‘ভূমি কমিশন আইনের সংশোধনী পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করবে’
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন (সংশোধনী- ২০১৬) অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান, সাবেক এমপি ও খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি সভাপতি ওয়াদুদ ভূইয়া। মঙ্গলবার দুপুরে খাগড়াছড়ি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি রাজনৈতিক মামলার হাজিরা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন তিনি। একই সাথে সংশোধিত আইনটি বাতিলের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন, ‘সরকার সম্প্রীতি ভূমি কমিশন আইনের যে সংশোধনী এনেছেন তা পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করবে। এ সংশোধনীর ফলে ভূমি সমস্যার সমাধান তো হবেই না বরং বিরোধকে আরও বহুগুণে বাড়িয়ে তুলবে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘কমিশনে পাহাড়ি প্রতিনিধিদের কারোরই কোন ধরণের গণতান্ত্রিক ম্যান্ডেট নেই। এছাড়া বিভাগীয় কমিশনার ছাড়া কমিশনের বাকি সব সদস্যই পাহাড়ি। তাই সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে তারা যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। সুতরাং এটি হলফ করে বলে দেয়া যায়, এ কমিশনে বাঙালিদের প্রত্যেকটি বৈধ আবেদনই অগ্রাহ্য করা হবে। এছাড়া এ কমিশনে অবিচারের শিকার হলে কারও উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগও রাখা হয়নি। তাই এটি শুধু অগণতান্ত্রিকই নয়, অসাংবিধানিকও বটে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কথিত প্রথাগত ভূমি অধিকারের ধারণাটি অস্পষ্ট, অনির্দিষ্ট এবং আইনগত ও সাংবিধানিকভাবে ভিত্তিহীন। তাই এ অধিকার কীভাবে পাহাড়ি সদস্যরা বাস্তবায়ন করবেন তা পরিষ্কার নয়। শঙ্কা আছে যে, এর ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বাঙালিদের ভূমি কেড়ে নেয়া হতে পারে। এমনকি, সরকারের বিভিন্ন সংস্থার জন্য বন্দোবস্তীকৃত ভূমি বাতিলের ক্ষমতাও এই কমিশনকে দেয়া হয়েছে।’
তাই পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কথা বিবেচনা করে সর্বজন স্বীকৃত আইন প্রণয়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ওয়াদুদ ভূইয়া।
এর আগে ২০০৭ সালে দায়ের করা একটি রাজনৈতিক মামলায় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজিরা দেন তিনি। মামলার পরবর্তী শুনানী আগামী ৬-ই অক্টোবর।