রামুতে নিম্নমানের ওষুধে সয়লাব, খবর নেই সংশ্লিষ্টদের

ffff
নিজস্ব প্রতিনিধি :
কক্সবাজারের রামু উপজেলা জুড়ে নিম্মমানের ওষুধে সয়লাব বিভিন্ন ষ্টেশন ও হাট বাজারে। আইনের তোয়াক্কা না করে এসব ওষুধ বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব ওষুধ বিক্রির কারণে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা।

উপজেলার ফতেখাঁরকুল, চাকমারকুল, কাউয়ারখোপ, কচ্ছপিয়া, গর্জনিয়া, রাজারকুল, খুনিয়া পালং, দক্ষিণ মিঠাছড়ি, জোয়ারিয়ানালা, ঈদগড়, রশিদ নগর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্টেশনের ফার্মেসীগুলোতে চেম্বার করে আসছেন ডাক্তাররা। ওই সব ফার্মেসীগুলোতে নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি করে ক্রেতাদের প্রতারিত করে প্রতিদিন মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

বিশেষ করে রামু উপজেলার চৌমুহনী ষ্টেশন, চেরংঘাটা, ফকিরা বাজার, তেমুহনী, বাইপাস, হাসপাতাল গেটসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠছে ফার্মেসী। এ সব ফার্মেসীর মালিক অতিরিক্ত মুনাফার আশায় নিুমানের কোম্পানীর ওষুধ বিক্রি করে আসছে। চৌমুহনী ষ্টেশনে এমন ডাক্তারও রয়েছেন তাঁর প্রেসক্রিপশন বা চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্রে লেখা কারও বুঝার সাধ্য নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েকটি ফার্মেসীতে নিম্নমানের কোম্পানীর ওষুধ ছাড়া আর কোন ওষুধ বিক্রি হয় না। চিকিৎসক হয়ে নিম্নমানের ওষুধ ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার কারণে এসব অবৈধ ব্যবসা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

হাসপাতালের ডাক্তারের অভিযোগ, আমরা যে ওষুধ লিখি দোকানদার সে ওষুধ দিতে চায় না। তারা নিম্নমানের কোম্পানির ওষুধ বিক্রি করে থাকে। আবার দোকানদার রোগীকে বলে ডাক্তার কে যে কোম্পানি টাকা বেশি দেয় তারা সে কোম্পানির ওষুধ লিখে। তাহলে আমরা সাধারণ রোগীর কি হবে?

খোদ ব্যবসায়ীরাই বলছেন, বাজারে বিক্রি হওয়া ওষুধের এক তৃতীয়াংশই মানসম্মত নয়। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের দূর্নীতি ও অবহেলাই এজন্য দায়ী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রতিদিন এসব ফার্মেসিতে বিক্রি হচ্ছে হাজার হাজার টাকার ওষুধ। বিভিন্ন জটিল ও কঠিন অসুখ নিয়ে রোগীরা আসছেন ওষুধ কিনতে। কিন্তু তারা জানেন না, দাম দিয়ে কেনা এসব ওষুধ আদৌ মানসম্মত কি না।

এদিকে, রামু উপজেলার মেইন রাস্তা, প্রধান ষ্টেশন উপ-ষ্টেশন বিভিন্ন  বাজারে দৃষ্টিনন্দন সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে হাতুড়ে ডাক্তাররা রোগীদেরকে নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি করে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে একদিকে প্রতারিত হচ্ছেন চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা, সাথে সাথে রোগের ক্ষেত্রে ভুল ওষুধ নির্বাচনের কারনে রোগ সারা তো দূরের কথা আরো জটিল আকার ধারণ করছে। এগুলো অহরহ ঘটলেও হাতুড়ে ডাক্তারদের হাতে সর্বশান্ত হওয়া রোগীরা পরবর্তীতে চিকিৎসার পয়সা জোগাড় করতে না পেরে ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যু দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

অপরদিকে রেজিষ্টার ডাক্তাররা (এমবিবিএস)দের চেম্বারে রোগী দেখাতে গেলে দেখা যায় চেম্বারের সামনে ওষুধ রিপ্রেজেনটেটিভদের দীর্ঘ মোটর সাইকেলের লাইন। কে কার আগে ডাক্তারকে বিনামূল্যে ওষুধ প্রদান করে তার কাঙ্খিত ওষুধটি যেন ডাক্তার লিখেন তার অনুরোধ জানাতে দেখা যায়। এই সব রিপ্রেজেনটেটিভদের অত্যাচারে ওষুধের দোকানে ওষুধ কেনা দুরূহ হয়ে পড়েছে। ওষুধের দোকানে ওষুধ কিনতে গেলে তারা হাতে থাকা প্রেসক্রিপশনটি কেড়ে নিয়ে দেখতে শুরু করে তার ওষুধটি লিখেছে কিনা। উপজেলা সদরে এমন কোন ফার্মেসী নেই যেখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা ওষুধ রিপ্রেজেনটেটিভদের অত্যাচারে দুরূহ হয়ে পড়েছে। কম করে হলেও শতাধিক ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটেটিভদের পদচারণায় রামুর প্রতিটি সড়ক মুখরিত হয়ে ওঠে। বিভিন্ন ডাক্তার ডাক্তারি মহান পেশাকে সেবার মাধ্যমে রোগীদের পাশে থেকে সঠিক ওষুধ নির্বাচন করে কোম্পানীর দেয়া লোভনীয় জিনিসপত্র এমনকি প্রস্তাবের দিকে ঝুঁকে না পড়ে স্বাস্থ্যসেবার মান আরো উন্নত করার জন্য ভুক্তভোগী মহল জোর দাবি জানিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন