মাঠে তৎপরতা নেই বিএনপি ও আঞ্চলিক সংগঠন

বান্দরবান আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেন যারা

fec-image

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে পার্বত্য জেলা বান্দরবান-৩০০ নম্বর আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে তিনজন প্রার্থী।

তারা হলেন, বান্দরবান আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী বীর বাহাদুর উশৈসিং, স্বতন্ত্র প্রার্থী মংঙ্যেয়ে প্রু ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী এটিএম শহিদুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মংঙ্যেয়ে প্রু ও বিকালে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী এটিএম শহিদুল ইসলাম।

এর আগে গতকাল বুধবার সকালে রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী বীর বাহাদুর উশৈসিং।

এদিকে আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনকে ঘিরে এখনো কোন তৎপরতা দেখা যায়নি বিএনপির নেতকর্মীদের। বান্দরবানের বিএনপি দুটি দল বিভক্ত রয়েছে। সাচিংপ্রু জেরি সমর্থক ও জাবেদ, ম্যাম্যাচিং সমর্থক। দুই দলের নেতারা নির্বাচনের অংশগ্রহন করবেন কীনা সে বিষয়ের এখনো জানা যায়নি। তবে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হলে নির্বাচনের অংশগ্রহন করবেন বলে জানান জেলা বিএনপি দলের নেতাকর্মীরা।

জেলা বিএনপি সভাপতি ম্যাম্যাচিং মারমা জানান, দলের সিদ্ধান্ত ছাড়া তাদের দল নির্বাচনে অংশ নেবেন না। সরকার পতনের একদফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের অংশগ্রহণ করবেন না বলেও জানান তিনি।

এদিকে পাহাড়ের কিছু আঞ্চলিক সংগঠন আত্মগোপনে আবার কিছু সংগঠন মাঠ পর্যায়ের থাকলেও নির্বাচনের তারাও অংশ নেবেন না। তবে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ( ইউপিডিএফ) গণতান্ত্রিক সংগঠনটি আগামী উপজেলা কিংবা ইউনিয়নের পর্যায়ে নির্বাচনে অংশ নেবে বলে জানা গেছে।

ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ( ইউপিডিএফ) গণতান্ত্রিকের জেলা সাধারণ সম্পাদক উবামং মারমা জানিয়েছেন, তাদের দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পরিস্থিতি এখনো হয়ে উঠেনি। তবে আগামীতে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নির্বাচন করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

আঞ্চলিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটি সহ- সাধারণ সম্পাদক জলিমং মারমা বলেন, বান্দরবান থেকে তাদের দলও নির্বাচনের অংশ নেবে না। বিভিন্ন কারণে দলের নেতাকর্মীরা আতঙ্কে আত্মগোপনে রয়েছে। তাছাড়া নির্বাচন করা পরিবেশ নাই বলে তিনি জানিয়েছেন।

এদিকে জেলায় বান্দরবানের জাতীয় পার্টির আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জিএম কাদের বিদিশা সমর্থিত দুটি দল রয়েছে। কিন্তু তাদের সংগঠনের কোন কার্যক্রম দেখা যায়নি। তবে কয়েকমাস আগে বান্দরবানের জিএম কাদের বিদিশা সমর্থিত দলের আহ্বায়ক মৃত নাছির উদ্দিন বেচেঁ থাকা কালীন বিভিন্ন স্থানে নানা কার্যক্রম দেখা গেছে। তিনি মারা যাওয়ার পর দলটির কোন অস্তিত্ব দেখা মেলেনি। তাছাড়া এই দুইটি সমর্থিত দলের মধ্যে জাতীয় পার্টির আনোয়ার হোসেন মঞ্জু অধীনের দলীয় কার্যালয় থেকে বান্দরবান ৩০০ নম্বর আসনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন এটিএম শহিদুল ইসলাম। তিনি বিকালে রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর মনোনয়নপত্র দাখিল জমা করেছেন।

জাতীয় পার্টির এটিএম শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি দলীয়ভাবে মনোনয়ন পেয়েছি। সেই সাথে বান্দরবানে পিছিয়ে পড়া জাতিগোষ্ঠীদের শতভাগ মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি।

অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ বান্দরবানের মাঠ পর্যায়ের তৎপরতা রয়েছে। বান্দরবান আসনে ছয়বার নির্বাচিত আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী বীর বাহাদুর উশৈসিং মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি ১৯৯১ সাল থেকে পরপর ৬ বার আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ৭ম বারের মতো নির্বাচনের প্রচারণায় মাঠে রয়েছে। এবারেও বীর বাহাদুর উশৈসিং ৭ম বারের মতো নির্বাচিত হবে এবং বান্দরবানকে স্মার্ট জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে নৌকা ছাড়া বিকল্প নাই বলে জানান আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা।

বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, দেশ এবং জেলাকে এগিয়ে নিতে উন্নয়নের ছোয়া এখনো বাকি আছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে প্রত্যায় আছে সেটি আরো উন্নতি করতে হলে সর্বক্ষেত্রে আরো কাজ করতে হবে। যেটি উন্নয়ন হয়েছে সেটিকে আরো পরিধিভাবে বাড়ানো জন্য কাজ করে যাবেন। এদেশে উন্নয়ন, সম্প্রীতি ও সোনার বাংলার গড়ার যে স্বপ্ন সেটিকে বাস্তবায়ন করতে হলে আওয়ামীলীগ ছাড়া কোন বিকল্প নাই। ৩০০ নম্বর আসনে ৭ম বারের মতো নির্বাচিত করে এলাকার সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

এবিষয়ে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, অনলাইনে এবং অফলাইনে মনোনয়ন ফরম দাখিল করার শেষ দিন পর্যন্ত তিনজন প্রার্থীর দাখিল হয়েছে। সাত উপজেলা ও দুটি পৌরসভা নিয়ে বান্দরবান ৩০০ নম্বর সংসদীয় আসন। সবকিছু ঠিক থাকলে এই আসনে ১৮২টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচকে ঘিরে সাতটি উপজেলায় সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবে। তাছাড়া প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা জন্য সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে তৎপরতা থাকবে বলে জানান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন, বান্দরবান, রাজনীতি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন