লামায় পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বেপরোয়া চাঁদাবাজি

লামা প্রতিনিধি:

লামায় পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানগণ নিরাপত্তার স্বার্থে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসন ও সরকারের নিকট জোর দাবি তুলেছেন।

রবিবার লামা উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। পাহাড়ি সন্ত্রাসীগণ রুপসীপাড়া ইউনিয়নের নাইক্ষ্যংমুখ বাজারে যেকোন ধরণের ক্ষতি করতে পারেন মর্মে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ইউপি মেম্বার কাইওয়ে মুরুং।

সভায় ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন মজুমদার জানিয়েছেন, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের গয়ালমারায়  ২০ এপ্রিল ২০/২২ জনের একটি সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসীদল আসে। তারা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ব্যক্তির কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের চাঁদা আদায় করেছে। স্থানীয় জনসাধারণ বর্তমানে আতঙ্কে ভুগছে।

লামা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন জানিয়েছেন, মেরাখোলা এলাকার গরু ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের কবলে রয়েছে। লামা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজির দৌরাত্ম বৃদ্ধি পেয়েছে। তামাক চাষিসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও কৃষকদের কৃষি পণ্যের উপর চরম ভাবে চাঁদাবাজি চলছে।

রুপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু জানিয়েছেন, পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের একটি দল  ২০ এপ্রিল নাইক্ষ্যংমুখ বাজারে আসেন। সন্ত্রাসীগণ ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। তাদের নির্যাতনে ৪জন আহত হয়েছে। আহতরা হলো, মনরঞ্জন বড়ুয়া (৪০),  প্রদীপ বড়ুয়া (৩৬), জসিম উদ্দিন (৩০) ও মাহবুবুর রহমান (৩৩)।

ইউপি মেম্বার কাইওয়ে মুরুং আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, সন্ত্রাসীগণ যেকোন মুর্হুতে নাইক্ষ্যংমুখ বাজারে হামলা চালিয়ে যেকোন ধরণের ক্ষতি করতে পারেন। নাইক্ষ্যংমুখ বাজারের ব্যবসায়ীদেরকে রোদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রেখে শাস্তি দিয়েছে। দাবি মোতাবেক চাঁদা না দিলে যেকোন পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে ব্যবসায়ীদেরকে সন্ত্রাসীগণ হুমকি দিয়েছে। বাঙ্গালী ব্যবসায়ীদের ক্রয়কৃত কলার ছড়া ও বিভিন্ন কৃষি পণ্য কেটে নষ্ট করে দিয়েছে।

লামা থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত কেউ আইনগত সহায়তা চাইলে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

২২ এপ্রিল আলীকদম জোন’র বিদায়ী জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল মোহাম্মদ সারোয়ার হোসেন পিএসসি বলেন, কোনক্রমেই অত্র এলাকাকে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হতে দেওয়া যাবে না। সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করে সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে হবে।

নবাগত জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল মাহাবুবুর রহমান পিএসসি বলেন, আমাদের শান্তি যারা কেড়ে নিতে চায় তাদের কোনক্রমেই ছাড় দেওয়া হবে না। সন্ত্রাসী নির্মূলে সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন