শ্রমিক লীগের হামলায় বান্দরবান জেলা প্রশাসক লাঞ্চিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পর্যটন কেন্দ্র মেঘলায় রেলওয়ে শ্রমিক লীগের হামলায় বান্দরবান জেলা প্রশাসক লাঞ্চিত ও সহকারী কমিশনারসহ ৩জন আহত হয়েছেন। চট্টগ্রাম রেলওয়ে শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মীদের সাথে প্রশাসনের কর্মচারীদের মধ্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলেও স্থানীয়রা জানিয়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক শুক্রবার বিকেলে শহরের কাছে মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রের ভিতরে নতুন স্থাপনা উদ্বোধন করতে যান। মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে এ সময় চট্টগ্রাম রেলওয়ে শ্রমিক লীগের নেতা কর্মীরা পিকনিক করছিল।

সন্ধ্যায় রেলওয়ের বেশ কিছু নেতা কর্মী মদ্যপ অবস্থায় জেলা প্রশাসক ও সহকারী কমিশনারদের লাঞ্চিত করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। এ সময় সেখানে থাকা পর্যটকরা আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পরে। পরে রেলওয়ের শ্রমিক লীগের নেতা কর্মীরা মেঘলার টিকেট কাউন্টারে গিয়ে হাঙ্গামার চেষ্টা করলে সেখানে জেলা প্রশাসকের সাথে থাকা সহকারী কমিশনাররা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে। এ সময় উশৃঙ্খল রেলওয়ের শ্রমিকরা সহকারী কমিশনার শামিম আহম্মদের উপর হামলা করলে মেঘলায় কর্মরত প্রশাসনের অন্যান্য কর্মচারীদের সাথে রেলওয়ের শ্রমিকদের সংঘর্ষ বাধে। এতে সহকারী কমিশনার শামিম আহম্মেদসহ উভয় পক্ষের ৩জন আহত হয়। পরে ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ আসলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

রেলওয়ের শ্রমিক লীগ নেতা মো. সিরাজুল ইসলাম ও তার পক্ষের নেতাকর্মীরা শুক্রবার বান্দরবান মেঘলায় পিকনিকে যান। সেখানে শ্রমিক লীগের কয়েকজন মদ খেয়ে মাতলামি করার কারণে জেলা প্রশাসনের লোকজন ও পুলিশের সঙ্গে তাদের তর্কাতর্কি হয়। পরে জেলা প্রশাসক রেলওয়ে শ্রমিক লীগ নেতা-কর্মীদের বের করে গাড়িতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে হামলা চালিয়ে স্টেশনে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে শ্রমিক লীগ নেতাকর্মীরা। এসময় তারা রেল স্টেশনের টিকেট কাউন্টার এবং স্টেশনে প্রবেশ পথের কাঁচ ভাঙচুর করে বিক্ষোভ মিছিলও করে। টিকেট নিতে আসা যাত্রীদের ধাওয়া দিয়ে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ট্র্রেন অবরোধ করে রাখে।

জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মো. মুজাহিদ জানান, মদ্যপ অবস্থায় শ্রমিকরা জেলা প্রশাসক ও তার সাথে থাকা অতিথিদের লাঞ্চিত করে। পরে তারা সহকারী কমিশনার শামিম আহম্মদকেও মারধর করে।

জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বলেন, মদ খেয়ে ভয়ানক মাতলামি করছিল। মেয়েদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছে। পুলিশকে এবং একজন ম্যাজিস্ট্রেটের গায়ে হাত তোলে তারা। তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত দিয়ে সাজা দিতে পারতাম। কিন্তু তা করি নি। মান-সম্মানের সঙ্গে তাদের গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাদের কর্মকাণ্ড সবাই দেখেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন