রোহিঙ্গাবাহী নৌকা ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ২৮: জীবিত উদ্ধার ৪

teknaf-pic-05-12-16-copy

টেকনাফ প্রতিনিধি:

মিয়ানমারের মুসলমান রোহিঙ্গাদের উপর সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতন থেকে প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা একটি রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এসময় সাঁতার কেটে আসা এক নারীসহ ৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছে স্থানীয় জেলেরা। ঐ নৌকার এখনো ২৮ রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছে।

উদ্ধার হওয়া মিয়ানমারের মংডু থানার বড় গর্জবিল এলাকার মৌলভী সলিম উল্লাহর স্ত্রী রেহেনা আক্তার (২৫), বাকী ৩ জনের নাম জানা যায়নি। তবে তারা জেলেদের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার পর দালালেরা তাদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে জানা গেছে।

সোমবার ভোররাতে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরা বরাবর নাফ নদীর মোহনাতে এ নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জেলেরা।

হ্নীলা নাটমুরা পাড়ার জেলে পল্লীর বাসিন্দা আশিষ দাশ ও সুমন্ত্র দাশ জানান, নদীর মাঝ পথ থেকে হঠাৎ নারী-শিশুর কান্নার আওয়াজ পেয়ে সেদিকে যাই আমরা। রাতের কুয়াশার আঁধারে তেমন কিছুই দেখতে পায়নি। সামনে একজনকে পেয়ে নৌকায় তুলে নিয়েছিলাম। বাকিদের অনেক চেষ্টা করেও উদ্ধার করতে পারিনি। মিয়ানমারের বিজিপি’র ভয় থাকায় বেশি খোঁজ করাও সম্ভব হয়নি।

উদ্ধার রেহেনা বেগম জানান, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, পুলিশ ও মগদের হাতে নির্যাতনের শিকার মংডুর বিভিন্ন গ্রামের ৩০-৩২ জন নারী-পুরুষ ও শিশু বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে আসছিলেন। একটি নৌকায় করে রাতে নাফ নদী পার হতে গিয়ে হঠাৎ নৌকাটি ডুবে যায়। তাদের আর্তচিৎকারে জেলেরা এসে কয়েকজনকে উদ্ধার করে। তবে বাকিরা কে কোথায় গেছে, কিছুই বলা যাচ্ছে না। নৌকায় তার মা, ভাবী এবং ভাইয়ের ২ শিশু সন্তান ছিল। সাংবাদিকদের সামনে কথা বলার সময় নিখোঁজদের কান্নায় ভেঙে পড়েন রেহেনা। পরে রেহেনার এক দুলাভাই তাকে জেলেদের কাছ থেকে নিয়ে যান।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জাদীমুরা গ্রামে অবস্থানরত দালাল সিন্ডিকেট জাদিমুরার মোঃ ইসমাঈল, সলিম, মোঃ হাশিম, আরফাত, ঈমান হোসন, মোঃ সালাম ওরফে বলি গুইজ্জার নেতৃত্বে মিয়ানমানের বড় গজিবিল থেকে নিয়ে আসছিল। ছোট নৌকায় অতিরিক্ত বোঝাই করার ফলে এ ঘটনা ঘটেছে।

২-বিজিবির অধিনায়ক লে.কর্ণেল আবুজার আল জাহিদ জানান, নৌকা ডুবির ঘটনা স্থানীয়দের কাছ থেকে শুনেছি, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা উদ্ধার হওয়া রেহেনা বিজিবির হেফাজতে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল মজিদ জানান, খবর পেয়ে হ্নীলা এলাকায় পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন