দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

রাঙামাটি আসনে মনোনয়ন চান বিএনপির ৫ প্রার্থী

fec-image

বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষের দিকে। পুরো দেশে দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচনের ঢামাঢোল বাজছে। নির্বাচনের রণ প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। গড়ে তুলছে জোট, মহাজোট। ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলো বড় রাজনৈতিক দলগুলোর ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে নিজেদের ক্ষমতার পরিধি বাড়াতে।

দেশের অন্যতম বৃহত্তর রাজনৈতিক দলের নাম বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) জেনারেল জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া ওঠা সংগঠনটি বর্তমান সরকারকে ক্ষমতার মসনদ থেকে নামাতে আন্দোলন জোরদার করেছে। তাদের এক দফা দাবি বর্তমানে সরকারের অধীনে তারা নির্বাচন করবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করবেন বলে বর্তমান সরকারকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। এই দাবিতে তারা অনড়।

কিন্তু ভিতরে ভিতরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মতো তারাও মাঠ গোছাতে শুরু করেছেন। তাদের মানা হলে সংগঠনটি নির্বাচনে অংশ নেবে। যে কারণে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনী হাওয়া সমতল পেরিয়ে পাহাড়ি জেলা রাঙামাটিতেও এসে লেগেছে।

জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) রাঙামাটি জেলার নেতৃবৃন্দরা কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজপথে আন্দোলনে সরব রয়েছেন। প্রতিদিন নিজেদের কর্মীর সংখ্যা বাড়াতে কাজ করছেন। মূল উদ্দ্যেশ্য হলো দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়া। পাহাড়ের অন্যতম জেলা রাঙামাটি ২৯৯ নং আসনটি দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আসন। এখানে বহু জাতিস্বত্ত্বার বসবাস। পাহাড়ী জেলাগুলোর মধ্যে মূল জেলা এ রাঙামাটি।

দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এ আসনটিকে হট স্পট হিসেবে বিবেচনা করছে। ৯০র’ দশক থেকে বিএনপি মাত্র একবার এ আসনে জয়ী হয়েছে। বাকী চারবার আওয়ামী লীগ এবং অনিবিন্ধত আঞ্চলিক দল পিসিজেএসএস প্রার্থী একবার এ আসনে জয়ী হয়েছেন। যে কারণে এবার বিএনপি মরিয়া এ আসনে জিততে।

এইবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাঙামাটি জেলা বিএনপি থেকে পাঁচ হেভিওয়েট প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে আগ্রহী। তারা হলেন বর্তমান কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-উপজাতি বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) মণীষ দেওয়ান, বিএনপির পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সাবেক উপ-মন্ত্রী, সাবেক এলডিপি নেতা এবং এক সময়কার শান্তিবাহিনীর গেরিলা মণিস্বপন দেওয়ান, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপেন তালুকদার দীপু, সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ মামুন। বিএনপি নির্বাচনে পূর্বের ন্যায় ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে পারে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান এর সহধর্মিণী সাবেক শিক্ষিকা বর্তমানে বিএনপি নেত্রী মৈত্রী চাকমাকে। তার নামও শোনা যাচ্ছে বিএনপি নেতাকর্মীদের মুখে।

৫ জনের মধ্যে সকলে যেমন স্ব-স্ব অবস্থান থেকে অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ, তেমনি কর্মীবান্ধব। তবে বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে তাদের নেতা লন্ডন প্রবাসী তারেক জিয়ার মর্জির উপর নির্ভর করছে ২৯৯ আসনে কে পাবেন বিএনপির টিকেট। যিনি তারেক জিয়ার মন গলাতে পারবেন তিনিই মূলত বিএনপির নমিনেশন পাবেন, এমন ধারণা নেতাকর্মীদের।

রাঙামাটি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন পার্বত্যনিউজকে বলেন, আমরা নির্বাচন নিয়ে চিন্তা করছি না। আমরা বর্তমান জুলুমবাজ, অগণতান্ত্রিক সরকার হঠাও আন্দোলনে শরীক হয়েছি। যদি বিএনপি নির্বাচনে যায় তাহলে তা সময়ই বলে দেবে রাঙামাটি আসন থেকে কে নির্বাচন করবে।

নির্বাচনে পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা এমন প্রশ্নে বিএনপির এ নেতা বলেন, নির্বাচনের মূল শর্ত হলো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। অর্থাৎ নির্বাচনে অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার বন্ধের পাশাপাশি, কালো টাকার অপব্যবহার বন্ধ, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখা, জনগণকে ভোটদানে বাধা প্রদান না করা এবং কেন্দ্রে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে তিনি রাঙামাটি আসনে এমপি নির্বাচনের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিএনপি, রাঙামাটি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন