রংগীখালী-আলীখালী এলাকার বেরিবাধঁ নির্মাণ এখনো হয়নি: লবণচাষ অনিশ্চিত

কক্সবাজার প্রতিনিধি:
সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের প্রায় ২০কিলোমিটার বেড়ীবাধঁ নির্মাণ ও ভেঙ্গে যাওয়া অংশ সংস্কারের কাজ এখনো হয়নি। যার কারণে এ বছর লবণ চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। হ্নীলা ইউনিয়নের বেড়ীবাধেঁর অধিকাংশ ভেংগে গেছে রংগীখালী-আলীখালী এলাকায়। আর সবচেয়ে বেশী লবণ উৎপাদনও হয় এই এলাকাগুলোতে।

এছাড়া এই এলাকার হাজার হাজার মানুষ বেড়ীবাঁধ সংস্কার ও টেকসই ব্লক দিয়ে নতুনভাবে নির্মাণ না করায় এ বছর বর্ষাকালে তারা ভয়ভীতির মধ্যে রাত কাটাতে বাধ্য হবে। সুত্র জানায়, গেল বছর লোক দেখানো বেড়ীরিবাঁধ সংস্কারের সামান্য কাজ হলেও অল্পদিন কাজ করে লাপাত্তা হয়ে যায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। একারণে কোন কাজের কাজ কিছুই হয়নি। যার মাশুল দিতে হচ্ছে ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ সংলগ্ন এলাকার মানুষদের। কিছু দূর্নীতিবাজ ব্যক্তি ও ঠিকাদারের জন্য এ কষ্ট পেতে হচ্ছে বলে সীমান্ত এলাকা টেকনাফের নাফনদীর পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের অভিযোগ। ঢিলেঢালা বেড়ীবাধঁ নির্মাণ ও টেকসই না হওয়াতে বেড়ীবাঁধ বাঁধতে না বাঁধতেই ভেঙ্গে বার বার নদীর জোয়ারের পানি ঢুকে এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়।

সুত্র আরো জানায়, গত অর্ধযুগ ধরে এ দুই এলাকার বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়াতে মজবুতভাবে নির্মাণ করতে বেশ কয়েকবার কয়েক কোটি টাকা বরাদ্দও দেওয়া হয়। কিন্তু কোনবারই কাজ ভাল না হওয়াতে প্রতিবছরই বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়।

সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গার বেড়িবাঁধ ভাঙ্গা ও অধিকাংশ অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে বর্ষাকালে ভাঙ্গা ও বেড়ীবাঁধ দুইটি আরো বেশী ভেঙ্গে যাবে বলে আশংকা করেছেন এলাকার সচেতন মহল।

২০১২ সালে নাটমোরাপাড়া ও চৌধুরীপাড়ার বেড়িবাঁধের যে স্থানটি ভেঙ্গে নাফনদীর জোয়ারের পানি ঢুকে এলাকা পানিবন্দী হয়, এখনো পর্যন্ত সে ভাঙ্গাটিতে কোন প্রকার মাটি ভরাট হয়নি। আর রংগীখালী-আলীখালী বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে ব্লকতো দুরের কথা মাটিগুলো দিক বেদিক হয়ে বাঁধটি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ কারণে এবছর হ্নীলা ইউনিয়নের সবকটি জায়গায় লবণ চাষ করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন এলাকার লবণ চাষীরা।
রংগীখালীর বিশিষ্ট লবণ ব্যবসায়ী আবছার জানান, আগের তুলনায় এবছর বেড়ীবাঁধ বেশী ভেঙ্গে যাওয়ায় পুরো লবণ চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় দ্রুত রংগীখালী-আলীখালী এলাকার বেড়ীবাঁধ সংস্কার না করলে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ও লবণ শিল্প হুমকির মুখে পড়বে এবং হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে।

অপর ব্যবসায়ী রুবেল জানান, সরকারের উদাসীনতার কারণে চলতি বছরেও লবণ মৌসুম শুরুর আগে হ্নীলা ইউনিয়নের প্রায় ২০ কিলোমিটার বেড়ীবাধঁ নির্মাণ কাজ হয়নি। তাই প্রতি বছরের মত চলতি বছরও বর্ষাকালে আরো বেশি বেড়ীবাধঁ ভাঙ্গন ও বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হবে। সেই সাথে শত শত খানী জমিতে লবণ চাষ করা যাবেনা। তাই দ্রুত বেড়ীবাঁধ নির্মাণের এলাকার ব্যবসায়ী ও চাষীদের পক্ষ থেকে জোর দাবী জানাচ্ছি।

রংগীখালীর বিশিষ্ট সমাজসেবক ও সম্ভাব্য মেম্বার পদপ্রার্থী সরওয়ার কামাল শাহীন জানান, এই এলাকার বেড়িবাধেঁর সংস্কারকাজ না হওয়ায় চরম হতাশায় দিনাতিপাত করতে হয় চাষী ও এলাকাবাসীদের। তাই বর্ষা ও লবণ মৌসুমের আগে বেড়ীবাধঁ সংস্কার না করলে চাষী ও এলাকাবাসীদের নিয়ে দ্রুত বেড়ীবাঁধ সংস্কারের দাবী আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসুচী দিতে বাধ্য হব।

এলাকাবাসী আরো অভিযোগ করে বলেন, বাঁধ সংস্কারের নামে প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা লুটপাট করা হচ্ছে। বেড়ীবাঁধ মজবুত ও সংস্কার না করলে বাঁধটি বর্ষাকালে আরো ভেঙ্গে যাবে এবং লবণচাষ চরম হুমকীর মুখে পড়বে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন