৭৯দখলবাজের বিরুদ্ধে উচ্ছেদের তালিকা করেই দায়িত্ব শেষ প্রশাসনের

10804802_709165142512599_1609529310_o

কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কয়েক মাস আগে বাঁকখালী নদীর দখলদারদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদের ৭৯জনের তালিকা করেছিল খোদ জেলা প্রশাসন। সেই দখলদারদের বিরুদ্ধে কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। দখলদালরা বরাবরই তাদের দখল প্রক্রিয়া অব্যহত রখেছে। সচেতন মহল মনে করেন তদবিরের কারণে দিনের পর দিন তাদের শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে।দখলদারদের দখল থাকা সরকারী জমির বর্তমান বাজার মূল্য হাজার কোটি টাকা। তারা এসব দখলবাজদের বিচার দাবি করেন।

সম্প্রতি বদলি হওয়া সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আবু হাসান ছিদ্দিকী বলেন, এসব দখলবাজদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। দখলবাজ প্রভাবশালীদের তালিকা প্রণয়ন এবং দখলের পরিমাণ চিহ্নিত করে দখল উচ্ছেদের সকল প্রস্তুতিও অনেক দূর এগিয়েছে । তিনি আরো বলেন সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন মহলের অনুমতি পেলে এদের বিরুদ্ধে যে কোন মূর্হতে অভিযান চলানো হবে।
কি কারণে ওই দখলদাদের বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন মহলের তরফ থেকে ব্যবস্থা নেয়ার অনুমতি আসছে না এমন হাজারও প্রশ্ন সচেতন মহলের কাছে।

শহরের মাঝির ঘাট, পেশকারপাড়া ও ঝিলংজাসহ বাঁকখালী নদীর উভয় পার্শ্বে জমিতে দখলে থাকা ও স্থাপনা নির্মাণ করে পরিবেশ বিপন্ন করে বাঁকখালী নদী দূষণকারী ৭৯ব্যক্তির তালিকা করেছিল জেলা প্রশাসন। দখলদারের তালিকায় রয়েছে প্রভাবশালী রাজনীতিক, শীর্ষ ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধিসহ স্বনামধন্য বেশ কয়টি প্রতিষ্ঠান।

তালিকা অনুযায়ী দখলদার ও দখলীয় জমির পরিমাণ হল, বিএস ১নং খতিয়ানের ২২৬২বিএস দাগের যথাক্রমে আব্দু শুক্কুর (গফুর ইঞ্জিনিয়ার ওয়ার্কসপ) ৩শতক, মগচিতা পাড়ার মতিন ৩শতক, মৃত আবদুল কাদেরের পুত্র আবদুর রহিম ১০শতক, আবদুর রশিদ ৩শতক, হানিফের পুত্র আবদু সালাম ৩শতক মৃত আমিন আলীর পুত্র হাজী মোহাম্মদ জালাল ৩শতক, গোলাম কাদেরের পুত্র মীর কাশেম ৩শতক, হোছন আহামদ ৩শতক, মৃত মনি আলমের পুত্র জাফর আলম ২০শতক, ইসহাক ড্রাইভারের পুত্র বজলুল করিম ভূট্টো ১০শতক বাবুলের পুত্র রবিন ৫শতক, ইসহাকের পুত্র ইতিয়া ৫শতক, আবুল কাশেমের পুত্র একেএম রাশেদ হোসন ১৫শতক, বদি চেয়ারম্যানের পুত্র বদরুজ্জামান বেণ্ডুর ২০শতক এড. আবদুল খালেক চেয়ারম্যান ২০শতক, কস্তুরাঘাটের রশিদ আহমদ বিএ ২০শতক, একই এলাকার নূরুল হুদা মিয়া ১০শতক, একরাম মিয়া ৫শতক, কক্সবাজার পৌরসভা ৬শতক, আবদুল খালেক ২০শতক, কবির বহদ্দার ১৫ শতক, জয়নাল আবেদীন ৩শতক, আবদুর রহিম ৩শতক, আবদুল্লাহ খান ১০শতক, নূর মোহাম্মদ ৩শতক, মফিজুর রহমান ৩শতক।
এছাড়া বিএস ১নং খতিয়ানের ১০০০২দাগের দখলদাররা হল মাঝির ঘাটের ছৈয়দ আলম ৩শতক, আবুল হোসন ২০শতক, হেলাল উদ্দিন ১০শতক, আবদুল্লাহ ৫শতক, ফরিদ আলম ৫শতক, সাইফুল ইসলাম বাচ্চু ১৫শতক, নূরুল হক কোম্পানী ২০শতক, হেলাল উদ্দিন ২০শতক, জাহাঙ্গীর কাশেম ২০শতক, ডাবলো সাহেব ১০শতক, দুবাইওয়ালা বুড়ি ৫শতক, মোহাম্মদ শফি ৬শতক, মোস্তাফিজুর রহমান ২০শতক, সবুজ সওদাগর ১৫শতক। ঝিলংজা মৌজার রাবার ড্যাম এলাকার মৃত শফিক আহমদের পুত্র শহিদ উল্লাহ ৫শতক।
এছাড়া রয়েছে দখলবাজদের তালিকায় পেশকার পাড়ার বাসিন্দা আবুল কাসেমের ছেলে সোহেল রানা, মৃত আমান উল্লাহের ছেলে আবুল কাসেম, কবির আহাম্মদের ছেলে নাছির উদ্দিন, সাহাব উদ্দিন, মৃত আবদুল মজিদের ছেলে জামাল উদ্দিন, আবুল কালাম, মো. ওসমান, জালাল আহাম্মদ, মৃত গোলাম বারীর ছেলে জয়নাল আবেদীন, আবদুল্যা খান, মৃত মোহাম্মদ শফির ছেলে আবদু রহিম, মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে জহির আহাম্মদ, মৃত আবদু রশিদের ছেলে ছৈয়দ আলম, মৃত আবদু রহমানের ছেলে মফিজুর রহমান, মাঝির ঘাট এলাকার মৃত আবদু রশিদ মেয়ে শামসুন নাহার, মৃত রশিদ আহাম্মদের স্ত্রী বানু, পেশকার পাড়ার আমির হোসনের ছেলে নূর মোহাম্মদ, মাঝিরঘাট শফি সওদাগরের ছেলে হেলাল উদ্দিন, নূরুল হক কোম্পানী, আবদুল্লাহের ছেলে ফরহাদ, মৃত ফরিদুল আলমের স্ত্রী রুজিনা মানকিজ চৌধুরী, মৃত নুরুল হকের ছেলে নুনু, মো. মফিজ, আবু ছৈয়দ, আবুল কাসেমের ছেলে তানভীর কাসেম, আব্দু ছমদের ছেলে আবুল হোসেন, পেশকার পাড়ার মৃত মাস্টার মোজাহারুল হকের ছেলে একেএম মনজুরুল আলম, মৃত বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী বিবি মহর জান, মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে নুর মোহাম্মদ, মৃত আব্দু ছলামের ছেলে মোস্তাফা কামাল, মৃত গোলাম বারীর ছেলে নজির আহাম্মদ, আবদুল খালেক চেয়ারম্যান, আতিকুর রহমান, মৃত কবির আহাম্মদের ছেলে নাছির উদ্দিন, হাজী নুরুল ইসলামের ছেলে খোরশেদ আলম, আবদু জলিলের ছেলে আবদুল হামিদ।

দখলে রয়েছে সেমি পাকা বাড়ি, লবণের মিলঘর, দোতলা দালান, সেমিপাকা দোকান নির্মাণ করে ভাড়া ও বসবাস করে আসছে বলে প্রণীত তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।

কক্সবাজারের কৃষি, যোগাযোগ ও পুষ্টি সমৃদ্ধ মাছের প্রজনন ক্ষেত্র হিসাবে বাঁকখালী নদীর অত্যাধিক গুরুত্ব থাকলেও দীর্ঘদিন যাবৎ প্রশাসন দখল উচ্ছেদে ব্যর্থ হয়েছে নানা কারণে। বাঁকখালীর দখল উচ্ছেদ চ্যালেঞ্জ হিসাবে একাধিকবার মাঠে অনেকটা নেমে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন।

কক্সবাজারকে বাঁচাতে বাঁকখালী নদীর দখলমুক্তকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু। তিনি জানান, অচিরেই বাঁকখালী নদীর দখলমুক্ত করণে এলাকাবাসীকে নিয়ে বৃহত্তর আনন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন