ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে ১১ লাখ কীটনাশকযুক্ত মশারি বিতরণ করা হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান:
তিন পার্বত্য জেলার দুর্গম, সীমান্তবর্তী এলাকায় অবাধে যাতায়াত, দক্ষ চিকিৎসক ও ওষুধ সংকট, এবং সঠিক রোগ নির্ণয়ের অভাবে ম্যালেরিয়া নির্মূল করা যাচ্ছে না। এছাড়া দেশে অতি বৃষ্টির কারণে এ বছর ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতীয় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. এমএম আক্তারুজ্জামান। তবে আগের তুলনায় এ রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার অনেকাংশে কমে এসেছে। বান্দরবানে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
‘চিরতরে ম্যালেরিয়া হোক অবসান’ এ প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ ও জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচির উদ্যোগে ঢাকার বাইরে এ প্রথম বান্দরবানে কেন্দ্রীয়ভাবে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস পালন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গন থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে হেলথ ক্যাম্প এবং সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. এমএম আক্তারুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। বান্দরবান জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থোয়াইহ্লা মং মারমার সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আলাউদ্দিন মজুমদার, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী শহিদুল আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্যারাসাইটেলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. বেনজির আহম্মদ বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. উদয় শংকর চাকমা প্রমুখ।
ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. এমএম আক্তারুজ্জামান বলেন, দেশের ১৩টি জেলায় প্রায় ২৭ হাজার ম্যালেরিয়া রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে বান্দরবানে প্রায় ১৪ হাজার ম্যালেরিয়া রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে ম্যালেরিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণে চলতি বছর ১১ লাখ কীটনাশকযুক্ত মশারি বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ইতোমধ্যে ৩ লক্ষ মশারি বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়াও এ কর্মসূচির আওতায় এ পর্যন্ত সারাদেশে ৭৮ লক্ষ মশারি বিতরণ করা হয়েছে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০২১ সালের মধ্যে সিলেট ও ময়মনসিংহ জেলা এবং ২০২৫ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ তিন পার্বত্য জেলা ম্যালেরিয়া মুক্ত করা হবে। তবে এ বছর বিরুপ আবহাওয়ার কারণে ম্যালেরিয়া রোগ বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।