খাগড়াছড়িতে উপজাতীয় কিশোরীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করলো ছাত্রলীগ ও মৎসজীবী লীগের নেতারা
সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার:
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় দশম শ্রেণির এক উপজাতীয় ছাত্রীকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করেছে শাসক দলের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের দুর্বৃত্তরা। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার কবাখালী এলাকায় এ ঘটনা। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে কবাখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সোহেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পাহাড়ি সম্প্রদায়ের ওই ছাত্রী বনবিহার থেকে ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষে আত্মীয়ের সঙ্গে বাসায় ফিরছিল।
কিশোরীর আত্মীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার রাত ১টার দিকে ওই কিশোরী তার আত্মীয় দুই যুবককে সঙ্গে নিয়ে বনবিহার ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষে বাসায় ফিরছিল। তারা কবাখালি এলাকায় পৌঁছালে স্থানীয় একটি ক্লাব ঘরে দুই যুবককে আটকে রেখে পাশের তামাক ক্ষেতে নিয়ে চার যুবক ওই কিশোরীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় ক্লাব ঘর থেকে এক যুবক কৌশলে পালিয়ে বাসায় গিয়ে ঘটনা জানালে লোকজন এসে কিশোরীকে উদ্ধার করে।
এসময় সাথে থাকা তাঁর চাচাত ভাইকে মারধর করে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে মঙ্গলবার ভোরে এলাকাবাসী অসুস্থ অবস্থায় ধর্ষিত স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করে। বর্তমানে সে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
দীঘিনালা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল মিন্টু জানান, কবাখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার সোহেলের (২৭) নেতৃত্বে মৎস্যজীবী লীগের সদস্য আমির হোসেন (২৮), সোহাগ মিয়া (৩০) ও সাইফুল ইসাম (২৬) মিলে এ ঘটনা ঘটায়। তিনি জানান, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার সোহেলকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর তিনজনকে বহিষ্কারের জন্য উপজেলা মৎস্যজীবী লীগকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে কবাখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সোহেল মিয়াকে আজ মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকি তিনজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
দীঘিনালা থানার ওসি সাহাদাত হোসেন টিটো ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কিশোরীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল বাহার ও সাধারন সম্পাদক মংসাপ্রু মারমাসহ খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দীর্ঘদিনের অর্জিত সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে তাকে দল থেকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। বিবৃতিতে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ ধর্ষনের দায়ে অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার পূর্বক শাস্তি প্রদানের স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
অপরদিকে এ ঘটনায় ডা: আব্দুস সামাদকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে বলে পার্বত্যনিউজকে জানান খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: সঞ্জীব ত্রিপুরা।