ঘোড়া আটক করে। আটককৃত ঘোড়াগুলো বড় মদক বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার সকালে হঠাৎ করেই বড় মদক বিজিবি ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে সন্ত্রাসীরা। বড় মদক বাজারে দোকান-পাট ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন