হঠাৎ কালবৈশাখী তান্ডব, লবণ উৎপাদন ব্যাহত

কক্সবাজারের পেকুয়ায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছিল বোরো ধানের আবাদ। ধানক্ষেতের সেচ দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল কৃষকরা। কখন বৃষ্টি নামবে সেই আশাতেই ছিলেন প্রান্তিক কৃষকরা।

শনিবার (১ এপ্রিল) অবশেষে ভোরে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বাতাস শুরু হয়। এ কালবৈশাখী তান্ডবের ফলে ধান ক্ষেতের তেমন ক্ষতি না হলেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে লবণ চাষীদের। অনেক মেট্রিক টন লবণ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে উপকূলজুড়ে লবণ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

গত বেশকয়েকদিন আগে থেমে থেমে ঝড়ো হাওয়াসহ মাঝারি বৃষ্টির কারণে পেকুয়া উপজেলায় লবণ উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে পড়ে। একই অবস্থা লবণ উৎপাদনকারী অঞ্চল কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায়ও। কয়েকদিন বৃষ্টি না হলে কৃষকরা লোকসান মুছতে পুরোদমে মাঠে নামে লবণ উৎপাদন করতো। দুই একদিন যেতে না যেতে হঠাৎ কালবৈশাখী তান্ডব। মেঘলা আকাশ আর বৃষ্টিপাতের কারণে মাঠে মাঠে বিছানো পলিথিন মুড়িয়ে রাখতে দেখা গেছে লবণ চাষিদের। অবশ্য আধুনিক পদ্ধতির (পলিথিন পদ্ধতি) চাষিদের তেমন ক্ষতি না হলেও সনাতন পদ্ধতিতে (সরাসরি মাটিতে) যারা লবণ উৎপাদনে নেমেছেন তারা আর্থিকভাবে বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

এ বিষয়ে বিসিক কক্সবাজার লবণ শিল্প উন্নয়ন প্রকল্পের মাঠ পরিদর্শক মো. ইদ্রিস আলী বলেন, চলতি মৌসুমের বৃষ্টিপাত হয়েছে কিছু সময়ের জন্য। এজন্য লবণ উৎপাদন তিন থেকে চারদিন ব্যাহত হতে পারে। এরপর থেকে আবারো দেদারছে লবণ উৎপাদন করতে পারবেন চাষিরা। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দেশের একমাত্র লবণ উৎপাদনকারী অঞ্চল কক্সবাজারের ৮ উপজেলা যথাক্রমে চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, কক্সবাজার সদর, ঈদগাঁও, উখিয়া ও টেকনাফ এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলার (একাংশ) সিংহভাগ চাষি আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন করেই লবণ উৎপাদন করে থাকেন। এজন্য আধুনিক পদ্ধতির চাষিদের তেমন ক্ষতি হবে না। তবে সংখ্যায় কম হলেও সনাতন পদ্ধতির চাষিরা আর্থিকভাবে কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। কারণ তাদেরকে নতুন করে মাঠকে লবণ উৎপাদনের উপযোগী করে তুলতে হবে। তবে সেই সমস্যাও কেটে গিয়ে ফের লবণ উৎপাদন আগের অবস্থায় ফিরবে।

মগনামার লবণচাষী মোহাম্মদ আলী জানান, বৃষ্টিপাতে লবণ উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হবে, সেটাই স্বাভাবিক। তবে এখনো চাষিদের হাতে আরো দেড়মাসের বেশি সময় রয়েছে। এই সময়টাই হচ্ছে প্রচন্ড দাবদাহকাল। সেই দাপদাহের তাপেই দেদার লবণ উৎপাদন হবে। যদি আবহাওয়া পরিস্থিতি অনুকূলে থাকে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও দেদার লবণ উৎপাদন হবে বলে আশা করছি আমরা।

এদিকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কালবৈশাখী তান্ডবের ফলে পল্লী বিদ্যুৎয়ের খুঁটি ভেঙে গিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

এ বিষয়ে কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎয়ের পেকুয়া জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী দ্বীপন বিশ্বাস বলেন, আমাদের লোকজন বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ করছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন