সিরিয়ায় জর্ডানের বিমান হামলা, নিহত ১০ বেসামরিক

fec-image

সিরিয়ায় বিমান হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের চারজন নারী এবং সবাই বেসামরিক নাগরিক। প্রতিবেশী দেশ জর্ডান এই হামলা চালিয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

স্থানীয় মিডিয়া অনুসারে, দক্ষিণ-পূর্ব সিরিয়ার সুইদা প্রদেশের আরমান এবং মালহ শহরকে লক্ষ্য করে চালানো বিমান হামলায় আনুমানিক ১০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবারের এই হামলার পেছনে জর্ডানের বাহিনী রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

যদিও জর্ডানের সরকার এখনও তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

সুইদা ২৪ নামের শহরভিত্তিক একটি নিউজ প্ল্যাটফর্ম বলেছে, যুদ্ধবিমানগুলো স্থানীয় সময় মধ্যরাতের পরে আবাসিক এলাকায় একযোগে হামলা চালায়। মালহে হামলায় কিছু ঘরবাড়ির মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আর আরমানে দ্বিতীয় হামলায় অবশ্য দুটি বাড়ি ধসে পড়ে এবং অন্তত ১০ জন বেসামরিক লোক নিহত হন। নিহতদের মধ্যে চারজন নারী এবং দুইজন মেয়ে রয়েছে যাদের বয়স পাঁচ বছরের কম।

অস্ত্র চোরাচালান এবং মাদক চোরাচালান কার্যক্রম ব্যাহত করার প্রয়াসে জর্ডান সিরিয়ায় এর আগেও অভিযান চালিয়েছে বলে মনে করা হয়। আর সেসব অভিযানের বেশিরভাগই হয় উভয় দেশের সীমান্তের কাছে। কিন্তু শহরের বাসিন্দারা বৃহস্পতিবার হামলার লক্ষ্যবস্তু কি ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

আরমানের বাসিন্দা মুরাদ আল-আব্দুল্লাহ আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘যা ঘটেছে তা শিশু ও নারীদের বিরুদ্ধে একটি গণহত্যা ছিল। গ্রামগুলোকে লক্ষ্য করে যে বিমান হামলা চালানো হয়েছে তা মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই হিসাবে চিহ্নিত করা যায় না।’

আল-আব্দুল্লাহ বলেন, বোমা হামলা শুধু মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনদের বাড়িতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। হামলায় অন্যান্য বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া গ্রামবাসীদের ঘুমিয়ে থাকার সময় হামলা হওয়াতে অনেকেই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং এই হামলা অপ্রয়োজনীয় বেসামরিক মৃত্যুর কারণ হয়েছে।

পাঁচ বছরের বেশি নয় এমন দুই মেয়ের মাদক পাচারে জড়িত হওয়া অযৌক্তিক বলে জানান আল-আব্দুল্লাহ।

আল জাজিরা বলছে, জর্ডান সীমান্তের কাছে অবস্থিত গ্রামের উপজাতি এবং বাসিন্দারা এই সপ্তাহেই মাদক চোরাচালানের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে পৃথক বিবৃতি জারি করেছে।

বিবৃতিতে সীমান্তের ওপারে মাদক ও অন্যান্য পণ্য পাচারকারীদের অপরাধমূলক নেটওয়ার্ক নির্মূল করতে জর্ডানকে সাহায্য করার অঙ্গীকার করা হয়েছে। এর পরিবর্তে তারা জর্ডানকে বেসামরিক স্থানগুলোতে বোমা হামলা স্থগিত করতে আহ্বান জানিয়েছে।

সিরিয়ার দ্রুজ ধর্মীয় গোষ্ঠীর আধ্যাত্মিক নেতা শেখ হিকমত আল-হাজরি আরও বেসামরিক রক্তপাত রোধ করতে জর্ডানের কাছে আবেদন করেছেন। আল-হাজরি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই ধরনের আক্রমণগুলো বিশেষভাবে চোরাকারবারি এবং তাদের সমর্থকদের লক্ষ্য করেই হওয়া উচিত।’

আরমানের বাসিন্দা আল-আব্দুল্লাহ জর্ডানকে সিরিয়ার স্থানীয়দের সাথে নিয়ে পাচার কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি সমাজ যা মাদকের উৎপাদন বা ব্যবসাকে মেনে নিই না এবং জর্ডান সরকারের উচিত ছিল আবাসিক এলাকায় বোমা হামলা না করে মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহযোগিতা করার জন্য আমাদের প্রবীণদের সাথে যোগাযোগ করা।’

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্ব সংবাদ, মধ্যপ্রাচ্য, সিরিয়া
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন