মিয়ানমার : জান্তার সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে রাজি বিদ্রোহী জোট

fec-image

মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে জান্তাবিরোধী বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অন্যতম ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরে সম্মত হয়েছে। চীনের মধ্যস্থতায় গত কয়েক মাস ধরে আলোচনা চলার পর উভয়পক্ষের মধ্যে এই সমঝোতা হয়েছে বলে জানা গেছে।

২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের হটিয়ে ক্ষমতা দখল করা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরে ব্যাপক হুমকি ও সংকটের মধ্যে রয়েছে। গত অক্টোবর থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকা দখল করা শুরু করেছে জান্তাবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিভিন্ন জোট। দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংঘাত চলছে বিদ্রোহী জোটগুলোর এবং সবচেয়ে বেশি সংঘর্ষ হচ্ছে মিয়ানমার চীন সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায়।

জান্তাবিরোদী এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে রাজনৈতিকভাবে আশ্রয় ও মদত দিচ্ছে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জোট ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (নাগ)। তবে বর্তমানে চীন সীমান্ত এলাকায় অস্থিরতা শুরু হওয়ায় চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশপাশি চীনে বার্মিজ শরণার্থীদের ঢেউ আসার পরিস্থিতিও দেখা দিয়েছে।

থ্রি ব্রাদার অ্যালায়েন্সভুক্ত সশস্ত্র গোষ্ঠী টিএনএলএর এক নেতা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা শত্রুপক্ষের (সামরিক সরকার) সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ভবিষ্যতে আমরা আর শত্রুপক্ষের সেনাছাউনি বা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাগুলোতে হামলা চালাব না; আর বিপরীতে তারাও আমাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে বিমান ও বোমা হামলা থেকে বিরত থাকবে।’

শুক্রবার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং জানান, গত বুধবার চীনের দক্ষিণাঞ্চলী প্রদেশ ইউনানের রাজধানী কুনমিংয়ে বৈঠক হয়েছে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স এবং জান্তা প্রতিনিধিদের মধ্যে। দীর্ঘ সেই বৈঠকের পর চুক্তি স্বাক্ষরে সম্মত হন দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা।

‘উভয়পক্ষের প্রতিনিধিরা একমত হয়েছেন যে মিয়ানমার-চীন সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি তারা করবেন না। চীন আশা করছে, মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ এই চুক্তিকে শিগগিরই বাস্তবায়নের পথে নিয়ে যাবে এবং সবাই সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করবে,’ ব্রিফিংয়ে বলেন মাও নিং।

গতমাসে অবশ্য বেইজিং বলেছিল, যে জান্তা এবং নাগ শান্তি সংলাপে যে চায় এবং তারা উভয়ই মিয়ানমারে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

তবে এখন পর্যন্ত দেশটিতে শান্তি সংলাপ কিংবা স্থায়ী-অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন