রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসংঘের প্রতিবেদন

fec-image

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো নিপীড়ন ও যৌন সহিংসতা নিয়ে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রমাণ হাজির করেছে মিয়ানমার ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমার (আইআইএমএম)। গতকাল বুধবার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর রোহিঙ্গা বিরোধী বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারণা এবং রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত যৌন সহিংসতার তদন্ত ও শাস্তি প্রদানে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা নিয়ে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তারা।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল ২০১৮ সালে আইআইএমএম বা মেকানিজম গঠন করে। জাতিসংঘ মেকানিজমকে ২০১১ সালের পর মিয়ানমারে সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনের আলামত সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণের দায়িত্ব দেয়।

এক বিবৃতিতে আইআইএমএম প্রধান নিকোলাস কউমজিয়ান বলেন, “এক প্রতিবেদনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গোপন ফেসবুক নেটওয়ার্কের বিবরণ দেয়া হয়েছে। তারা ২০১৭ সালের ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের সময় পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্য ছড়িয়েছিল।

তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক অপরাধের অভিযোগের বিষয়ে মিয়ানমার রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। এই প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ এই কাজগুলোর তদন্ত করা ও শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।’

কউমজিয়ান আরও বলেন, “এই দুই প্রতিবেদন ব্যতিক্রমী ভিত্তিতে জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়েছে। মেকানিজম যে উপাদান সংগ্রহ করেছে এবং বিশ্লেষণ করেছে তার সিংহভাগ অবশ্যই গোপনীয় থাকতে হবে।

প্রথম প্রতিবেদনে মেকানিজমের বিশ্লেষণে ফেসবুকের পেজগুলোতে ১০ হাজারের বেশি পোস্ট সনাক্ত করা হয়েছে, যেগুলোকে মেকানিজম ঘৃণামূলক বক্তব্য হিসেবে বিবেচনা করে। এরকম একটি পোস্টে রোহিঙ্গাদের গুলি করে হত্যা বা স্থায়ীভাবে মিয়ানমার থেকে বহিষ্কারের আহ্বান জানিয়ে ২০০টির বেশি কমেন্ট পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত ব্যাপক সহিংসতার সময় মিয়ানমার সেনাবাহিনী গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে সমন্বিত ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচারণা চালাচ্ছিল।

দ্বিতীয় প্রতিবেদনে উপসংহারে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক অপরাধের তদন্ত ও শাস্তি প্রদানে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা গণহত্যার অপরাধ প্রতিরোধ ও শাস্তি বিষয়ক কনভেনশনের অধীনে মিয়ানমারের বাধ্যবাধকতার লঙ্ঘন হতে পারে

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার, রোহিঙ্গা, রোহিঙ্গা সংকট
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন