ভূয়া সংবাদ প্রচার করে মাটিরাঙ্গায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা

poo

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার :

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় দিনের পর দিন বেড়েই চলছে চিহ্নিত ইউপিডিএফ-জেএসএস‘র মদদপুস্ট একাধিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সামাজিক গণমাধ্যমে বাঙ্গালী বিরোধী নানা অপপ্রচার। আর এ অপপ্রচারের ফলে একদিকে যেমন মাটিরাঙ্গার দীর্ঘদিনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ক্ষেত্র বিস্তৃত হচ্ছে তেমনি দেশের বাইরে বিশ্ব-দরবারেও বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

সাম্প্রতিক সময়ে কোন ধরনের সত্যতা ছাড়াই নিজেদের মনগড়াভাবেই ইউপিডিএফ-জেএসএস‘র মদদপুস্ট একাধিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল পাহাড়ী নারী নির্যাতনের মতো বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগে বাঙ্গালীদের অভিযুক্ত করে মিথ্যা, বানোয়াট, কাল্পনিক সংবাদ পরিবেশন করে পাহাড়ের শান্তিপূর্ণ এ জনপদে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। রোববার পাহাড়ীদের পরিচালিত কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল “খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় বাঙ্গালী কর্তৃক এক পাহাড়ী স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রচার করে- যা এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার সৃষ্টি করে। 

সংবাদে বলা হয়‘ খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার বর্ণাল ইউনিয়নের থৈলাপাড়ায় জনৈক বাঙ্গালী সেটেলার কর্তৃক দশম শ্রেনীতে পড়–য়া মারমা সম্প্রদায়ের এক পাহাড়ী স্কুলছাত্রী ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়। সংবাদ মতে, ঐ পাহাড়ী স্কুলছাত্রী বাড়ি থেকে পায়ে হেটে স্কুলে যাবার সময় এ ঘটনা ঘটে।

এবিষয়ে বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে, 
বর্ণাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মো: আলী আকবর এ প্রতিনিধিকে বলেন, এটি সম্পুর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। তিনি বলেন, এক এলাকায় থাকতে গেলে একজনের সাথে অন্যজনের কথা হতেই পারে। আর কথা হলে বা পাশাপাশি রাস্তায় হাটলেই যদি ধর্ষণ বা ধর্ষণ চেষ্ঠার অভিযোগ হয় তা দু:খজনক। এমন কোন ঘটনাই ঘটেনি দাবী করে তিনি বলেন, একটি কাল্পনিক বিষয়ে রং লাগিয়ে এলাকার সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে ঐ মহলটির এমন অপপ্রচারে এলাকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের আশঙ্কায় স্থানীয় থৈলাপাড়ার কার্বারী, গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ, তবলছড়ি কদমতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং বাঙ্গালী নেতৃবৃন্দদের নিয়ে বৈঠকে বসেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মো: আলী আকবর। বৈঠক থেকেই তিনি এপ্রতিনিধিকে উপরোক্ত কথা বলেন।

বৈঠকে তবলছড়ি কদমতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আবদুল হক, তবলছড়ি কদমতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রতন ত্রিপুরা, থৈলাপাড়ার কার্বারী চাথোয়াই মারমা, তানিয়া মারমা, বড়নাল ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো: আবুল বাশার এবং বড়নাল ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মো: হারুন মিয়া সহ গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত আছেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে তবলছড়ি কদমতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আবদুল হক এমন কোন ঘটনার কথা শোনেনি দাবী করে বলেন, একটি মহল এখানে পাহাড়ী-বাঙ্গালীর দীর্ঘদিনের মেলবন্ধন নষ্ট করার ষড়যন্ত্রে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আর তারাই এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে।

বড়নালের থৈলাপাড়ার কার্বারী চাথোয়াই মারমা বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়ের পুঁজি করে কারা এসব করছে বা কেন করছে বুঝতে পারি না। তবে এমন কোন ঘটনা এখানে ঘটেনি বলেও দাবী করেন তিনি।

এবিষয়ে তবলছড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই কাজী মাহফুজ হাসান সিদ্দিক এমন কোন অভিযোগ পাননি বলে পার্বত্যনিউজকে জানান।
এদিকে প্রায়শঃ একাধিক নিউজ পোর্টালসহ উপজাতিয়রা বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যমে ভুয়া, বানোয়াট, বিকৃত সংবাদ পরিবেশন করে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টিসহ দেশে ও দেশের বাইরে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ করছে। যা প্রতিহত ও প্রতিরোধ করার দাবীও জোড়ালো হচ্ছে।
Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন