সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছেনা: ঊষাতন

Pic-Ushaton Mp-1

ফাতেমা জান্নাত মুমু:
সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও বিভিন্ন স্বার্থবাদীদের ষড়যন্ত্র ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছেনা বলে মন্তব্য করেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ও সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার। তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষর হলেও শুরু থেকেই কিছু নামধারী সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন চুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পাহাড়ে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের ঘোষণা বানচালের জন্য কতিপয় কুচক্রী মহল এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ইন্ধন জোগাচ্ছে। তিনি সকল জাতিগোষ্ঠীকে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে সহযোগিতা করার আহবান জানান।

রবিবার সকাল ১০টায় আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে শহরের পৌর চত্বরে আয়োজীত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তবে উষাতন তালুকদার এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিতে অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন, চাকমা সার্কেল চীপ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন এমএন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেসনের আহবায়ক বিজয় কেতন চাকমা, রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অরুন কান্তি চাকমা, সচেতন নাগরিক পরিষদেও সভাপতি, কুমপার চাদ রায়,সদও উপজেলা পরিষদেও ভাইস চেয়ারম্যান রিতা চাকমা প্রমুখ।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি উষাতন তালুকদার আরও বলেন, ‘পার্বত্য চুক্তিকে পদদলিত করে কখনো পাহাড়ের সমস্যা শান্তিপূর্ণ সমাধারণ করা সম্ভব না। তাছাড়া বিশ্বব্যাপী আদিবাসী জাতিসমূহের জীবনধারা উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ ব্যতিরেকে যেমন উন্নয়নের লক্ষ্য বাস্তবায়ন সম্ভবনা তেমনি বাংলাদেশেও রাষ্টীয়ভাবে আদিবাসীদেও স্বীকৃতি না দিয়ে দেশের যথাযথ উন্নয়ন হতে পারে না।’ তিনি ‘আদিবাসী’দের সাংবিধানিক স্বীকৃতিসহ পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের দাবী জানিয়ে আরও বলেন, ‘সরকারের নীতি নির্ধারকরা আদিবাসী ইস্যুতে ভ্রান্ত ধারণার কারণে দিবসটি পালনে নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। যা একটি গণতান্ত্রিক সভ্য সমাজে কোনভাবেই কাম্য হতে পারেনা। ৫৪টির অধিক ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এদেশে বসবাস করছে।’ তাই সংবিধান সংশোধন করে দেশের সমতল ও পাহাড়ের ৩০ লক্ষ জনগোষ্ঠীদের ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি হিসেবে নয়, ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবী জানান।

সমাবেশ শেষে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন. চাকমা সার্কেল চীপ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। এসময় পার্বত্য চট্টগ্রামের ১১টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তাদের ঐতিহ্যবাহী নিজ নিজ পোষাকে সেজে র‌্যালীতে আংশ গ্রহণ করেন। র‌্যালীটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিল্পকলা বটমুলে গিয়ে শেষ হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন