বান্দরবানে তজিংডংয়ের এনার্জি গ্লোব পুরষ্কার অর্জন

Bandarban pic-27.3

নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান:

পাহাড়ের বাসিন্দাদের অংশ গ্রহণে বন সংরক্ষণ ও মৌজাবন সংরক্ষনে উদ্যোগ নেওয়ায় পরিবেশের অস্কার হিসেবে খ্যাত এনার্জি গ্লোব পুরষ্কার অর্জন করেছে বান্দরবানের বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা তজিংডং।

সূত্র জানায় গত বছরের ১০ নভেম্বর মরক্কোয় জাতিসংঘের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন মারাক্কাসে বিশ্ব পরিবেশের ওপর কাজ করার জন্য পুরষ্কার ঘোষণা করে প্রতিষ্ঠান এনার্জি গ্লোব ফাউন্ডেশন। এ বছরের ১৭ মার্চ অস্টিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় আনুষ্ঠানিক ভাবে পুরষ্কারটি  তাজিংডং কতৃপক্ষের হাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে তুলে দেন এনার্জি গ্লোব ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা উলফগ্যাং নয়ম্যান।

পুরষ্কার অর্জন এবং প্রকল্পটির বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করতে রবিবার হোটেল ভেনাসে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংস্থাটি। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা।

তিনি বলেন, আমরা এখন কারও সাহায্যের জন্য মুখাপেক্ষি নয়। বিদেশীরা এনজিওদের মাত্র ৫% টাকা দেয়। তাদের টাকা না নিলেও উন্নয়ন কাজ বন্ধ হবেনা। তিনি আরও বলেন, পাহাড়ে এনজিও’র নামে ধর্ম রুপান্তরের অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে প্রায় ত্রিপুরা সম্প্রদায় খৃষ্টান ধর্মে দীক্ষিত হয়েছে।

সচিব বলেন, শান্তি চুক্তির পর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে প্রথমবার বরাদ্ধ দেয়া হয় মাত্র ২৭ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে এর পরিমান হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলেও তিনি জানান। পাহাড়ের জনগণ সচেতন হওয়ায় ঝিরি ঝর্ণা থেকে আগের মত কেউ পাথর উত্তোলন করতে পারেনা। এমনকি সরকারী বনাঞ্চল থেকে গাছ কাঁটতে পারেনা।

তিনি বলেন, পাহাড়ের বাসিন্দাদের জীবন মান উন্নয়নে এ ধরনের প্রকল্প চালু রাখতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। এসময় তিনি এওয়ার্ড প্রাপ্তির জন্য প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।

সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান তরুন কান্তি ঘোষ, বেসরকারী সংগঠন আরণ্যক ফাউন্ডেশনের র্নিবাহী পরিচালক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও তাজিংডংয়ের নির্বাহী পরিচালক চিং সিং  উপস্থিত ছিলেন।

তজিংডংয়ের কর্মকর্তা উচনু মারমা বলেন, পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানের আগে তজিংডংয়ের সামজিক অংশ গ্রহণে গ্রামীণ সাধারণ বন সংরক্ষণ সম্পর্কে ভিডিও চিত্রে দেখানো হয় সংস্থাটিকে। ১৭ মার্চ অংশৈসিং মারমার হাতে এনার্জি গ্লোব ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা উলফগ্যাং নয়ম্যান পুরষ্কারটি আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেন।

অংশৈসিং মারমা বলেন, ২০১৬ সালে এনার্জি গ্লোব পুরষ্কারের জন্য ১৭৮টি দেশ থেকে ২ হাজার প্রকল্পের মধ্যে প্রতিযোগিতা করে আর্থ ক্যাটাগরিতে তাজিংডং বিজয়ী হয়েছে। ২০১৬ সালের পুরষ্কারটি গত ৯ নভেম্বর মরক্কোর মারাকাসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে ঘোষণা করা হয়।

তিনি বলেন, প্রকল্পটিতে পাহাড়ের নয়টি জাতিগোষ্ঠির কয়েক হাজার মানুষের অংশগ্রহণ রয়েছে। এর মাধ্যমে পাহাড়ের প্রাকৃতিক বনভূমি রক্ষা করে প্রাণী ও উদ্ভিদ বৈচিত্রকে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা গেলে দুর্গম পাহাড়ের বাসিন্দাদের পানীয় জল, জীবন যাত্রা ও সামাজিক অনেক চাহিদা মেটানো সহজ হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন